এলো যুক্তরাষ্ট্রের আরও ২৫ লাখ ডোজ

বার্তাকক্ষ প্রতিবেদন: আরো আড়াই মিলিয়ন ফাইজার টিকা দানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া টিকার ডোজ দাঁড়াল ১১.৫ মিলিয়নে। এই চালানগুলো আসার মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র এখন পর্যন্ত বাংলাদেশকে মোট ১১.৫ মিলিয়ন ডোজ কভিড-১৯ টিকা দান করল, যা কভিড-১৯ মোকাবেলায় বাংলাদেশকে দেওয়া ৯৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি অর্থসহায়তার অতিরিক্ত।

আমেরিকার জনগণের পক্ষ থেকে উপহার হিসেবে ফাইজারের আরো ২ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডোজ টিকার অনুদান আজ বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলার। এই টিকাগুলোসহ এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের সরকার ও জনগণের পক্ষ থেকে বাংলাদেশকে দান করা মোট টিকার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডোজে।

ঢাকায় এক্সপ্যান্ডেড প্রোগ্রাম অন ইমিউনাইজেশন (ইপিআই)-এর সদর দপ্তরে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সৈয়দ মজিবুল হক ও স্বাস্থ্যসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলমের কাছে টিকার এই চালান হস্তান্তর করেন রাষ্ট্রদূত মিলার ও ইউনাইটেড স্টেটস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ইউএসএআইডি) এর মিশন ডিরেক্টর ক্যাথরিন স্টিভেন্স।

রাষ্ট্রদূত মিলার বলেছেন, জীবন রক্ষাকারী ফাইজার টিকার এই অতিরিক্ত ২ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডোজ দান করতে পেরে যুক্তরাষ্ট্র আনন্দিত এবং আমরা জাতীয় টিকাদান কর্মসূচিতে আমাদের সমর্থন অব্যাহত রাখব। নিরাপদ ও কার্যকরভাবে ফাইজারের এই টিকা সংরক্ষণ ও প্রয়োগের সঠিক অবকাঠামো আছে কি-না, তা নিশ্চিত করার জন্য আমরা বৈশ্বিক কোভ্যাক্স ভ্যাকসিন উদ্যোগকে সমর্থন করতে পেরে গর্বিত।

ইপিআই যেখানে কভিড-১৯ টিকা সংরক্ষণ করে, সেই জায়গাও ঘুরে দেখেছেন যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ সরকারের কর্মকর্তারা। এখানে ফাইজার টিকাগুলো সংরক্ষণ করা হচ্ছে ২৬টি অত্যাধুনিক শীতল ফ্রিজারে, যেগুলো সরবরাহ করা হয়েছে বৈশ্বিক কোভ্যাক্স ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স অংশীদারীর মাধ্যমে।

২০২২ সাল নাগাদ গোটা বিশ্বে এক বিলিয়ন ডোজ টিকা বিনামূল্যে দানের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী কভিড-১৯ মোকাবেলায় নেতৃত্ব দেওয়ার যে বৃহত্তর অঙ্গীকার রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের, তারই অংশ হিসেবে ফাইজার টিকার এই চালান এসেছে।

টিকা অনুদানের বাইরেও, জাতীয় কভিড-১৯ টিকাদান অভিযানকে সমর্থন দিতে এবং মহামারি মোকাবেলায় সরকারের উদ্যোগকে শক্তিশালী করতে বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। ৬ হাজারের বেশি সেবাকর্মী এবং স্বাস্থ্যসেবা পেশাজীবীদেরও প্রশিক্ষণ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যাতে তারা নিরাপদে ও দক্ষতার সঙ্গে টিকা প্রয়োগ করতে এবং বাংলাদেশিদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা দিতে পারেন।

কভিড-১৯ সংক্রান্ত উন্নয়ন ও মানবিক সহায়তা হিসেবে ইউএসএআইডি, ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব ডিফেন্স, ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব স্টেট এবং ইউএস সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন থেকে এ পর্যন্ত ৯৬ মিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এই সহায়তা মানুষের জীবন বাঁচিয়েছে, কভিড-১৯ আক্রান্তদের চিকিৎসা জুগিয়েছে, রোগ পরীক্ষার সক্ষমতা ও পরিবীক্ষণ শক্তিশালী করেছে, আক্রান্তদের ব্যবস্থাপনা এবং সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের চর্চা জোরদার করেছে এবং সরবরাহ ব্যবস্থা ও লজিস্টিকস ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি উন্নত করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা সামনের সারির কর্মীদেরও সুরক্ষা দেয় এবং কভিড-১৯ ও নিজেদের সুরক্ষার উপায় সম্পর্কে জনগণের জ্ঞান বাড়ায়।

কভিড-১৯ টিকার আল্ট্রা-কোল্ড চেইন স্টোরেজ, পরিবহন ও নিরাপদ ব্যবস্থাপনাসহ বিশ্বব্যাপী কোভ্যাক্সের বিভিন্ন উদ্যোগকে সমর্থন দিতে চার বিলিয়ন ডলার দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যা কভিড-১৯ টিকার সমতাভিত্তিক প্রাপ্তির ক্ষেত্রে বিশ্বের সবচেয়ে বড় দাতায় পরিণত করেছে যুক্তরাষ্ট্রকে।

ইউকে/এএস