শীতকালীন সবজিতে ঝুঁকেছে বগুড়ার চাষিরা

বগুড়া সংবাদদাতা: বগুড়ায় শীতকালীন সবজি চাষ করে বেশ লাভবান হয়ে থাকেন চাষিরা। জেলার ১২টি উপজেলার মধ্যে সদর, শাজাহানপুর, শেরপুর, শিবগঞ্জ, গাবতলী, সবজিক্ষেত উপজেলা হিসেবে পরিচিত। এসব উপজেলায় বছরের ১২ মাসই নানা ধরনের সবজি ফলান চাষিরা। এরমধ্যে শাজাহানপুর ও শেরপুর উপজেলায় সবজি চাষের পাশাপাশি বছরজুড়ে নানা জাতের সবজি চারা তৈরি করা হয়।

জেলার শাজাহানপুর, গাবতলী, শিবগঞ্জসহ কয়েকটি উপজেলার গ্রামীণ জনপদ ঘুরে দেখা গেছে, আগাম শীতকালীন সবজি নিয়ে চাষিদের নানা কর্মযজ্ঞতা।

এ সময় দেখা যায়, চাষিদের কেউ কেউ ক্ষেতের সবজি নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। অনেকেই ক্ষেতে কীটনাশক দিচ্ছেন। কেউবা জমির আগাছা পরিষ্কার করছেন। কেউ আবাদের জন্য জমি প্রস্তুত করছেন। এসব ক্ষেতে সাধারণত ফুলকপি, বাধাকপি, বেগুন, শিম, টমেটো, কাঁচামরিচ, মুলা, করলা, লাউ, ঢেঁড়শ, গাজর, পটল, লালশাক, পালংশাকসহ বিভিন্ন সবজি চাষ হয়ে থাকে।

বগুড়ার সদর ও শিবগঞ্জ উপজেলার এহতাদুর রহমান, সামাদ, জহিরসহ একাধিক কৃষক জানান, শীতকালীন সবজি চাষের জন্য তিন ভাগে কাজে নামেন কৃষকরা। শীত শুরুর আগে, শীতের মাঝামাঝি এবং শীতের শেষ দিকে।

শাজাহানপুর চোপিনগর এলাকার দিদারুর মিয়া, আব্দুল খালেকসহ একাধিক কৃষক জানান, সবজি চাষ করতে বেশি জমির প্রয়োজন হয় না। তুলনামূলক অল্প সময়ে তা বাজারজাত করা যায়। নিজেদের চাহিদা মেটানো যায়।

তারা জানান, শীতকালীন সবজি আবাদে ফলন ভালো হয় এবং কৃষক অনেকাংশেই লাভের মুখ দেখে থাকেন। তবে আবহাওয়ার একটু হেরফের হলে সবজির ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বাড়তি বৃষ্টি ও ঘন কুয়াশা হলে ফসলের ক্ষতি হয়।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. ফরিদুর রহমান জানান, বগুড়া জেলার ১২টি উপজেলায় এ পর্যন্ত গড়ে ৩ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে আগাম শীতকালীন সবজি চাষ করা হয়েছে। গেল বছরে পুরো রবি মৌসুমে জেলায় ১২ হাজার ৮১৩ হেক্টর জমিতে রকমারি সবজি চাষের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিলো। এ বছর আবাদের জমির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে।

তিনি বলেন, সবজি চাষ ও চারা উৎপাদনে এ জেলার চাষিরা নিজেরাই অনেক অভিজ্ঞ। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকেও নিয়মিত চাষিদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে। প্রতি বছর শীতের সবজি নিয়ে বগুড়া জেলার কৃষকরা বরাবরই ব্যস্ত থাকেন। আবহাওয়া অনুকূলে ও বাজার দর ভালো থাকলে শীতকালীন সবজি চাষে বেশ লাভবান হওয়া যায়।

জেলার কিছু কিছু এলাকায় এখনো খরিপ-১ মৌসুমের কিছু সবজি মাঠে রয়েছে। বর্তমানে শীতকালীন আগাম সবজি চাষ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। মূলত আগস্ট থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত সময়কালের মধ্যে চাষাবাদকে আগাম চাষ হিসেবে ধরা হয়ে থাকে এবং ১৬ অক্টোবর থেকে ১৫ মার্চ পর্যন্ত চাষাবাদকে রবি মৌসুমের চাষাবাদ বলা হয়।

ইউকে/এএস