চারঘাট (রাজশাহী) সংবাদদাতা: রাজশাহীর চারঘাট সদরের আসিফুল আলমকে এত দিন সবাই চারুকলার মেধাবী শিক্ষার্থী হিসেবে চিনত। তবে অনলাইন দুনিয়ায় তার আরেক পরিচয়—একজন সফল ফ্রিল্যান্সার; দক্ষ প্রশিক্ষক।
পড়াশোনার পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং করে আসিফুলের মাসিক আয় প্রায় তিন লাখ টাকা। অনলাইনে কাজ করে উপার্জন করতে ইচ্ছুক এমন অনেককে প্রশিক্ষণও দিচ্ছেন। এই তরুণের কাছে প্রশিক্ষণ নিয়ে চারঘাট ও বাঘা উপজেলার কয়েক শ তরুণ ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে আয় করছেন।
আসিফুল আলম জানান, ২০১১ সাল থেকে তিনি ফ্রিল্যান্সিং করছেন। ২০১১ সালে ১৫ বছর বয়সে কাজ শুরু করলেও সফলতা পেয়েছেন ২০১৮ সালে। তাঁর জবানিতে, ‘যখন ফ্রিল্যান্সিং শেখা শুরু করি, তখন আমার পরিবার ছাড়া কেউ সমর্থন করেনি। তবে বর্তমানে সবকিছু সহজ মনে হয়। আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুদের মধ্যে যারা বলেছিল—এইগুলো দিয়ে জীবন চলবে না, শুধু শুধু সময় নষ্ট, তাদের ধারণা এখন বদলে গেছে। কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে সফল হওয়ায় এখন সবাই সমর্থন দিচ্ছে।’
আসিফুল আলম আরও বলেন, ‘আমি ছোটবেলা থেকে আধুনিক প্রযুক্তির মধ্যে বেড়ে উঠেছি। আমার বাবা চারঘাটে সর্বপ্রথম টেলিফোন, কম্পিউটার, ভিডিও প্রোগ্রামসহ নানাবিধ প্রযুক্তিসেবা নিয়ে আসেন। আমার জীবনে অনলাইনে প্রথম আয় ছিল তিন ডলার, বাংলাদেশি টাকায় যা প্রায় ২৪০ টাকার মতো। বর্তমানে আমার মাসিক আয় তিন লাখ টাকার মতো।’
একাধিক প্ল্যাটফর্মে দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানের চাহিদা অনুযায়ী কাজ করেন আসিফুল। পাশাপাশি গড়ে তুলেছেন newresultbd.com নামের শিক্ষাবিষয়ক একটি সাইট, যা এরই মধ্যে সারা দেশে জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।
চাকরি না খুঁজে নিজের দক্ষতা বাড়িয়ে ‘ফ্রিল্যান্সিং’ বা নতুন কিছু করায় বিশ্বাসী এই তরুণ বলেন, ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে আয়ের ইচ্ছে থাকলে কাউকে বেকার থাকতে হবে না। অনেকেই ফ্রিল্যান্সিং করতে গিয়ে ভুল জায়গায় শিখতে গিয়ে আগ্রহ হারাচ্ছেন। এ জন্য সঠিক জায়গায় সঠিক নিয়মে প্রশিক্ষণ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। ভবিষ্যতে বড় একটা অফিস নিয়ে তরুণদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার ইচ্ছা আছে তাঁর।
আসিফুলের পিতা নবী আলম বলেন, ছেলের এমন সাফল্যে সবাই যখন প্রশংসা করে, বাবা হিসেবে তখন সত্যিই খুব গর্ব হয়। ছেলেকে দেখে এখন বুঝি, সরকারি চাকরিই সবকিছু না। আধুনিক বিশ্বে ইচ্ছে আর মেধা থাকলে কেউ বেকার থাকবে না।
ইউকে/এএস