লাইফস্টাইল বিভাগ: পৃথিবীটা এখন মুঠোফোনে বন্দি। করোনাকালে এ মাত্রা আরো বেড়েছে। গত দেড় বছরে ছোটরা বাড়িতে কাটিয়েছে। মোবাইল ফোনে ক্লাস করেছে আবার মোবাইল ফোনে গেম খেলেছে। এতে করে দেখা যাচ্ছে দিনের বেশিরভাগ সময় স্ক্রিনটাইমে কাটাচ্ছে। আর এ থেকে হচ্ছে চোখের সমস্যা যা ভবিষ্যৎ এ ভয়াবহ রুপ নিয়ে আসছে। তাই কয়েকটি বিষয় অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে।
ছোটদের চোখের সমস্যার উপসর্গ
চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ছোটদের চোখের সমস্যা নিয়ে অভিভাবকেরা আসছেন। অনেক ক্ষেত্রে চশমা নিতে দেখা যাচ্ছে। তবে স্ক্রিনটাইম বেড়েছে বলেই এমন হচ্ছে, তা বলা যায় না। কারণ শিশুটির আগে থেকেই পাওয়ারের সমস্যা ছিল কি না, তা বাবা-মায়েরা নিশ্চিত হয়ে বলতে পারেন না। যে উপসর্গগুলি ছোটদের মধ্যে বেশি দেখা যাচ্ছে, তা হল—
১. টানা অনেকক্ষণ স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকলে ড্রাই আইজ় বা চোখ শুকিয়ে যাওয়ার সমস্যা বাড়ে। শিশুরা চোখ কচলাতে শুরু করে তখন।
২. শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে বসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অনলাইনে ক্লাস করলেও ড্রাই আইজ়ের সমস্যা বাড়ে।
৩. টেলিভিশন বা ট্যাবের দিকে চোখ কুঁচকে দেখাও চোখের সমস্যার উপসর্গ হতে পারে।
অনেক অভিভাবক বলছেন, বিকেল থেকেই তাদের সন্তানের মাথাব্যথা শুরু করে। অন্য রোগের সঙ্গে চোখের কারণে এই ব্যথা কি না, তা পরীক্ষা করে দেখা প্রয়োজন। চোখ থেকে পানি পড়া, চোখ লাল হয়ে যাওয়া এ ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে।
চিকিৎসা
কোনও শিশুর যদি চোখ পরীক্ষা করে দেখা যায় যে, তার পাওয়ার হয়েছে, তবে তাকে চশমা দিতেই হবে। তার সঙ্গে লুব্রিকেটিং ড্রপও দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু সেই পর্যায়ে যাওয়ার আগে অবধি অভিভাবকদেরও কয়েকটি বিষয়ে নজর দিতে হবে।
স্ক্রিনটাইম কমিয়ে চোখ ভাল রাখা
চিকিৎসকদের মতে, ‘‘স্ক্রিনটাইম বেঁধে দেওয়া খুব মুশকিল। কারণ অনলাইনে পরপর ক্লাস চলতে থাকে। তবে এক ঘণ্টা ক্লাস হলে বেশ কিছুক্ষণ বিরতি দিতে হবে। যাতে ওই সময়টুকু শিশুকে স্ক্রিনের দিকে না তাকাতে হয়।’’
১. স্ক্রিনটাইম বাড়লে বারবার চোখে জলের ঝাপটা দিতে হবে। ছোটরা নিজে থেকে হয়তো সেটা করে না। তাই অভিভাবককে এ বিষয়ে সচেষ্ট থাকতে হবে।
২. বেশি করে পানি খেতে হবে। সঙ্গে ফলের পরিমাণও বাড়াতে হবে। চিকিৎসকদের মতে, শরীরকে রি-হাইড্রেটেড রাখা খুব দরকার।
৩. একটানা স্ক্রিনের দিকে না তাকিয়ে মাঝেমাঝে অন্যদিকে তাকাতে হবে। শিশুর চোখের পাতা যেন পড়ে, সেই দিকটি নিশ্চিত করতে পারলে ভাল।
৪. মোবাইলের বদলে ট্যাব বা ল্যাপটপ বা ডেস্কটপে শিশুকে কাজ করতে দিলে চোখ তুলনামূলক আরাম পায়। স্ক্রিন যত বড় হবে, চোখের উপরে চাপও কম পড়বে।
৫. অনলাইন ক্লাসে লেখার সাইজ় বাড়িয়ে নেওয়া, ট্যাব বা মোবাইলের ব্রাইটনেস যথাযথ মাত্রায় রাখা চোখকে আরাম দেওয়ার জন্য দরকার।
৬. যে সব শিশুর মাইনাস পাওয়ার, তারা সব সময়ে মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত থাকলে, শর্ট সাইটেডনেস বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। তাই তাদের ক্ষেত্রে বাইরে খেলাধুলা করার সুযোগ করে দেওয়া দরকার।
মোবাইলে বেশি সময় কাটানো প্রাপ্ত বয়স্কদের তুলনায় শিশুদের বেশি প্রভাব ফেলে। এজন্য অভিভাবক ও শিক্ষকদের সবার প্রথমে এগিয়ে আসতে হবে।
ইউকে/এএস