নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীতে শরবত বিক্রেতা সাদেকুল ইসলামের (১৯) স্বপ্ন পূরণে এগিয়ে এসেছেন পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির (পুনাক) সভানেত্রী জীশান মীর্জা। রোববার (১০ অক্টোবর) সকালে অদম্য এ তরুণের হাতে সাইকেল, হেলমেট ও মোবাইল ফোন তুলে দেওয়া হয়েছে।
সাদেকুল ইসলাম রাজশাহীর গোদাগাড়ীর পশ্চিম বামনাইল গ্রামের জার্সিস আলীর ছেলে। ১১ ভাই-বোনের মধ্যে সাদেকুল সবার ছোট। অন্য ভাই-বোনেরা যে যার মতো থাকেন। হাফেজিয়া শেষ করে রাজশাহীর মদিনাতুল উলুম কামিল মাদরাসা থেকে ২০১৮ সালে দাখিল পাস করেন সাদেকুল।
কিন্তু বিজ্ঞান বিভাগের পড়াশোনার খরচ জোগাতে না পেরে আলিমে এসে মানবিক বিভাগে ভর্তি হন। ২০২০ সালে তিনি আলিম পাস করেন। দাখিল এবং আলিম দুই পরীক্ষাতেই জিপিএ-৫ পান সাদেকুল। রাজশাহী সিটি কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞনে (সম্মান) বিভাগে ভর্তি হয়েছেন তিনি। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিরও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। নগরীতে শরবত বিক্রি করে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি।
সাদেকুল জানান, পাঁচ বছর ধরে সাদেকুল গরমের মৌসুমে ভ্যানে করে রাজশাহী রেলস্টেশন এলাকায় শরবত বিক্রি করেন। এই টাকা দিয়েই নিজের পড়ালেখার খরচ জোগান। পাশাপাশি কিছু অর্থ দেন পরিবারে।
কিন্তু গরমের মৌসুম শেষ হলে শরবতের বিক্রি কমে যায়। সে সময় বেকার থাকেন তিনি। এবার ফুডপান্ডায় আগাম যোগ দিয়েছেন। কিন্তু সাইকেল না থাকায় চরম বেকায়দায় পড়েন। পানাকের সাইকেল ও মোবাইল ফোন পেয়ে তার ফুডপান্ডার খাবার সরবরাহে বাধা কাটল।
সকালে নগর পুলিশ সদর দফতরে আনুষ্ঠানিকভাবে তার হাতে এসব উপহার তুলে দেন নগর পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক। ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন পুনাক সভানেত্রী ও আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদের সহধর্মিণী জীশান মীর্জা।
সাইকেল ও মোবাইল ফোন পেয়ে সাদেকুল ইসলাম অত্যন্ত খুশি। উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন পূরণে সহায়তার হাত প্রসারিত করায় পুনাক সভানেত্রী ও আরএমপি কমিশনারসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন সাদেকুল।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- আরএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (প্রশাসন) সুজায়েত ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) মজিদ আলী, উপ-পুলিশ কমিশনার (সদর) রশীদুল হাসান, বিশেষ পুলিশ সুপার এএফএম আনজুমান কালাম প্রমুখ।
ইউকে/এসএম