যে কারণে রাবির ‘বি’ ইউনিটের ফল প্রকাশে ত্রুটি

রাবি সংবাদদাতা: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার ‘বি’ ইউনিটের সংশোধিত ফলাফল প্রকাশ হয়েছে। এর আগে সোমবার (১১ অক্টোবর) রাত ১টার দিকে প্রথম ফলাফল প্রকাশের পর ত্রুটির কারণে আবার সকালে ওয়েবসাইট থেকে ফলাফল সরিয়ে নেয় কর্তৃপক্ষ।

পরে মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) দুপুরে পুনরায় ফল প্রকাশ হলে শিক্ষার্থীদের প্রাপ্ত নম্বর ও মেধাক্রমের পরিবর্তন দেখা যায়। তবে ফলাফলের মাস্টার কপি থেকে প্রকাশের উপযোগী করতে প্রসেসিংয়ের সময় ত্রুটি থাকার কারণে এমন সমস্যা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক বাবুল ইসলাম।

অধ্যাপক বাবুল ইসলাম বলেন, আমাদের একটু টেকনিক্যাল সমস্যা হয়েছিল। মূলত ফলাফলের মাস্টার ফাইল থেকে স্ক্যানিং করে ফল প্রকাশের উপযোগী করা হয়। কিন্তু সেটি প্রসেস করতে গিয়ে এক্সএল শিটের একটি কলাম সম্ভবত গ্যাপ হয়ে যায়। ফলে রোল নম্বরগুলো এলোমেলো হয়। এতে প্রথমে ভুলভাবে নিজের প্রাপ্ত নম্বর ও মেধাক্রম দেখতে পায়। পরে আমার মাস্টার ফাইল থেকে আবার ক্রস চেক করে নতুন করে ফলাফল প্রকাশ করেছি।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ৬ অক্টোবর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বি ইউনিটের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এতে তিনটি গ্রুপে (বি-১, বি-২, বি-৩) ৩১ হাজার ৫১৭ জন শিক্ষার্থী অংশ নেন। সোমবার (১১ অক্টোবর) রাতে প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায়, বি-২ গ্রুপে প্রায় ১৬০০ শিক্ষার্থীকে অনুপস্থিত দেখানো হয়েছে। এ নিয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে সমালোচনা শুরু হলে মঙ্গলবার সকালে ফলাফল ওয়েবসাইট থেকে সরিয়ে ফেলা হয়। পরে আবার দুপুরে ফল প্রকাশ হলে মেধাক্রমের পরিবর্তন দেখা যায়।

নতুন ফল প্রকাশের পর মেধাক্রম পরিবর্তন:
ফলাফল সংশোধনের পর অসংখ্য ভর্তিচ্ছুর মেধাক্রম পরিবর্তন হয়ে গেছে। সোমবার রাতে প্রকাশিত ফলাফলের সঙ্গে মঙ্গলবার দুপুরে সংশোধিত ফলের কোনো মিল পাওয়া যাচ্ছে না। এতে ভর্তিচ্ছুরা চরম অসন্তোষ প্রকাশ করছেন।

অবাণিজ্য থেকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন ইমু সাহা নামে এক ছাত্রী। প্রথম ফল প্রকাশের পর ৮০ দশমিক ৩০ নম্বর পেয়ে ২৩তম হন। পরে সংশোধিত ফলাফলে তার প্রাপ্ত নম্বর দেখায় ৪৯ দশমিক ৬০ এবং মেধাক্রম আসে ২ হাজার ২০৫।

আরেক ভর্তিচ্ছু অনামিকা ইয়াসমিন রিতুর প্রথমে প্রাপ্ত নম্বর আসে ৭১ দশমিক ০০। এতে তার মেধাক্রম হয় ২৩২তম। পরবর্তীতে আজ দুপুরে সংশোধিত ফলাফল প্রকাশ হলে তার প্রাপ্ত নম্বর দেখায় ৪০ দশমিক ০০ এবং মেধাক্রম হয় তিন হাজার ৪০৮ তম।

এমনই একজন মো. আব্দুল্লাহ আল রাফিউ হাসান। প্রথম প্রকাশিত ফলাফলে ৭৮ দশমিক ২৫ নম্বর পেয়ে ৪৫তম হয়েছিল। তবে সংশোধিত ফলাফলে দেখা যায়, তার প্রাপ্ত নম্বর ৫১ এবং মেধাতালিকায় তার অবস্থান ২০৫৭ তম।

জানতে চাইলে ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার প্রধান সমন্বয়ক অধ্যাপক জিন্নাত আরা বলেন, টেকনিক্যাল সমস্যার কারণে ফলাফলে ত্রুটি দেখা দিয়েছিল। পরে আমরা সেটি ঠিক করে ফলাফল প্রকাশ করেছি।

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল ইসলাম বলেন, ‘বি’ ইউনিটের পরীক্ষার সম্পূর্ণ দায়দায়িত্ব সেখানকার চিফ কো-অর্ডিনেটরকে দেওয়া হয়েছে। তাদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলবো। যদি কোনো অনিয়ম হয়ে থাকে তবে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। এছাড়া জালিয়াতি চক্র যাতে কোনো ধরনের সুবিধা না নিতে পারে সেদিকে বিশেষ নজর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

ইউকে/এএস