কাঠমিস্ত্রির কাজ করে রাবির ‘বি’ ইউনিটে প্রথম

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাবা পেশায় কাঠমিস্ত্রি। ছেলেও এক সময় বাবার সঙ্গে কাঠের কারখানায় কাজ করতেন। এভাবে অতিকষ্টে চালিয়ে গেছেন পড়াশোনা। তবে, অভাব কখনো তাঁকে দমাতে পারেনি। পাড়াগাঁয়ের সেই মোস্তাকিম আলী এবার ৮০ দশমিক ৩০ নম্বর পেয়ে বি ইউনিটের গ্রুপ-৩ এ প্রথম হয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায়। দারিদ্র্য জয় করে তাঁর এমন সাফল্য সবাইকে অবাক করে দিয়েছে।

মোস্তাকিম আলী রাজশাহীর তানোর উপজেলার ফজর আলী মোল্লা ডিগ্রি কলেজের সাবেক ছাত্র। উপজেলার বাঁধাইড় ইউনিয়নের বাঁধাইড় মিশনপাড়া এলাকার বাসিন্দা।

মোস্তাকিম উপজেলার মুণ্ডুমালা সরকারি উচ্চবিদ্যালয় থেকে ২০১৫ সালে জেডিসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে পাস করেন। এরপর ২০১৭ সালে একই স্কুল থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৪ দশমিক ৫৫ পেয়ে স্থানীয় ফজর আলী মোল্লা ডিগ্রি কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন। ওই কলেজ থেকেই ২০২০ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৪ দশমিক ৮৩ পেয়ে উত্তীর্ণ হন।

মোস্তাকিম আলী বলেন, ‘গ্রামের নিম্নবিত্ত পরিবারের ছেলে হওয়ায় ছোটবেলা থেকেই সংগ্রাম করে বেঁচে থাকতে শিখতে হয়েছে। আর সেই সংগ্রামই আমাকে সাফল্য এনে দিয়েছে। আমি প্রথমেই আমার পরিবারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। তাদের সহযোগিতা ছাড়া এত দূর আসতে পারতাম না। কোনো ভর্তি কোচিং বা স্পেশাল প্রাইভেট পড়িনি। তবে আমার স্কুল-কলেজের শিক্ষকেরা আমাকে অনেক সহযোগিতা করেছেন।’

মুণ্ডুমালা সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কামেল মাডি বলেন, ‘মোস্তাকিম অত্যন্ত মেধাবী। সব সময় সে ক্লাসে ভালো করত।’

ছেলের এমন সফলতায় উচ্ছ্বসিত বাবা সামায়ন আলী। তিনি বলেন, ‘পড়ালেখার প্রতি ছোটবেলা থেকেই মোস্তাকিমের ঝোঁক ছিল। তাঁর জন্য আমরা গর্বিত।’

এ নিয়ে তানোরের বাঁধাইড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান বলেন, ‘মোস্তাকিমের এই অভাবনীয় সাফল্যে আমরা খুবই গর্ববোধ করছি।’

ইউকে/এএস