বার্তাকক্ষ প্রতিবেদন: সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) অধীনে অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের মতো অপরাধে ১০ বছরের কারাদণ্ডের বিধান রেখে ‘বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন আইন, ২০২১’-এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
গতকাল মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে অংশ নেন। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদসচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম প্রেস ব্রিফিংয়ে বৈঠকে নেওয়া সিদ্ধান্তগুলোর কথা জানান।
আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, পিএসসির দায়িত্ব হলো, সংবিধানের ১৪০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সরকার কর্তৃক প্রদত্ত বিভিন্ন রিক্রুটমেন্ট ও অন্যান্য অপিনিয়নের বিষয়ে তারা কাজ করবে। কমিশনকে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে সহায়তা প্রদান করতে হবে, এমন একটা ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে আইনে। ধারা ৭এ ‘পরীক্ষা পদ্ধতি কিভাবে হবে, সেটার একটা আউট লাইন খসড়া আইনে করে দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে রুল দিয়ে ব্যাখ্যা দেওয়া হবে।’
মন্ত্রিপরিষদসচিব বলেন, ‘খসড়া আইনের ৮ ধারায় কিছু অপরাধের কথা বলা হয়েছে, পাবলিক সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষাসংক্রান্ত কিছু অপরাধের কথা বলা হয়েছে। কেউ যদি পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন করে তাহলে সর্বোচ্চ দুই বছর, সর্বনিম্ন এক বছরের কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড হতে পারে। প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকলে খসড়া আইনে সর্বোচ্চ ১০ বছর কারাদণ্ডের কথা বলা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন তিন বছর কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবে। বেশ শক্ত একটা অবস্থান নেওয়া হয়েছে।’ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘জরিমানাটা সুনির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়নি।’
মন্ত্রিপরিষদসচিব আরো বলেন, ‘উত্তরপত্রের জালিয়াতির সঙ্গে যারা জড়িত থাকবে তাদের সর্বোচ্চ দুই বছর ও সর্বনিম্ন এক বছরের কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড হতে পারে। কোনো পরীক্ষার্থী যদি অসুদপায় অবলম্বন করে বা অন্য কোনো ব্যক্তিকে অসুদপায়ে সহযোগিতা করে তাহলে সে-ও সর্বোচ্চ দুই বছর ও সর্বনিম্ন এক বছরের কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে। পরীক্ষাসংক্রান্ত দায়িত্ব পালনে বাধা দিলে সর্বোচ্চ এক বছরের কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে খসড়া আইনে।’
তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির নিয়োগ পিএসসির মাধ্যমে নেওয়ার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়েছে কি না—এই প্রশ্নে সচিব বলেন, ‘তৃতীয় শ্রেণির নিয়োগের বিষয়টি আলোচনা হয়েছে, কিন্তু এখনো সুনির্দিষ্ট কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে বিভিন্ন ফোরামে, সর্বোচ্চ ফোরামে এজাতীয় আলোচনা হয়েছে—আলাদা একটা পিএসসি গঠন করা যায় কি না।
জাকাত তহবিল ব্যবস্থাপনা আইনের খসড়া অনুমোদন
মন্ত্রিসভায় গতকাল জাকাত তহবিল ব্যবস্থাপনা আইনের খসড়া অনুমোদনও হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদসচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম প্রেস ব্রিফিংয়ে এই আইনের ব্যাখ্যায় জানান, জাকাত তহবিল গঠন করা হবে। তহবিলের অর্থ সরকারিভাবে সংগৃহীত হবে। প্রবাসী বাংলাদেশি, বিদেশি কোনো ব্যক্তি বা সংস্থা থেকে প্রাপ্ত অর্থ যেকোনো তফসিলি ব্যাংকের জাকাত ফান্ডে জমা দিয়ে জাকাত আদায় করতে পারবেন। একটি বোর্ড থাকবে। ধর্মমন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রী এর চেয়ারম্যান থাকবেন।
ইউকে/এএস