১০ দেশের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে যা বলল তুরষ্ক

বার্তাকক্ষ প্রতিবেদন: যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ফ্রান্সসহ ১০ দেশের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠিয়েছিলো তুরস্ক। দেশটির নাগরিক সমাজের নেতা ওসমান কাভালার মুক্তির দাবি করায় তাদেরকে ডেকে এক প্রকার তিরষ্কার করেছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোয়ান।

২০১৭ থেকে কাভালা জেলে বন্দি। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ২০১৩ সালে সরকার-বিরোধী বিক্ষোভের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৬ সালে তিনি ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানকেও সমর্থন করেছিলেন। ৬৪ বছর বয়সি কাভালা এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

রাষ্ট্রদূতদের দাবি কী ছিল

সোমবার ১৮ অক্টোবর কানাডা, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, নিউজিল্যান্ড, নরওয়ে, সুইডেন এবং আমেরিকার রাষ্ট্রদূতরা একটি বিবৃতি দেন। সেখানে কাভালার মামলায় ‘দ্রুত বিচার ও ন্যায়বিচার’-এর দাবি জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “ইচ্ছাকৃতভাবে বিচার প্রক্রিয়া বিলম্বিত করা হচ্ছে। এর ফলে তুরস্কের বিচারব্যবস্থার স্বচ্ছতা, গণতন্ত্র এবং আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধা আছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিচ্ছে।”

তুরস্ককে বলা হয়েছে, তারা যেন কাউন্সিল অব ইউরোপের রায় মেনে নেয়। এই মানবাধিকার সংগঠনে তুরস্ক ১৯৫০ সালে যোগ দিয়েছিল।

কাউন্সিল অব ইউরোপ বলেছে, আগামী ৩০ নভেম্বর তাদের পরবর্তী বৈঠকের আগে কাভালাকে মুক্তি না দিলে, তারা তুরস্কের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ তুলবে এবং ব্যবস্থা নেবে।

তুরষ্কের মন্তব্য:

তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, “কোনও চালু মামলায় রাষ্ট্রদূতরা কোনও সুপারিশ দেবেন, এটা মেনে নেওয়া যায় না।” তিনি টুইট বার্তায় বলেন, “আপনারা যে প্রস্তাব দিয়েছেন, তার থেকে আপনারা গণতন্ত্র ও আইন কতটা বোঝেন তা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিচ্ছে।”

মঙ্গলবার আঙ্কারায় তুর্কি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গিয়েছিলেন ডেকে পাঠানো ১০ দেশের রাষ্ট্রদূত। সেখানে প্রায় ২০ মিনিট ধরে তাদের সবাইকে তিরষ্কার করা হয়। বৈঠক শেষে তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, কাভালার মুক্তি দাবি করে বিবৃতি দিয়ে গ্রহণযোগ্য কূটনৈতিক আচরণের ‘সীমা লঙ্ঘন’ করেছেন কূটনীতিকরা।

ওসমান কাভালা কে?

কাভালা একজন ব্যবসায়ী। তিনি চার বছর ধরে জেলে বন্দি। কিন্তু তার কোনও শাস্তি ঘোষণা হয়নি। ইউরোপিয়ান কোর্ট অব হিউম্যন রাইটস তাকে মুক্তি দিতে বলার পরেও কোনও কাজ হয়নি।

গত বছর ২০১৩-র সরকার-বিরোধী আন্দোলনে জড়িত থাকা সংক্রান্ত অভিযোগ থেকে তিনি মুক্তি পান। কিন্তু চলতি বছরে পুরনো রায় বদলে দেয় আদালত। এর সঙ্গে ২০১৬ সালের ব্যর্থ অভ্যুত্থানে তার জড়িত থাকার অভিযোগও সামনে আনা হয়। এখন তারই বিচার চলছে।

কাভালা সংখ্যালঘু অধিকারের সমর্থক এবং তিনি সাংস্কৃতিক বহুত্ববাদে বিশ্বাসী। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের অভিযোগ, তিনি মার্কিন ধনকুবের জর্জ সোরোসের হয়ে তুরস্কে কাজ করেন। এই ধনকুবের বিভিন্ন দেশে গোলমাল পাকান বলে এরদোয়ানের অভিযোগ।

সূত্র: আল জাজিরা ও ডয়েচে ভেলে

ইউকে/এএস