দুর্গাপুর-তাহেরপুর সড়কে বাসের চাকা ঘুরবে?

জিএম. কিবরিয়া, দুর্গাপুর (রাজশাহী): দীর্ঘ এক দশক পেরুলেও চালু হয়নি দুর্গাপুর টু রাজশাহী বাস সার্ভিস। নানান ভোগান্তি দুর্গাপুরের সাধারণ যাত্রীদের। রাজশাহী দুর্গাপুর অন্যান্য উপজেলার তুলনায় ক্রমান্বয়ে যাচ্ছে পিছিয়ে । অবাক করার মতো হলেও সত্য দুর্গাপুরে একসময় রাজশাহী ও ঢাকাগামী বাস চলত ছিল বাস স্টপেজ টিকিট কাউন্টার। সারি সারি বাস ১০ মিনিট অন্তর অন্তর যাত্রার জন্য অপেক্ষায় থাকত। দিন যত যায় সমাজব্যবস্থা ততই বিবর্তন হতে থাকে।

তবে প্রশ্ন উঠতে পারে দুর্গাপুরের উন্নয়ন হাঁটছে কোন দিকে? তবে কি কালের পরিক্রমায় সোনালী যুগ ছেড়ে পিছিয়ে পড়া জনপদে পরিনত হচ্ছে দুর্গাপুর। বাস পরবর্তী স্থান দখল করেছিল দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি ভুটভুটি,যা দীর্ঘ এক এক দশকের ভাঙা রাস্তায় ছিল বিশেষ পারদর্শী। আর টাকার ভাড়া হয়ে গেল ১০ টাকা। দুর্গাপুর থেকে বানেশ্বর পর্যন্ত আর টাকার ভাড়া হয়ে গেল ১০ টাকা। দীর্ঘদিন চললো ভুটভুটি র নিত্যদিন ছোটখাটো অ্যাক্সিডেন্টে আহত হয়েছেন অনেকে, অধিকাংশ দুর্ঘটনায় যাত্রীর পা ভাঙ্গতো ।

ভুটভুটির সাথে প্রতিযোগিতা করতে দুর্গাপুর আমগাছী হরিয়ান সড়কে চালু হলো গ্যাসচালিত ১০ সিটের ইমা। বছর দুয়েক চলল প্রতিযোগিতা আস্তে আস্তে পিছিয়ে পড়তে থাকলো ইমা বন্ধ হলো ইমা চলাচল এর রাজত্ব ফিরল ভুটভুটির। দীর্ঘদিন তাদের একক আধিপত্য নতুন প্রতিযোগী ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সার আবির্ভাব ভাড়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়ে গেল ১৫ একটু আরামদায়ক ব্যবস্থা যাত্রীরা ঝুঁকতে থাকলো অটোরিক্সার প্রতি। ক্রমান্বয়ে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ে মানুষের পরিবর্তে পণ্য পরিবহন তাদের কাছে সুবিধাজনক হলো সমাপ্তি হলো আরেকটি অধ্যায়ের। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকল অটোর সংখ্যা এবার ২০ টাকা ভাড়ায় চালু হলো সিএনজি অটোরিকশা ক্রমান্বয়ে জনপ্রিয় হতে লাগলো এই পরিবহন এই জনপ্রিয়তাকে ও করোনাকে দোহাই দিয়ে ২০ টাকা থেকে হয়ে গেলো ২৫ থেকে ৩০ টাকা। এগুলো ছিলো অতীত বর্তমানের ইতিহাস। যা পর্যালোচনা করলে এগিয়ে যাওয়ার পরিবর্তে ব্যায়বহুল পিছিয়ে যাওয়া পরিলক্ষিত হয়।

কলেজ ছাত্র আকাশ জানান, শুনতাম ছাত্রদের অর্ধেক ভাড়া কিন্তু বর্তমানে তা বলার কোনো পরিবেশ নাই বল্লেই নির্ধারিত ঝামেলা। যত দুর্ভোগ দুর্গাপুর থেকে বানেশ্বর যেতে। সবকিছু মনে হয় মগের মুল্লুক যা ইচ্ছে তাই করা যায়। যদি এই রোডে বাস চালু থাকতো আমাদের দুর্ভোগ অনেক কমে যেতো।

ব্যবসায়ী গোলাম রাব্বানী জানান, ব্যবসায়িক কাজে সপ্তাহে দুই তিন দিন শহরে যেতে হয়।আমার দৃষ্টিকোণ থেকে সবথেকে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হয় দুর্গাপুর টু বানেশ্বর সড়কে । নিয়মিত তাদের সাথে দরকষাকষি করতে ভালো লাগেনা। কিন্তু তারা যা করে কোনো নিয়মের ভিতরে পরে না। মাঝে মাঝে শিবপুর নামিয়ে দেয় ভ্যানে বানেশ্বর যেতে হয়। ভাড়া কমার বদলে উল্টো দিনে দিন বাড়তে থাকে। তাদের সিন্ডিকেটের সাধারণ মানুষ জিম্মি, কর্তৃপক্ষ চাইলে এ অবস্থা থেকে আমাদের মুক্ত করতে পারেন।

এ বিষয়ে রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মতিউল হক( টিটো) জানান, ওই সড়কটিতে পরিবহন বন্ধ হওয়ার অন্যতম কারণ তিন চাকার পরিবহনের দৌরাত্ম্যের। লোকাল সড়কের চলাচলের কথা থাকলেও মূল সড়ক দিয়ে চলাচলের ব্যাপক প্রবণতা রয়েছে তাদের। তাদের জন্যই মূলত ব্যবসায়িক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে বাসের সংখ্যা আস্তে আস্তে কমতে থাকে ফলশ্রুতিতে দীর্ঘদিন ওই রুটে বাস বন্ধ। মাঝে মাঝে আমরা চালুর উদ্যোগ নিয়েছি এমনকি প্রণোদনা দিয়েও সহযোগিতা করেছে তবুও লোকসান ঠেকানো যাচ্ছে না। সেজন্যই সম্পূর্ণভাবে বাস সার্ভিস বন্ধ হয়ে গেছে। শীঘ্রই তাহেরপুর দুর্গাপুর রাজশাহী রুটে বাস সার্ভিস চালু করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। প্রশাসন ও সাধারণ জনগণের সহযোগিতা থাকলে আবারও চালু হয়ে যাবে ইনশাল্লাহ।

ইউকে/এসই