৪০ ডিগ্রি তাপ ওঠতে পারে রোজায়

বার্তাকক্ষ প্রতিবেদন: শুরু হয়েছে সিয়াম সাধনার মাস পবিত্র রমজান। আর এ মাসেই (এপ্রিল) ২ থেকে ৩টি তাপ প্রবাহ বয়ে যেতে পারে দেশের ওপর দিয়ে। এর মধ্যে একটিতে ৪০ ডিগ্রিতে পৌঁছাতে পারে তাপমাত্রা।

এবারও রোজার রাখার সময় বেশ দীর্ঘ। প্রায় ১৪ ঘণ্টার রোজা শুরু হলেও পরের দিকে এটি বেড়ে সাড়ে ১৪ ঘণ্টায় গিয়ে ঠেকবে। এই অবস্থায় তীব্র গরম পড়লে একটু বাড়তি কষ্টের মধ্য দিয়েই যেতে হবে ধর্মপ্রাণ রোজদারদের।

চলতি মাসে কেবল তাপপ্রবাহ নয়; তীব্র কালবৈশাখী, বজ্রঝড়, ঘূর্ণিঝড় ও আকষ্মিক বন্যার আভাসও রয়েছে।

ঢাকা আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন। এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন এরই মধ্যে তিনি কৃষি মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সব দফতরের পাঠিয়েছেন।

এতে উল্লেখ করা হয়েছে- এপ্রিল মাসে সামগ্রিকভাবে দেশে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে। এ মাসে দেশের উত্তর, উত্তর-পশ্চিম ও মধ্যাঞ্চলে ২-৩ দিন বজ্র ও শিলাবৃষ্টিসহ মাঝারি/তীব্র কালবৈশাখী ঝড় এবং দেশের অন্যত্র ৩-৫ দিন বজ্র ও শিলাবৃষ্টিসহ হালকা/ মাঝারি ধরনের কালবৈশাখী ঝড় হতে পারে।

সেই সঙ্গে এ মাসেই দেশের কোথাও কোথাও ২-৩ টি মৃদু (৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) মাঝারি (৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) ধরনের তাপ প্রবাহ বয়ে যেতে পারে। এ মাসে দিনের তাপমাত্রা স্বাভাবিক অপেক্ষা সামান্য বেশি এবং রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিক থাকতে পারে। অন্যদিকে এ মাসে বঙ্গোপসাগরে ১-২ টি নিম্নচাপ সৃষ্টি হতে পারে। এর মধ্যে একটি রূপ নিতে পারে ঘূর্ণিঝড়ে। আবার দেশের কয়েক জেলায় স্বল্প মেয়াদী আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতিরও সৃষ্টি হতে পারে।

মার্চ মাসের আবহাওয়ার পর্যালোচনায় ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- গত মাসে সারাদেশে স্বাভাবিক অপেক্ষা কম বৃষ্টিপাত হয়েছে। রাজশাহী, বরিশাল ও খুলনা বিভাগে বৃষ্টিপাতের কোনো রেকর্ড পাওয়া যায়নি। পশ্চিমা লঘুচাপের সঙ্গে পূবালী বায়ুপ্রবাহের সংযোগ ঘটায় ২৪ ও ২৬-৩১ মার্চ সময়ে সিলেট, ময়মনসিংহ ও রংপুর বিভাগের কিছু কিছু স্থানে অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হয়। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকায় তাপীয় লঘুচাপ অবস্থান করায় ১৫-২০, ২৩-২৮ মার্চ সময়ে ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে বিচ্ছিন্নভাবে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যায়। এ সময় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৮.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস (রাজশাহী, ১৯ মার্চ ২০২২) ।

১ মার্চ দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ আন্দামান সাগরে একটি লঘুচাপের সৃষ্টি হয় এবং ৪ মার্চ এটি নিম্নচাপে পরিণত হয়। নিম্নচাপটি পরবর্তীতে উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘণীভূত হয়ে ৫ মার্চ দক্ষিণপশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়। এরপর এটি আরও উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও দুর্বল হয়ে প্রথমে নিম্নচাপ এবং পরবর্তীতে সুস্পষ্ট লঘুচাপ ও লঘুচাপে পরিণত হয় এবং পরিশেষে গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে। আবার ১৬ মার্চ নিরক্ষীয় ভারত মহাসাগর ও দক্ষিণপশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়। এরপর এটি উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ আন্দামান সাগর এলাকায় সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয় এবং ২০ মার্চ একই এলাকায় নিম্নচাপে পরিণত হয়। নিম্নচাপটি আরো উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘণীভূত হয়ে ২১ মার্চ তারিখে আন্দামান সাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়। এরপর এটি আরো উত্তর/ উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে ২৩ মার্চ সন্ধ্যা ৬ টা নাগাদ মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম করে। এরপর এটি আরও উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও বৃষ্টি ঝরিয়ে ক্রমশঃ দুর্বল ও গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে।

২০২১ সালের এপ্রিলে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা তার আগের সাত বছরের রেকর্ড ছাড়িয়েছিল। ২৫ এপ্রিল ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের সর্বোচ্চ তামপাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে যশোরে ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

ইউকে/আরএস