নিজস্ব প্রতিবেদক: পুরুষ সেজে দূর সম্পর্কের এক চাচিকে ভাগিয়ে ঢাকায় নিয়ে বিয়ে করেছেন ২২ বছর বয়সী এক তরুণী। ১০দিন পর জানা গেছে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার এই তরুণীর আসল পরিচয়। বৃহস্পতিবার (২৬ মে) রাতে তারা গোদাগাড়ীতে ফিরে আসে। শুক্রবার (২৭ মে) দুপুরে পুলিশ তাদের থানায় নিয়ে যায়। আজব এ ঘটনায় পুলিশ ও স্থানীয়রা হতবাক!
পুরুষ সাজার পর ওই তরুণী নিজের নাম রাখেন ফাহিম। তারপর ১৯ বছর বয়সী ওই চাচির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। ফাহিম নামধারী তরুণী বিয়ের পর কৃত্রিম পুরুষাঙ্গ ব্যবহার করায় চাচি বিষয়টি এতদিন টের পাননি বলে দাবি করেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানিয়েছে, এ তরুণী সাত মাস আগে স্বামীর কাছ থেকে তালাক নেন। ওই সংসারে তার দেড় বছর বয়সী এক মেয়ে রয়েছে।
বিবাহ বিচ্ছেদের পর হঠাৎ তিনি নিজের মধ্যে পরিবর্তন আনেন। নিজেকে পুরুষ হিসেবে নতুন করে পরিচয় দেন এবং প্যান্ট-শার্ট পরতে শুরু করেন। ছেলেদের মতো ছোট করে চুলও কাটেন। এরপর দূর সম্পর্কের ওই চাচির সঙ্গে গড়ে তোলেন ভালোবাসার সম্পর্ক।
ফাহিম নামধারী এই তরুণীর প্রেমের টানে চাচিও নিজের স্বামীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ ঘটান। তবে ওই সংসারে তার কোনো সন্তান নেই।
১০ দিন আগে পুরুষ পরিচয় দেওয়া ‘ফাহিম’ ও চাচি ঢাকায় পালিয়ে যান। সেখানে গিয়ে বিয়ে করেন। তারপর এক আত্মীয়ের বাড়িতে দু’জনে থাকতে শুরু করেন। এ নিয়ে ফাহিম নামধারী পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় জিডি করা হয়।
এছাড়া ফাহিমের চাচির পরিবার এই খবর পেয়ে তাদের দুজনকে কৌশলে বাড়িতে আনার চেষ্টা শুরু করে।
বৃহস্পতিবার রাতে ফাহিম দূর সম্পর্কের ওই চাচিকে নিয়ে রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে গ্রামে বাড়িতে ফেরেন। তাদের আসার খবর ছড়িয়ে পড়লে শুক্রবার এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। ‘ফাহিম’ আসলেই পুরুষে রূপান্তরিত হয়েছেন কিনা- এ নিয়ে সবার মনে সন্দেহ দেখা দেয়। স্থানীয়দের চাপের মুখে তিনি শেষ পর্যন্ত মুখ খোলেন, পুরুষে রূপান্তরিত হননি বলেও স্বীকার করেন।
এদিকে খবর পেয়ে শুক্রবার গোদাগাড়ী থানা পুলিশ ওই গ্রামে গিয়ে দুজনকেই জিজ্ঞাসাবাদ করে। পরে তাদের থানায় নিয়ে যায়। এ সময় ফাহিম নামধারী প্রতারক তরুণীর দূর সম্পর্কের চাচি পুলিশের কাছে দাবি করেন তারা দুজনে ঢাকায় গিয়ে বিয়ে করেছেন। যদিও পুলিশকে তারা বিয়ের কাগজ দেখাতে পারেননি।
বিয়ের পর তাদের মধ্যে দৈহিক সম্পর্ক জানিয়ে অভিযুক্ত তরুণীর নকল পুরুষাঙ্গ ব্যববহারের বিষয়টি কখনও টের পাননি বলে দাবি করেন চাচি। তবে ফাহিমের বিরুদ্ধে তার কোনো অভিযোগ নেই বলেও পুলিশকে সাফ জানিয়ে দেন তিনি।
রাজশাহীর গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি আজব হলেও গুজব নয়। জিজ্ঞাসাবাদে তাদের কথা ও কাজের কোনো মিল পাওয়া যাচ্ছে না। এদের এমন বিচিত্র সম্পর্ক আইনের কোনো ধারার মধ্যেও আনা যাচ্ছে না।
তাই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পরামর্শে একটি সাধারণ ডায়েরি করে তার ভিত্তিতে ফাহিম নাম ধারণ করা তরুণীকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে তার কথিত চাচিকে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে বলে জানান গোগাগাড়ী থানার এই পুলিশ কর্মকর্তা।
ইউকে/এসআই