সাভার সংবাদদাতা: আশুলিয়ায় এক আওয়ামীলীগ নেতার বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছেন তার দ্বিতীয় স্ত্রী (২৪)। তালাকের তথ্য গোপন রেখে দীর্ঘ প্রায় ৫ মাস শারীরিক সম্পর্ক চালিয়ে যাওয়ায় তার বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা দায়ের করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে রবিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাত ৭ টার দিকে আশুলিয়া থানায় এ মামলা দায়ের করা হয়। এর আগে ১৭ এপ্রিল থেকে ৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে ধর্ষণের অভিযোগ এনেছেন তার এই সাবেক স্ত্রী। সর্বশেষ ৩ সেপ্টেম্বর রাতেও ভুক্তভোগীকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায় গত ১৭ এপ্রিল ভুক্তভোগীকে তালাক প্রদান করলেও তালাকের নোটিশ গোপন করে রেখেছিলেন ওই আওয়ামীলীগ নেতা। অভিযুক্ত মোয়াজ্জেম হোসেন (৫৫) ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানার নয়ারহাট এলাকার চাকল গ্রামের মৃত মোজাম্মেল হকের ছেলে। তিনি পাথালিয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দীতা করায় তাকে দল থেকে বহিঃষ্কার করা হয়।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২০১৮ সালে তিন লাখ টাকা দেনমোহরে নয়ারহাট এলাকার চাকল গ্রামের এক নারীকে (২৪) বিয়ে করেন মোয়াজ্জেম হোসেন। বিয়ের পর ওই নারী নিজের বাড়িতে থেকেই মোয়াজ্জেমের সাথে ঘর সংসার করতেন। গত ১৭ এপ্রিল দ্বিতীয় স্ত্রীকে তালাক দেন মোয়াজ্জেম। তালাকের বিষয়টি গোপন রেখে ভুক্তভোগীর সাথে ৫ মাস শারিরীক সম্পর্ক বজায় রাখেন মোয়াজ্জেম হোসেন।
৬ সেপ্টেম্বর মোয়াজ্জেমের বাড়িতে ভরণ-পোষণের খরচ চাইতে যায় ভুক্তভোগী। তখন ভুক্তভোগীকে তালাকের কাগজ হাতে ধরিয়ে দেন। পরে ওই নারী আশুলিয়া থানায় মামলা করতে আসলে থানা থেকে আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। এরপর ৮ সেপ্টেম্বর আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন ওই ভুক্তভোগী। পিটিশন মামলা নং-৩৬৭। সেই ধারাবিকতায় আদালতের নির্দেশে আজ মামলাটি থানায় দায়ের করা হয়।
এ ব্যাপারে মোয়াজ্জেম হোসেনের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। সর্বশেষ রাত সাড়ে ৯ টা বাজেও চেষ্টা করে দেখা যায় তার ফোনটি বন্ধ।
এ ব্যাপারে আশুলিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জিয়াউল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
উল্লেখ্য, গত ইউপি নির্বাচনে তিনি নৌকার বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র ভাবে নির্বাচনে অংশ নেন। পরে তাকে বহিঃষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয় স্থানীয় থানা আওয়ামীলীগ। তবে এরপরেও স্থানীয় ভাবে তাকে আওয়ামীলীগের রাজনীতি করতেই দেখা গেছে। এমনকি স্থানীয় সাংসদের নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি নিয়মিতই অংশ গ্রহণ করেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।
ইউকে/এসএম