বাবার শেষ ইচ্ছে পূরণে নিজেই জানাজা পড়ালেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক

নিজস্ব প্রতিবেদক: বীর মুক্তিযোদ্ধা বাবার শেষ ইচ্ছা ছিল- মৃত্যুর পর যেন তার ছেলেই জানাজা পড়ায়। বাবার সেই শেষ ইচ্ছে পূরণ করলেন- রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মুহাম্মাদ শরিফুল হক। মৃত্যুর পর প্রশাসনের পক্ষ থেকে গার্ড অব অর্নার (রাষ্ট্রীয় সম্মান) জানানো হয়। এরপর সেখানে বিশাল জানাজার নামাজে নিজেই ইমামতি করেন তিনি। এরপর সকলের সাথে বাবার দাফনকাজ সম্পন্ন করেন।

রাজবাড়ীর পাংশা পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের
গুধিবাড়ী গ্রামের অধিবাসী বিশিষ্ট সমাজসেবী বীর মুক্তিযোদ্ধা আরশেদ আলী গত ১০ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৯টার দিকে মৃত্যুবরণ করেন। (ইন্নালিল্লাহ ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। পরদিন ১১ সেপ্টেম্বর দুপুরে জানাজার নামাজ শেষে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তার মরদেহ গ্রামের বাড়িতেই দাফন করা হয়।

ওইদিন বাদ যোহর পাংশার এয়াকুব আলী চৌধুরী বিদ্যাপীঠ মাঠে বীর মুক্তিযোদ্ধা আরশেদ আলীকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। পাংশা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মাদ আলীর নেতৃত্বে গার্ড অব অনার অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন রাজবাড়ী পুলিশ লাইন্সের এএসআই বিষ্ণু রায়।

এর আগে পাংশা উপজেলা প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড সংসদ, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি ও মুক্তিযোদ্ধাসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ- বীর মুক্তিযোদ্ধা আরশেদ আলীর কফিনে পুষ্পার্ঘ অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

জানাজায় উপস্হিত ছিলেন- রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) আসাদুজ্জামান রিপন, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মো. মাহাবুর রহমান শেখ, পাংশা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ওদুদ মন্ডল, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আলী, পৌর মেয়র ওয়াজেদ আলী মাস্টার, ভাইস চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন বিশ্বাস, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার জনাব চাঁদ আলী।

এছাড়া রাজবাড়ী জেলা প্রশাসন ও পাংশা উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ এয়াকুব আলী চৌধুরী বিদ্যাপীঠ মাঠে অনুষ্ঠিত জানাজার নামাজে অংশগ্রহণ করেন।

জানাজার নামাজ শেষে পাংশা পৌরসভার কেন্দ্রীয় গোরস্থানে বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম আরশেদ আলীর দাফন সম্পন্ন হয়।

মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, দুই ছেলে, দুই মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তার বড় ছেলে পাংশা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি জহুরুল হক। ছোট ছেলে রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মুহাম্মদ শরিফুল হক। আর তার দুই মেয়ের মধ্যে একজন রাজবাড়ী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক জান্নাতুল ফেরদৌস এবং অন্যজন সোনালি ব্যাংক লিমিটেডের কর্মকর্তা আসমাউল হুসনা।

ইউকে/এইচপি/এএস