শীত কুয়াশায় বিপর্যস্ত জনজীবন

বার্তাকক্ষ প্রতিবেদন: সারা দেশে অব্যাহত থাকবে শীত। নীলফামারী, পঞ্চগড় ও শ্রীমঙ্গলের ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। তবে দেশের আবহাওয়ায় তেমন কোনো পরিবর্তন নেই। আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, এ সময় দিন ও রাতের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকবে। ফলে দেশের চলমান শীতের পরিস্থিতিতে কোনো পরিবর্তন আসবে না।

গতকাল আবহাওয়া অধিদফতর এ তথ্য জানিয়েছে। গতকাল সকালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে তেঁতুলিয়ায় ৮.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বোচ্চ তাপমাত্রা টেকনাফে ২৯.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ ছাড়া ২৪ ঘণ্টায় দেশের কোথাও বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়নি। নীলফামারী, পঞ্চগড় ও শ্রীমঙ্গল জেলার ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা প্রশমিত হতে পারে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। জানা গেছে, উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ বিহার ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। আগামী তিন দিনে দেশের আবহাওয়া পরিস্থিতি সামান্য পরিবর্তন হতে পারে।

ঘন কুয়াশায় বিপর্যস্ত উত্তরের জনজীবন : ঘন কুয়াশায় ঢাকা পড়েছে দেশের উত্তরাঞ্চলের জনপথ। সড়ক-মহাসড়কে সব ধরনের যানবাহন হেডলাইট জ্বালিয়ে ধীরগতিতে চলাচল করছে। কুয়াশা আর হিমেল হাওয়ায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। রাস্তায় মানুষের চলাচল একবারেই সীমিত। নিতান্ত প্রয়োজন কিংবা জীবিকার তাগিদে ছুটে চলা মানুষের দেখা মিলছে পথেঘাটে।

ছিন্নমূল আর গ্রামীণ মানুষ খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষজন।
গতকাল দিনাজপুরে ভোর ৬টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৬ শতাংশ। এ জেলায় চলতি শীত মৌসুমে সর্বনিম্ন ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। চলতি সপ্তাহে এখানে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হতে পারে। বৃষ্টি হলে তাপমাত্রা কমতে শুরু করবে। এ ছাড়া জানুয়ারি মাসে এই জেলার ওপর দিয়ে দুটি মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে বলে জানা গেছে। এদিকে ঠান্ডা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শীতজনিত রোগে আক্রান্তের হার বেড়েছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্ক মানুষেরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। হাসপাতালগুলোতে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর চাপ দ্বিগুণ বেড়েছে।

তীব্র শীতে কাতর লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রাম : ভোর থেকে ঘন কুয়াশার চাদরে ঢেকে থাকছে চারদিক। দিনভর সূর্যের দেখা মিলছে না। সন্ধ্যার পর পরিস্থিতি হয়ে উঠছে আরও ভয়াবহ। এমন অবস্থায় তীব্র শীতে স্থবির হয়ে পড়েছে উত্তরের সীমান্তবর্তী দুই জেলা লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামের জনজীবন। এই দুই জেলার বাসিন্দারা বলছেন, হিমেল ঠান্ডায় ব্যাহত হচ্ছে তাদের স্বাভাবিক কাজকর্ম। নিদারুণ কষ্টে আছেন ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমার, গঙ্গাধর, তিস্তা ও ধরলা নদী তীরবর্তী এবং চরাঞ্চলের খেটে খাওয়া মানুষ। কাজের সন্ধানে ঘরের বাইরে যেতে পারছেন না শ্রমজীবীরা। এদিকে শীতের কামড় ঠেকাতে চরাঞ্চলে বসবাসকারী বেশির ভাগ মানুষের প্রয়োজনীয় শীতবস্ত্রের জোগান নেই। নেই নতুন কাপড় কেনার সামর্থ্য। তাই নিতান্তই প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন না। শীত থেকে বাঁচতে তাদের ভরসা হয়ে উঠেছে খড়কুটোর আগুন।

ইউকে/এসএম