ভুটানের আকর্ষণীয় ১০ ভ্রমণ গন্তব্য

ইশতিয়াক হাসান: আশ্চর্য সুন্দর পাহাড়, ঝিরঝির করে বয়ে চলা শীতল জলের নদী, পাহাড়চূড়ার বৌদ্ধমন্দির—সবকিছু মিলিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার দেশ ভুটানের মতো চমৎকার ভ্রমণ গন্তব্য আছে কমই। ভুটানি রীতির বাড়ি-ঘরগুলোও নজর কাড়ে পর্যটকদের। লাল-সাদা রঙের কাঠের সামনের অংশ, ছোট জানালা, ঢালু ছাদ প্রতিটি বাড়ির। তেমনি মৌসুমে আপেল, কমলাসহ নানা ধরনের বাগানের সৌন্দর্যও উপভোগ করতে পারবেন। হরেক জাতের বন্যপ্রাণীর আবাসও দেশটিতে। আবহাওয়াও খুব আরামদায়ক। হবে না-ই বা কেন? এটি যে কার্বন নেগেটিভ কান্ট্রি (যে পরিমাণ কার্বন ছাড়ে, তার চেয়ে শোষণক্ষমতা বেশি)। ভুটানে অসাধারণ সুন্দর সব জায়গার মধ্যে আপাতত ১০টিকে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছি।

থিম্পু: ভুটানের রাজধানী শহরটিতে দেখার মতো অনেক কিছুই আছে। পাহাড়চূড়ার বুদ্ধ পয়েন্টের বড় আকর্ষণ গৌতম বুদ্ধের বিশাল এক সোনালি মূর্তি। ২০০৬ সালে কাজ শুরু হলেও ১৬৯ ফুট উঁচু বুদ্ধ ভাস্কর্য এবং অন্যান্য মূর্তিসহ গোটা কমপ্লেক্সের উদ্বোধন হয় ২০১৫। কয়েকটা সিঁড়ি পেরিয়ে ভেতরে গিয়ে ছোট ছোট আরও অনেক বুদ্ধমূর্তির দেখা পাবেন।

বিভিন্ন তাকে সাজিয়ে রাখা। সঙ্গের গাইড যখন জানাবেন আট ইঞ্চি দৈর্ঘ্যের এক লাখ এবং ১২ ইঞ্চি দৈর্ঘ্যের ২৫ হাজার ব্রোঞ্জের বুদ্ধ স্ট্যাচু আছে এখানে, তখন রীতিমতো চমকাবেন।

বিশাল চত্বর থেকে উপভোগ করবেন চারপাশের তুষারের টুপি পরা উঁচু সব পর্বতের রূপ। চত্বরে বেশ কিছু মাঝারি আকারের মূর্তি আছে। বুদ্ধ পয়েন্ট এখন থিম্পুর অঘোষিত প্রতীকে পরিণত হয়েছে।

শহরের ভেতর দিয়ে এঁকেবেঁকে বয়ে চলা পাহাড়ি নদী চু মুগ্ধ করবে আপনাকে। শহর থেকে গাড়িতে চেপে মিনিট পনেরো-কুড়ি গেলে পৌঁছে যাবেন ‘জিগমে দরজি ন্যাশনাল পার্কে’। এই বনের আয়তন কম নয়, ৪ হাজার ৩১৬ বর্গকিলোমিটার। গোটা ভুটানের প্রায় ৯ ভাগের এক ভাগ। মোটামুটি ১ হাজার ৬০০ থেকে ৭ হাজার ১০০ মিটার উচ্চতার এলাকা আছে এর আওতায়। ট্র্যাকারদের স্বর্গরাজ্য জিগমে দর্জি জাতীয় উদ্যান, বিশেষ করে ইউরোপ-আমেরিকার প্রচুর ট্র্যাকার এই জঙ্গলে ঘুরে বেড়ান। বনে বাঘ ছাড়া মিলবে মেঘলা চিতা, মাস্ক ডিয়ার, বন্য কুকুর, হিমালয়ান কালো ভালুক, লাল পান্ডার মতো প্রাণীদের। হিমালয়ের তুষারছাওয়া উঁচু সব শৃঙ্গও পড়েছে এর সীমানায়। ভুটানের জাতীয় প্রাণী টাকিনও সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় এই জঙ্গলে। আধা গরু-আধা ছাগল বলতে পারেন এই জন্তুটিকে। অবশ্য এই প্রাণীকে সহজে দেখতে চাইলে যেতে পারেন থিম্পুর টাকিন রিজার্ভে।

পারো: পারোর কথা বলতে গেলে প্রথমেই বলতে হয় এর আশ্চর্য সুন্দর বিমানবন্দরটির কথা। প্লেন থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গে আরামদায়ক, শীতল এক বাতাস আপনার শরীর জুড়িয়ে দেবে। রানওয়ের পরেই পাহাড়সারি মনটা ভালো করে দেবে। নেট ঘেঁটে যতটা জানতে পেরেছি, পারো শহরটা গড়ে উঠেছে বেশি দিন হয়নি, ১৯৮৫ সালে একটা মূল সড়ক দিয়ে এর শুরু। তখন এর দুই পাশে ছিল কেবল বর্ণিল সব দোকান। ধীরে ধীরে আরও দালানকোঠা হয়।

ভুটানের জাতীয় জাদুঘর পারোতেই। পাহাড়ের ওপরে। মূল ভবনটি গোল, ঐতিহ্যবাহী লাল-সাদা এক দালান। তা জং নামে পরিচিত বহু পুরোনো এই বিল্ডিংটাকে ভুটানের তৃতীয় রাজা জিগমে দর্জি ওয়ানচুকের নির্দেশে ১৯৬৮ সালে সংস্কার করে জাদুঘরে রূপান্তর করা হয়। তা জং মানে হলো ওয়াচ টাওয়ার। সত্যি এখানে দাঁড়ালে নিচের পারো উপত্যকা নিমেষে চোখের সামনে চলে আসবে। তবে প্রথমে নজর যাবে দুটি জংয়ের দিকে। বেশি মশহুর রিনপাং জং। এটা একই সঙ্গে দুর্গ এবং বৌদ্ধমন্দির বা গুম্ফা। এখন পারোর প্রশাসনিক সদর দপ্তর। এখান থেকে সবুজ পারো উপত্যকায়, মাঝে মাঝে বর্ণিল সব ভুটানি বাড়ি-ঘর, ফসলের খেত চোখ জুড়িয়ে দেবে।

শহরের বাইরের দিকটা কেমন মায়া মাখানো। বড় জায়গা নিয়ে কয়েকটা রিসোর্ট, ভুটানিদের ছোট ফার্ম হাউস, চাষ করা জমিগুলো দৃষ্টি আকর্ষণ করবে। পারো শহর কেটে চলে গেছে ভুটানের বড় নদীগুলোর একটি পা চু।

টাইগার নেস্ট: ভুটানের নাম শুনলে কোন দৃশ্যটা সবার আগে মনের পর্দায় ভাসতে থাকে, বলুন তো? আমিই বলে দিচ্ছি, উঁচু পাহাড়ের চাতালে ঝুলতে থাকা অনিন্দ্যসুন্দর এক মনাস্ট্রি বা গুম্ফা। কথাটা আমার নিজের বেলায়ও খাটে। প্রথম যখন ভুটান ভ্রমণের কথা ভাবছিলাম, মাথায় ঘুরছিল টাইগার নেস্ট বা পারো টেকটসাংয়ের ছবিই। পারো শহর থেকে টাইগার নেস্টের নিচের পার্ক মতো জায়গাটিতে পৌঁছাতে মিনিট ২৫-৩০ লাগবে। ঢংঢং শব্দে কয়েকটা সেতু পেরোবেন পথে। এর মধ্যে একটা বেশ বড়। টাইগার নেস্ট বা ‘বাঘের বাসা’র মূল প্রবেশপথের বাইরে হরেক জাতের স্যুভেনির নিয়ে বসেন বিক্রেতারা। কতক দূর যেতেই মোটামুটি খোলামেলা, তবে একটু এবড়োখেবড়ো এক জমিতে অনেকগুলো ঘোড়া চড়তে দেখবেন। যাঁরা পাহাড় বাইতে সাহস করেন না, তাঁদের চূড়ায় পৌঁছে দেবে এই ঘোড়া।

গাছপালাময় এক জায়গা থেকেই ট্রেকিং আর হাইকিংয়ের পথের শুরু। কয়েকটি বোর্ডে এই ট্রেইলে কী ধরনের পাখির দেখা মিলতে পারে তা ছবিসহ চিহ্নিত করা হয়েছে। টাইগার নেস্টে উঠতে হয় ঘোরানো-প্যাঁচানো অনেকটা পথ পেরিয়ে। গুম্ফাটা সাগর সমতল থেকে ৩১০০ মিটার উচ্চতায়!

আপনার নিশ্চয় জানতে ইচ্ছা করছে এর নাম টাইগার নেস্ট কেন? বাঘের বাসা আছে কি? ১৬৯২ সালে প্রথম তৈরি হয় এটি। কথিত আছে গুরু রিনপোচ একটা বাঘিনীর পিঠে চড়ে বৌদ্ধ ধর্ম বিস্তারের জন্য তিব্বত থেকে এখানে এসেছিলেন। তাই এমন নামকরণ। অপর একটি কিংবদন্তি বলছে, গুরু তাঁর এক অভিজাত ভক্তের পীড়াপীড়িতে তাঁকে বাঘিনী বানিয়ে পিঠে সওয়ার হয়ে ওঠেন উঁচু পাহাড়টিতে। ওই বাঘিনী নাকি উড়ে পেরিয়েছিল দূরত্বটা।

চেলালা পাস: গাড়িতে করে যাওয়া যায় ভুটানের এমন সবচেয়ে উঁচু জায়গা চেলালা পাস। উচ্চতা ৩ হাজার ৯৮৮ মিটার। পাহাড়ি রাস্তাটা ভয়ানক আঁকাবাঁকা, বিপজ্জনক। অবশ্য ভুটানের চালকেরা সাধারণত গাড়ি চালান সতর্কতার সঙ্গে। কখনো কখনো দূরে পাহাড়ের গায়ে টাইগার নেস্টটের চেহারাও দেখবেন চেলালা পাসে যাওয়ার পথে। উচ্চতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভূপ্রকৃতিতে বৈচিত্র্য নজর কাড়বে। নতুন নতুন প্রজাতির গাছের সঙ্গে পরিচিত হবেন। শীতও বাড়বে। এখানে শীতে এত্তো বরফ পড়ে যে অনেক সময় এই পথ বন্ধ হয়ে যায়। রেসকিউ পার্টি এসে বরফ পরিষ্কার করলেই তবে গাড়ি চলে। এদিকে রাস্তা সরু। উল্টো পাশ থেকে গাড়ি আসে কি না, বুঝতে সতর্ক থাকতে হয়।

চেলালায় পৌঁছে গাড়ি থেকে নামলেই মনে হবে ঠান্ডায় জমে যাচ্ছেন। পাহাড়ের ওপরের দোকান থেকে গরম-গরম পাকোরা, বেসনে চুবানো ফুলকপি খেয়ে উষ্ণতা খুঁজতে পারেন।

পাহাড়ে কিনারে দাঁড়াতেই হিমালয়ের তুষারঢাকা পর্বতমালাগুলো নজর কাড়বে। নিচে এক পাশে পারো ভ্যালি, আরেক পাশে হা ভ্যালি। ওপর থেকে এই উপত্যকার দৃশ্য দেখে চোখ জুড়াবে।

দোচুলা পাস: থিম্পু থেকে পুনাখা যাওয়ার পথে পড়ে দোচুলা পাস। সাগর সমতল থেকে প্রায় ৩ হাজার ১০০ মিটার উচ্চতায় এটি। এখান থেকে হিমালয়ের উঁচু উঁচু বরফঢাকা চূড়াগুলো দেখা যায়। তবে শর্ত আছে একটা, আকাশ থাকতে হবে পরিষ্কার। এদের মধ্যে আছে ভুটানের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট মাসানগাংও। দোচুলা পাসের মূল আকর্ষণ এখানকার স্তুপাগুলো। সাদা-লালে মেশানো এখানকার ১০৮ স্তুপা দেখে চোখ জুড়াবে। বৌদ্ধভিক্ষুদের ধ্যানের জায়গা স্তুপা। এই স্তুপাগুলো বানানো হয় কুইন মাদার আসি দরজি ওয়াংমো ওয়ানচুকের নির্দেশে, ২০০৪ সালে। একটা গুম্ফাও আছে দোচুলায়। অবশ্য ভুটানে দেখা বিভিন্ন প্রাচীন, পুরোনো গুম্ফাগুলোর তুলনায় এটা নেহাত ছোট।

জায়গাটি পড়েছে ভুটানের জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানের সীমানায়। চারপাশে তাই লম্বা লম্বা গাছের রাজত্ব। আশপাশে সাইপ্রেস, ওক ও বার্চ গাছের রাজত্ব। পার্কের সীমানায় হেঁটে বেড়ানোর কয়েকটি ট্রেইল আছে, বিশেষ করে রডোডেনড্রন ট্রেইলটা অনেক সুন্দর। ইন্টারনেট ঘেঁটে জানা, ভুটানের বড় দুটি জঙ্গল জিগমে দর্জি ও জিগমে সিঙ্গির মাঝে প্রাকৃতিক করিডর এই উদ্যান। তাই এখানে বাঘ, চিতা বাঘ আর লাল পান্ডার মতো দুর্লভ বন্য জন্তুর দেখা পাওয়া সম্ভব। তবে এর জন্য সময় ও ধৈর্য দুটোই চাই।

পুনাখা: দোচুলা পাসের পর পুনাখা যাওয়ার পথটা ভারি সুন্দর। ডান পাশে গা ঘেঁষেই উঠে গেছে পাহাড়। তাই তাকিয়ে বেশি কিছু দেখতে পাবেন না। তবে বাঁয়ে তাকালেই চোখ জুড়াবে। একটু দূরে গাছপালায় ঢাকা সবুজ পাহাড়, এখানে-সেখানে দৃষ্টিনন্দন সব বাড়িঘর। কিছুক্ষণ পর বেশ উঁচুতে কয়েকটা স্থাপনা দেখবেন, ওটা নানারি। নারী ভিক্ষুরা ওখানে প্রশিক্ষণ নেন, ধ্যান করেন। বাঁয়ে নদীও চলবে।

পুনাখায় ঢুকে ভেতরের একটা রাস্তা ধরে কিছু দূর গেলে ডান পাশে পাবেন অপরূপ এক নদী। পাথরের ওপর দিয়ে ঝিরঝির করে বয়ে চলেছে জল। ওপরে সেতু। দূরে দেখা দিল পুনাখা জং। একই সঙ্গে দুর্গ আর ধর্মীয় কাঠামো বলতে পারেন এই জংকে। পুনাখা জং তৈরি হয়েছে সেই ১৬৩৭-৩৮ সালে। এখন পুনাখা জেলার প্রশাসনিক সদর দপ্তর। ভুটানি স্থাপত্যরীতিতে তৈরি দালানটি মুগ্ধ করবে আপনাকে। পুনাখা জংয়ের সীমানায় ঢুকতে হয় নদীর ওপর একটা সেতু পেরিয়ে। পুনাখা উপত্যকার দুই নদীর মাঝখানে জংটি। আদপে পো চু হলো নদ, মো চু নদী। পো চোর উৎপত্তি পুনাখার পাহাড়ের হিমবাহের বরফগলা পানিতে হলেও মো চু এসেছে সেই তিব্বতের লাসা থেকে। কাঠের ব্রিজের ওপর থেকে নিচে নদীর স্বচ্ছ জলে মাছ দেখা যায়।

জংয়ের পেছনের গেট পেরিয়ে রওনা দেবেন ঝুলন্ত সেতুর দিকে। প্রথমে দুই পশে গাছপালার গার্ড দেওয়া পাকা সড়ক, তারপর পাহাড়ের পাশ দিয়ে চলে যাওয়া মেঠোপথে। ৫০০ ফুটের বেশি লম্বা ঝুলন্ত সেতুটা সাং চু নদীর ওপর। দুই পাশে সিমেন্টের ব্লকের মাঝখানে শক্ত তার দিয়ে তৈরি। হাঁটার সময় সেতুর সঙ্গে দুলতে থাকবেন আপনিও। সেতুর গায়ে অনেক রঙিন পতাকা, সব সময়ই নাকি এই সেতুতে এমন অজস্র পতাকা ঝোলে অশুভ আত্মাদের দূরে রাখতে। ঝুলন্ত সেতু থেকে নিচের নদীটা ধরা দেবে আরও মোহনীয় চেহারায়। রাফটিং করতে দেখবেন মানুষকে। ওপাশে পাহাড়, সমতলে ধানখেত—সবকিছুই দারুণ! এই সেতুর ওপর দিয়ে মানুষ তো বটেই; বিভিন্ন গবাদিপশুও চলাচল করে।

বুমথাং উপত্যকা: ভুটানিদের কাছে ধর্মীয় দিক থেকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ জায়গা এটি। প্রায় ২ হাজার ৬০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত বুমথামে অনেক পুরোনো বৌদ্ধমন্দির আছে।

পর্যটকদের, বিশেষ করে বিদেশি পর্যটকদের কাছে খুব প্রিয় এক গন্তব্য এটি। এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মুগ্ধ করে তাঁদের। পুনাখা থেকে বুমথাং যাওয়ার পথে খাড়া পাহাড়ের ওপর মেঘের রাজ্যে ট্রংসা জংও পর্যটকদের কাছে বড় আকর্ষণ। ওই পথেই বেশ কয়েকটি ঝর্ণাও চোখে পড়ে। এগুলোর জল অবশ্য শীতে জমে বরফ হয়ে থাকে। প্রচুর আপেল বাগানেরও দেখা মেলে এই উপত্যকায়। অনেক পর্যটকই একে আদর করে ডাকেন ‘পুবের সুইজারল্যান্ড’। নানা ধরনের উৎসবের জন্যও বিখ্যাত জায়গাটি।

হা ভ্যালি: হা ভ্যালি বা হা উপত্যকা ইদানীং ভুটানে বেড়াতে আসা পর্যটকদের খুব প্রিয় এক গন্তব্যে পরিণত হয়েছে। উপত্যকাটি বিখ্যাত এখানকার অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য। এর পাশাপাশি দৃষ্টিনন্দন কয়েকটি দুর্গ ও বৌদ্ধমন্দির আছে। এগুলোর মধ্যে অন্যতম লাখাং কারপো (সাদা মন্দির) ও লাখাং নাগপো (কালো মন্দির), ১০০ বছরের পুরোনো মন্দির তাগচু গোয়েম্বা। দবিজ জং নামে পাহাড়চূড়ার পাঁচতলা দুর্গটিও এখানকার বিখ্যাত গন্তব্যগুলোর একটি। পারো থেকে দূরত্ব বেশি না হওয়ায় অনায়াসে সেখানে একটি কিংবা দুটি দিন কাটাতে পারেন।

ফুন্টসলিং: বিশেষ করে যেসব বাংলাদেশি পর্যটক ভারত হয়ে ভুটানে ঢোকেন, তাঁদের কাছে বেশ পরিচিত ফুন্টসলিং। ছোট্ট এই শহরে আছে কুমির প্রজননকেন্দ্র, ভুটান গেট, মনাস্ট্রি। ফুন্টসলিংয়ের উঁচুনিচু রাস্তা ধরে হেঁটে বেড়ানোর মজাই আলাদা। রাস্তার পাশেই ছোট-বড় শপিংমল, হোটেল-রেস্তোরাঁ, বাহারি ফুলের দোকান পাবেন। বাজারে আশপাশের পাহাড়ে উৎপাদিত নানা ফল পাবেন। মোটের ওপর নীরব, শান্তিময় প্রাকৃতিক পরিবেশে যাঁরা দুটি দিন কাটাতে চান, তাঁরা ভুটান ভ্রমণের সময় শহরটির জন্য দুটি দিন রাখতে পারেন।

ওয়াংদুয়ে ফোদরাং: ভুটানের আর একটি বিখ্যাত গন্তব্য। পুনাখার দক্ষিণে অবস্থিত ওয়াংদুয়ে ফোদরাং সেন্ট্রাল হাইওয়ে ধরে মধ্য ভুটানে পৌঁছার আগে সর্বশেষ শহর। ওয়াংদুয়ে ফোদরাং উপত্যকার ওপরের অংশ পশু চারণভূমি হিসেবে খুব বিখ্যাত। বাঁশের নানা সামগ্রী এবং স্লেট ও নানান পাথর কুঁদে তৈরি বিভিন্ন জিনিসের জন্যও আলাদা নাম আছে জায়গাটির।

পুনাখা চু ও তাং চু নদীর সংযোগস্থলে এক পাহাড়ের ওপর অবস্থিত ওয়াংদুয়ে ফোদরাং জংও আকৃষ্ট করে পর্যটকদের।

সূত্র. হিমালয়ান গ্লেসিয়ার. কম, থ্রিলো ফিলিয়া ডট কম, উইকিপিডিয়া

ইউকে/এসএম