‘নদীদূষণ ও দখল বন্ধ না করলে মারাত্মক পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখে পড়বে বাংলাদেশ’

নিজস্ব প্রতিবেদক: দূষণ ও দখলের কবলে পড়ে দেশের নদীগুলোর বিবর্ণদশা ধারণ করেছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, প্রভাবশালী ব্যক্তি, শিল্পকারখানার মালিকরা নদীর জমি দখল করে আছে। জীবন্ত সত্বা এই নদীগুলোকে বাঁচাতে হবে। না হলে চরম প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখে পড়বে বাংলাদেশ।

রাজশাহীতে বিভাগীয় নদী সংরক্ষণ বিষয়ক এক কর্মশালায় উদ্বেগজনক এই তথ্য জানানো হয়েছে। রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রাজশাহীর হোটেল ওয়ারিসনে দিনব্যাপী এই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) এই বিভাগীয় কর্মশালার আয়োজন করে।

কর্মশালার শুরুতে বেলার উত্তরাঞ্চলের সমন্বয়ক তন্ময় কুমায় স্যান্নাল উত্তরাঞ্চলের নদী দূষণ ও দখলের পরিসংখ্যান ও বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরেন। সেখানে তিনি বড়াল, করতোয়া নদীর দখলের বিস্তারিত চিত্র উপস্থাপন করেন।

কর্মশালায় দুইটি গ্রুপ ‘রাজশাহী’ এবং ‘পাবনা’ নদী সংরক্ষণে সমস্যা, উত্তরণের উপায় এবং নদী আন্দোলনের কৌশলগুলো তুলে ধরেন।

রাজশাহীর নদী দখল এবং দূষণের কারণগুলো তুলে ধরেন দৈনিক ইত্তেফাকের আত্রাই প্রতিনিধি ফরিদুল আলম পিন্টু। তিনি উল্লেখ করেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড, এলজিডি, বিজিডি, রাজশাহী সিটি করপোরেশন, পুলিশ একাডেমি, যমুনা ডিস্টিলারি, প্রাণ চিনিকল, ট্যানারি প্রকল্প এবং  প্রভাবশালী ব্যক্তি নদীর জমি দখল করছে। নদী সংরক্ষণের বিষয়ে কিছু সুপারিশ তুলে ধরেন তিনি। সেগুলো হলো- নদী প্রবাহকে বন্ধ করা যাবে না। উন্নয়নের নামে নদী ধ্বংস করা যাবে না। সিএস এবং আরএস অনুযায়ী নদীর সীমানা নির্ধারণ করতে হবে। নদী সুরক্ষা আইন এবং হাইকোর্টের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে হবে। রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে এজন্য চাপ সৃষ্টি করতে হবে। স্থানীয় সরকারকে সম্পৃক্ত করা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া নদী কমিশনকে যুগোপযোগী করে শক্তিশালি করার সুপারিশ করা হয় আজকের এই কর্মশালায়।

কর্মশালার বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনায় অংশ নেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আ ন ম ওয়াহিদ, বড়াল নদী রক্ষা কমিটির সদস্য সচিব এস এম মিজানুর রহমান, নদী গবেষক অধ্যপক তুহিন ওয়াদুদ।

আলোচনায় বক্তারা বলেন, আমরা নদীকে ভালোবেসে প্রকৃতি প্রেম থেকে নদী আন্দোলন করছি। নদীগুলো দখলের তালিকায় সরকারি এবং বেসরকারি  প্রতিষ্ঠানই বেশি দেখা যায়। কিছু জমি রেকর্ডও হয়ে গেছে। সেগুলো আমলাদের মাধ্যমেই মুক্ত করতে হবে। নদী ভিত্তিক আমলাতন্ত হচ্ছে তারা কোন কাজে না বলবে না কিন্তু কোন কাজও করবেও না। এটা আমাদের বুদ্ধি দিয়ে, প্রশাসনকে চাপ দিয়ে কাজটি আদায় করতে হবে।

কর্মশালাটি পরিচালনা করেন বেলার প্রধান নির্বাহী সৈয়দ রিজওয়ানা হাসান। কর্মশালায় দেশের বিভিন্ন বিভাগীয় পর্যায় থেকে বেলার সদস্যরা অংশগ্রহণ করেন।

ইউকে/এএস