বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) দর্শন বিভাগের উদ্যোগে প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হকের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে বুধবার (১৫ নভেম্বর) সকালে রাবি গ্রন্থাগার চত্বরে তার সমাধিতে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এরপর দর্শন বিভাগের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। সকাল সাড়ে ১০টায় শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনে স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়।
দর্শন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক নিলুফার আহমেদের সভাপতিত্বে এ স্মরণসভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক অবায়দুর রহমান প্রামাণিক। আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন বঙ্গবন্ধু চেয়ার অধ্যাপক সনৎকুমার সাহা এবং মুখ্য আলোচক ছিলেন বাংলা বিভাগের সাবেক অধ্যাপক চৌধুরী জুলফিকার মতিন।
মুখ্য আলোচকের বক্তব্যে কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হকের জীবনদর্শনের ওপর স্মৃতিচারণ করেন চৌধুরী জুলফিকার মতিন।
এ সময় তিনি কথাসাহিত্যিকের সাহিত্য, সংগ্রাম ও সমাজ চেতনার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।
অধ্যাপক সনৎকুমার সাহা বলেন, হাসান আজিজুল হক ছিলেন বাংলা সাহিত্যের প্রেরণা। আগুন পাখি ছিল তার শ্রেষ্ঠ কৃতিত্ব। বাংলা সাহিত্যে তার অবদান অনন্য। তিনি ছিলেন অসাম্প্রদায়িক চেতনার এক বিমূর্ত প্রতীক। তার অনুপস্থিতি সাহিত্যমনা মানুষের জন্য খুবই বেদনার৷ শুধু সাহিত্য নয়, একজন প্রগতিশীল, অসাম্প্রদায়িক ও সমাজ সংস্কারক হিসেবে তিনি ছিলেন অনুকরণীয়। শোষিত মানুষের পক্ষে ছিল তার সংগ্রাম। তার আদর্শ আমাদের সর্বদা অনুপ্রাণিত করবে।
উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মো. সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, হাসান আজিজুল হক ছিলেন সমাজ ও রাজনীতি সচেতন। তিনি মানুষের অধিকারের কথা বলতেন এবং শোষিতের পক্ষে ছিল তার দৃঢ় অবস্থান। তিনি প্রায় সারাটি জীবনই অসাম্প্রদায়িক চেতনার জয়গান করেছেন এবং লেখনির মাধ্যমে তা প্রকাশ করেছেন। সাংস্কৃতিক অঙ্গণেও ছিল তার অবদান। তিনি আমাদের জাতীয় শিক্ষকতুল্য। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন একজন মানুষ পাওয়া গর্বের বিষয়। মহান এ মানুষের চেতনা ও আদর্শচর্চার জন্য তিনি আহ্বান জানান।
রাবি দর্শন বিভাগের শিক্ষক তাসনিম নাজিরা রিদার সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন দর্শন বিভাগের সাবেক অধ্যাপক মহেন্দ্রনাথ অধিকারী, অধ্যাপক শামীমা আক্তার, অধ্যাপক আলতাফ হোসেন (২) ও হাসান আজিজুল হকের পুত্রবধু বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সুলতানা রাজিয়া।
এ সময় হাসান আজিজুল হকের ছেলে রাবি প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ইমতিয়াজ হাসানসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
ইউকে/আরএ/এএস