রাজশাহীতে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি, সূর্যের দেখা নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঘূর্ণিঝড় মিগজাউম পরবর্তী প্রভাবে রাজশাহীতে দুইদিন ধরে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টিপাত চলছেই। গতকাল বুধবার (০৬ ডিসেম্বর) ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত আকাশ মেঘলা থাকার পর বিকেল থেকে শুরু হয় বৃষ্টি। সেই থেকে বৃষ্টিপাত চলছেই। তাই সূর্যের মুখ দেখা যায়নি আজও। হেমন্তের এই লাগাতার বর্ষণে রাজশাহীতে নেমেছে শীত।
এই হালকা বৃষ্টিপাত ফসলের জন্য খুবই উপকারী হওয়ায় কৃষকের মুখেও ফুটেছে হাসি। কৃষি অধিদপ্তরের মতে- এই অঞ্চলে দীর্ঘ খরা ও বৃষ্টিহীন মৌসুমের পর প্রকৃতি যখন রুক্ষ হয়ে ওঠে তখন হালকা বর্ষণ ফসলের জন্য উপকার বয়ে নিয়ে আসে। আর বুধবার বিকেল থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টিপাত চলছেই। কখনও গুঁড়িগুঁড়ি আবার কখনও মাঝারি বর্ষণ হচ্ছে মহানগরীসহ পুরো রাজশাহী অঞ্চলে। সঙ্গে বইছে ঠাণ্ডা বাতাস। বুধবার বিকেল ৫টা ১০ মিনিট থেকে বৃহস্পতিবার (০৭ ডিসেম্বর) বেলা ১১টা পর্যন্ত রাজশাহীতে ১১ দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছে- রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার। বৃষ্টিপাতের কারণে নেমেছে দিনের তাপমাত্রাও।

এদিকে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকায় রাজশাহী মহানগরীতে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত সূর্যের দেখা মেলেনি। ভোরে সূর্যোদয়ের পর প্রথমে কুয়াশায় ঢেকে যায় প্রকৃতি।

এরপর আকাশ কালো মেঘে ঢেকে যায় আবারও। সেই সঙ্গে থেমে থেমে ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টি তো চলছেই। দুই দিনের টানা বৃষ্টিপাতের কারণে দুর্ভোগে পড়েছেন শহরের সাধারণ মানুষ। চলমান অবরোধের মধ্যে রুটিরুজির তাগিদে রাস্তায় বের হলেও যানবাহন কম থাকায় গন্তব্যে পৌঁছাতে দীর্ঘ সময় সড়কে অপেক্ষা করতে হয় অনেককেই।

এছাড়া লাগাতার বৃষ্টিপাতে এরই মধ্যে রাজশাহী মহানগরীর অনেক নীচু রাস্তা জলমগ্ন হয়ে গেছে। এতে পথচারীদের দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। বিঘ্ন ঘটছে হালকা যানবাহন চলাচলে। বৃষ্টির কারণে দুপুরের পর প্রধান সড়কগুলোতে যানবাহন চলাচল কমেছে।

রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক লতিফা হেলেন জানান, বুধবার বিকেল ৫টা ১০ মিনিট থেকে বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। এরপর থেকে থেমে থেমে বৃষ্টিপাত চলছেই। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা পর্যন্ত ১১ দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে রাজশাহীতে। আর বৃষ্টির কারণে নেমেছে শীতও। গতকাল বুধবার থেকেই তাপমাত্রা কমায় শীত অনুভূত হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, গতকাল বুধবার রাজশাহীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ২৫ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ২০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজশাহীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৯ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া ভোর ৬টায় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১০০ শতাংশ।

এছাড়া ঘূর্ণিঝড় মিগজাউম পরবর্তী প্রভাবে দেশের সব বিভাগের মতো রাজশাহী বিভাগেও বৃষ্টিপাত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন, রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, এই অবস্থা কেটে গেলেই শীত জেঁকে বসবে রাজশাহী অঞ্চলে। প্রতি বছর সাধারণত ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই শীত পড়তে শুরু করে। কিন্তু এবার তেমনটি হয়নি। মূলত মিগজাউমের কারণে শীত একটু দেরিতে আসছে। তাই এর প্রভাব কেটে গেলেই তাপমাত্রা নামা শুরু হবে, বাড়বে শীত।

আর বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে- রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী বর্ষণ হতে পারে। এ সময় সারাদেশে রাতের এবং দিনের তাপমাত্রা ২ থেকে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত কমতে পারে বলেও আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে।

ইউকে/এএস/আরএ