বার্তাকক্ষ প্রতিবেদন: ভারত রপ্তানি বন্ধ করার পর দেশের বাজারে হু হু করে বাড়ছে সব ধরনের পেঁয়াজের দাম। দুই দিনের ব্যবধানে রাজধানীর বাজারগুলোতে প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় এই পণ্যটির দাম। পেঁয়াজের এমন অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধিতে দিশেহারা অবস্থার মধ্যে পড়েছেন সাধারণ ক্রেতারা। পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির জন্য ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট ও সরকারের তদারকির অভাবকে দায়ী করছেন তারা।
রোববার (১০ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা যায়, বর্তমানে প্রতি কেজি আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ পাইকারি বাজারে ১৮০ টাকা ও খুচরা বাজারে ২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অথচ দুই দিন আগেও একই বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজ ১০০-১১০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছিল। অর্থাৎ, দুই দিনের ব্যবধানে এই পেঁয়াজের দাম প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে।
এছাড়া বর্তমানে দেশি ফরিদপুরের পুরান পেঁয়াজ প্রতি কেজি ১৯৬ টাকা ও নতুন পেঁয়াজ ১৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। পাবনার পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা দরে। আর চীন থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা দরে। খুচরা বাজারে দেশি পেঁয়াজ আরো বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।
পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির জন্য ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করাকে দুষছেন বিক্রেতারা। শামীম নামের এক পাইাকারি বিক্রেতা বলেন, ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করায় দেশের বাজারে পেঁয়াজের টান পড়েছে যার কারণে দাম ক্ষণে ক্ষণে বাড়ছে। কারওয়ান বাজারে ব্যবসায়ীদের কোনো সিন্ডিকেট নেই জানিয়ে তিনি আরো বলেন, ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানি শুরু হলে দাম আবার কমে যাবে।
তবে বাজার ঘুরে দেখা যায়, ভারতের পেয়াজ রপ্তানি বন্ধ ঘোষণার পর অনেক ব্যবসায়ী আগে থেকে কিনে রাখা পেঁয়াজও বেশি দাম বিক্রি করছেন। অনেকে ১৬০ টাকা করে কিনে রাখা পেঁয়াজ ১৮০-২০০ টাকায় বিক্রি করছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মঞ্জুর আলী নামের এক বিক্রেতা বলেন, আমদানিকারকরা যারা আগে পেঁয়াজ কিনে রেখেছিল, তারা এখন বেশি দামে বিক্রি করছে। আমরা যে দামে কিনি সেই দামেই বিক্রি করছি। আমরা বেশি দামে বিক্রি করছি না। বরং আমাদের এক মণ পেঁয়াজ কিনলে দুই কেজি পেঁয়াজ পঁচে যাওয়া৷ কারণে ফেলে দিতে হয়।
তবে এই বিক্রেতাকেই ১৬০ টাকা করে কেনা পেঁয়াজ ১৮০ টাকা করে বিক্রি করতে দেখা যায়। দেশি পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে মো. আরমান আলী নামের এক বিক্রেতা বলেন, দেশি পেঁয়াজ দিয়ে বাজারের চাহিদা মিটে না। তাই ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানি শুরুর আগে পেঁয়াজের দাম আগে কমবে না। বরং আরো বাড়তে পারে।
এদিকে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির জন্য ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট ও সরকারের তদারকির অভাবকেই দুষছেন ক্রেতারা। দেলোয়ার হোসেন নামের এক ক্রেতা বলেন, পেঁয়াজের দাম ৪০-৫০ টাকা হওয়া উচিত। সপ্তাহ খানেক আগেও ৮০ টাকা করে কিনলাম। কিন্তু এখন দাম ২০০ টাকা। তারপরও আমাদের না খেয়ে উপায় নেই।
আবু জাফর নামের আরেক ক্রেতা বলেন, এটা অস্বাভাবিক। এটা সাধারণ ক্রেতাদের জন্য অসহনীয়। ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে দাম বাড়াচ্ছে। এতে সরকারের ব্যর্থতা আছে।
মো. জাহাঙ্গীর আলম নামের আরেক ক্রেতা বলেন, এটা ব্যবসায়ীদের কারসাজি ছাড়া আর কিছুই না। নইলে এক লাফে পেঁয়াজের দাম এত বাড়ার কথা না। আমি ৭০-৮০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ খেতে চাই।
গত শুক্রবার থেকে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করেছে ভারতে। এরপর থেকেই দেশের বাজারে বাড়ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় এই পণ্যটির দাম।
ইউকে/এএস/আরএ