নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে করোনা ইউনিটে ২৪ ঘণ্টায় আজও ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (২১ জুন) সকাল ৮টা থেকে মঙ্গলবার (২২ জুন ) সকাল ৮টা পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ের মধ্যে তারা মারা যান।
রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী জানান, মৃত ১৩ জনের মধ্যে পাঁচজন করোনা পজিটিভ ছিলেন। আর আটজন ভর্তি ছিলেন করোনার উপসর্গ নিয়ে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়েছে। আর মৃতদের মধ্যে ১২ জনই রাজশাহী জেলার। আর একজন নাটোরের। আজই প্রথম চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার কারও মৃত্যু হয়নি।
এ নিয়ে চলতি মাসের ২২ দিনে (১ জুন সকাল ৮টা থেকে ২২ জুন সকাল ৮টা পর্যন্ত) এ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মারা গেলেন ২২৮ জন।
রামেক হাসপাতাল পরিচালক শামীম ইয়াজদানী আরও জানান, গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৫৬ জন। সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত এ হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৩৯৩ জন। এরমধ্যে রাজশাহীতে ২৫৪ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৬১ জন, নাটোরের ৩৩ জন, নওগাঁর ৩০ জন, পাবনার ৭, কুষ্টিয়ার ৫ জন এবং চুয়াডাঙ্গার ১জন এবং অন্যান্য ২ জন রয়েছেন। আগের দিন ভর্তি ছিলেন ৪০২ জন। অথচ রামেক হাসপাতালে করোনা ডেডিকেটেড শয্যার সংখ্যা ৩০৯টি।
এদিকে, ভারত সীমান্তবর্তী জেলা রাজশাহীতে গত ১১ জুন থেকে চলছে ‘বিশেষ লকডাউন’। রাজশাহীর সাথে গোটা দেশের যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। এরপরও করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসছে না। রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে প্রতিদিনই গড়ে ১২/১৩ জনের মৃত্যু হচ্ছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে। অনেকেই হাসপাতালের আসার পর ভর্তি হতে পারছেন না। আবার অনেকে ভর্তি হলেও অক্সিজেন সংকটের কারণে মৃত্যুবরণ করছেন বলে অভিযোগ করছেন রোগীর স্বজনরা।
তবে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী দাবি করেছেন- হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সরা করোনা রোগীদের সেবায় যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তবে রোগীর চাপ বাড়ছেই। তাই বাড়তি রোগীর চাপ সামলাতে অনেক সময় হিমশিম খেতে হচ্ছে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে করোনা রোগীদের জায়গা দেওয়া সম্ভব না হওয়ায় হাসপাতালের আরও একটি সাধারণ ওয়ার্ডকে কোভিড ওয়ার্ডে রূপান্তর করার কাজ চলছে। করোনা রোগীদের জন্য হাসপাতালের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডটিতে এখন অক্সিজেন সরবরাহ লাইনের কাজ চলছে। কাজ শেষ হলে সেখানেও করোনা রোগীদের ভর্তি নেওয়া হবে। তখন পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হবে বলেও জানান- হাসপাতাল পরিচালক।
ইউকে/এসই/এসএম