নিজস্ব প্রতিবেদক: করোনা ভাইরাসের ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ ঠেকাতে উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা রাজশাহীতে ‘বিশেষ লকডাউনের’ মেয়াদ তৃতীয় দফায় এক সপ্তাহ বাড়ানো হয়েছে। বুধবার (২৩ জুন) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে রাজশাহী জেলা প্রশাসক মো. আব্দুল জলিল এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।
অর্থাৎ রাজশাহীতে ১১ জুন থেকে চলমান কঠোর লকডাউন এবার ৩০ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত গড়ালো। এর আগে গত ১৬ জুন রাতে রাজশাহী সার্কিট হাউসে জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভায় দ্বিতীয় দফায় আরও এক সপ্তাহের কঠোর লকডাউনের ঘোষণা দেওয়া হয়। দ্বিতীয় দফার লকডাউন শেষ হবে ২৪ জুন মধ্য রাতে।
এর পর থেকে তৃতীয় দফায় আরও এক সপ্তাহের কঠোর লকডাউন চলবে ৩০ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত। তবে এবারের লকডাউনে রাজশাহী শহরের সাথে কোনো উপজেলার যোগাযোগ থাকবে না বলে জানানো হয়েছে। কেউ উপজেলা থেকে শহরে প্রবেশ করতে পারবে না। আবার শহর থেকে কেউ উপজেলা পর্যায়ে প্রবেশ করতে পারবে না বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক।
এর আগে গত ১০ জুন রাতে রাজশাহী সার্কিট হাউসে অনুষ্ঠিত জরুরি বৈঠক থেকে প্রথম দফায় ১১ জুন বিকেল ৫টা থেকে রাজশাহী শহরে বিশেষ লকডাউনের আদলে কঠোর বিধিনিষেধ জারি করে জেলা প্রশাসন।
বিশেষ লকডাউন আরও এক সপ্তাহ বাড়ানো প্রশ্নে রাজশাহী জেলা প্রশাসক আবদুল জলিল বলেন, রাজশাহীতে কয়েক দিনের ব্যবধানে ফের সংক্রমণের হার বেড়েছে। আর মৃত্যুও কমছে না। এ কারণে লকডাউন বাড়ানো হয়েছে।
জেলা প্রশাসক আরও বলেন, রাজশাহীতে প্রথমে সন্ধ্যা ৭টা থেকে পরদিন সকাল পর্যন্ত বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। তারপর গত ২ জুন আরও দুই ঘণ্টা এগিয়ে বিকেল ৫টা থেকেই বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। এই ক’দিন আমরা পর্যবেক্ষণ করছিলাম। কোথাও করোনার নিম্নমুখী সংক্রমণ, কোথাও ঊর্ধ্বমুখী। কিন্তু ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণই বেশি।
তাই গত ১১ জুন বিকেল ৫টা থেকে ১৭ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত রাজশাহী শহরে প্রথম দফায় সর্বাত্মক লকডাউনের সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সংক্রমণ কমার হার এখনও সন্তোষজনক নয়। এই কারণে বিশেষ লকডাউনের মেয়াদ তৃতীয় দফায় আরেক সপ্তাহের জন্য বাড়ানো হলো। মহানগরের বাইরে পুরো জেলাও কঠোর বিধিনিষেধের আওতায় থাকবে। উপজেলার সাথেও রাজশাহী শহরের সব রকম যোগাযোগ বন্ধ থাকবে।
রাজশাহী জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল জানান, লকডাউনের সময় সব ধরনের ব্যবসায়িক দোকানপাট ও যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর ও নওগাঁসহ আশপাশের অন্য কোনো জেলা থেকে যানবাহন প্রবেশ করতে পারবে না, রাজশাহী থেকেও কোনো যানবাহন জেলার বাইরে যেতে পারবে না।
রাজশাহী থেকে ঢাকাসহ সব দূরপাল্লার রুটের যানবাহন ও ট্রেন চলাচল আগের মতোই বন্ধ থাকবে। তবে রোগী, খাদ্য, ওষুধ ও পণ্যবাহী পরিবহন, সংবাদমাধ্যাম এবং মৃতদেহ দাফন ও সৎকার কাজে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিসহ অন্য সব জরুরি সেবাদানকারীর ক্ষেত্রে জারিকৃত এই নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে না। আমের বাজারগুলো বড় পরিসরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসবে। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাজার পরিচালনা করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সভায় রাজশাহী রাজশাহীর রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) আবু আসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) নজরুল ইসলাম, রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মুহাম্মদ শরিফুল হকসহ জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের শীর্ষ কর্তাব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
ইউকে/এসই/এসএম