চাঁপাইনবাবগঞ্জ সংবাদদাতা :
ফলের রাজা আম, আমের রাজা ল্যাংড়া। গত তিন বছরে ল্যাংড়ার দাম ছিল ৪৫-৫৫ টাকা কেজি পর্যন্ত।
কিন্তু চলতি মৌসুমে একই আমের দাম ২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন খুচরা পাইকারি বিক্রেতারা। এর পরও ৫০ কেজিতে মণ না দিলে আম নিতে চান না আড়তদাররা! বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) দেশের বৃহত্তম কানসাট আম বাজারে গিয়ে এমনই চিত্র দেখা যায়।
খুচরা পাইকারি আম বিক্রেতা শামসুল আলম বলেন, আমের মৌসুমের প্রথমেই যদি বাগানটা বিক্রি করতাম, তবে কিছু হলেও পুঁজি থাকতো। বিপাকে পড়েই কেজি দরে আম বিক্রি করতে হচ্ছে। বাগানে খরচ করার টাকাগুলো উঠানো তো দূরের কথা, যাতায়াত খরচ উঠবে কি-না সন্দেহ। গত বছর ৪৫ কেজিতে মণ ধরে ল্যাংড়া বিক্রি করেছি সর্বনিম্ন ৪৩-৪৫ টাকা কেজি দরে। কিন্তু এবার এই আমের দাম প্রায় অর্ধেকে নেমেছে। ল্যাংড়া ৫০ কেজিতে মণ ধরে ২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে হচ্ছে।
অপরদিকে, চতরার আম বাগান মালিক মোজতাবা আলম বাদল বলেন, এ বছর বাগান ক্রয়-বিক্রয়ে তেমন সাড়া না পেয়ে বুধবার (২৩ জুন) আমার বাগানের ল্যাংড়া আম মাত্র ৬০০ টাকা মণ দরে বিক্রি করেছি। শুধু তাই নয়, আড়তগুলো এবার ৫০ কেজিতে মণ ধরে আম কেনায় এবং হাটের খাজনা ও ভ্যানভাড়া ধরে কিছুই থাকলো না। আর বাগান পরিচর্যা খরচ তো লোকসান রয়েছেই।
আম ব্যবসায়ী জাকির হোসেন বলেন, এ বছর আমের দর নিয়ে জেলার সব ব্যবসায়ী ও চাষিরা হতাশ। করোনার সংক্রমণ বিস্তার রোধে দেশজুড়ে বিধি-নিষেধ আর জেলা ভিত্তিক লকডাউনের কারণেই আমের বাজারে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এমনটা চলতে থাকলে আম চাষে নিরুৎসাহিত হবেন বাগান মালিকরা।
এদিকে, কানসাটের বাজারগুলোতে ক্ষিরসাপাত (হিমসাগর) আমের মণ ১৫০০-১৫৫০ টাকা পর্যন্ত। খুচরা বাজারে আমটির কেজি মাত্র ৩০ টাকা। আম্রপালির মণ ২০০০-২১০০ টাকা, খুচরা বাজারে কেজি প্রায় ৪০ টাকা। লখনার (লক্ষণভোগ) মণ ৯০০-১০০০ টাকা, খুচরা বাজারে কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে ১৫-১৮ টাকায়। বোম্বাই আমের মণ ১১০০ টাকা, বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২২ টাকা কেজি দরে। ফজলির মণও ১১০০-১২০০ টাকা, খুচরা বাজারে কেজি ২০-২৫ টাকায় দরে বিক্রি হচ্ছে।
ইউকে/আরকে/এএস