টিকা নেয়া ৯৩ শতাংশের দেহে এন্টিবডি

বার্তাকক্ষ প্রতিবেদন: অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিড-১৯ টিকা নেওয়ার পর ৯৩ শতাংশ মানুষের শরীরে এন্টিবডির অস্তিত্ব পেয়েছে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের একটি গবেষণা দল। ৩০৮ জনের উপর দীর্ঘ পাঁচমাস গবেষণা করার পর তারা এ ফল পান।

রোববার (২৭ জুন) ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করা হয়।

ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. এস এম সামসুজ্জামান বলেন, জানুয়ারি মাস থেকে চলতি জুন মাস পর্যন্ত আমরা এই গবেষণা চালাই। গবেষণায় ৩০৮ জন শিক্ষক, ডাক্তার ও কর্মচারীর নমুনা নেওয়া হয়। যাদের ৭০ শতাংশ শিক্ষক, ১০ শতাংশ কর্মচারী ও বাকিরা চিকিৎসক। এরা সবাই করোনার চিকিৎসা বা ভ্যাক্সিনেশনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।

‘এদের যারা প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছিলেন তার ৩৫ দিনের মধ্যে প্রথম রক্তের নমুনা নেই। আবার দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার ১৪ দিন পরে আবার নেওয়া হয়। এরপর তা পরীক্ষা করে দেখা যায়, প্রথম ডোজ নেওয়ার পর ৪১ শতাংশের ও দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার পর ৯১ শতাংশের শরীরে এন্টিবডি তৈরি হয়েছে। ’

তিনি বলেন, আমাদের জানা দরকার ছিল এই টিকা আদৌ কাজ করবে কিনা, প্রথম ডোজ দেওয়ার পর কী হবে, দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার পর কী হবে, এন্টিবডি তৈরি হবে কিনা, সেজন্য আমরা এই গবেষণা শুরু করি। জার্মানির কিট দিয়ে মূলত এই গবেষণা চালানো হয়। যার একেকটি নমুনা পরীক্ষা করতেই খরচ হয়েছে ১১শ টাকা। এছাড়া অন্য খরচতো ছিলই। যাদের নিয়ে এই গবেষণা চালানো হয় তাদের বয়স ৩০ বছরের ঊর্ধ্বে ও ৬০ বছরের নিচে। আর ৪০-৫০ বছরের মধ্যেই ছিলেন ৮০ শতাংশ।

গবেষণাটি এখানেই শেষ না বলেও জানান তিনি। আরো গবেষণা করে দেখা হবে কোন গ্রুপের মধ্যে কত শতাংশ এন্টিবডি তৈরি হয় আর এটি কতদিন পর্যন্ত শরীর থাকে।

এই গবেষণার জন্য ৩০৮ জনের নমুনা কম হয়ে গেল কিনা এমন প্রশ্নের জাবাবে তিনি বলেন, আমরা সব মেডিক্যাল কলেজের সব শিক্ষক, ডাক্তারদের এই গবেষণায় অংশ নিতে বলেছিলাম। যারা যারা এসেছে তাদের সবাইকে নিয়েছি।

‘এন্টিবডি তৈরি হওয়া মানেই আবার আক্রান্ত হবে না এমন নয়, আক্রান্ত হতে পারে। মৃদুভাবে, তবে তাদের ভেন্টিলেটরেরে যেতে হবে না। বা মারা যাবে না বলে আশা করা যায়। ’ সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. টিটো মিয়া বলেন, এটি নিয়ে আরো বিশ্লেষণ করতে হবে। আমরা যতগুলো স্যাম্পল নিয়েছি সেটিও কম ছিল না। আমাদের সক্ষমতা আছে, আমরা ফান্ড পেলে আরো বড় বড় গবেষণা করতে পারি।

ঢামেক হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক বলেন, যারা গবেষণা করেছে তাদের ধন্যবাদ জানাই। আশা করি আমাদের এখানেই আরো গবেষণা হবে। পরবর্তী গবেষণাগুলোতেও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আমাদের আরো সহযোগিতা করবে বলে আশা করি।

ইউকে/এসএম