নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে একদিনের ব্যবধানে আবারও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে। গেল ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। রোববার (২৭ জুন) সকাল ৮টা থেকে সোমবার (২৮ জুন) সকাল ৮টার মধ্যে বিভিন্ন সময় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়। এর আগের দিন মৃত্যু হয়েছিল ১০ জনের।
তবে মৃত্যুর সংখা বাড়লেও কমেছে শনাক্তের হার। রোববার (২৭ জুন) ৫৬২ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১৪৯ জনের করোনা পজিটিভ শনাক্ত করা হয়েছে। সংক্রমণের হার রাজশাহীতে ২৭ দশমিক ৮৪ শতাংশ এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জে ১৮ দশমিক ১৮ শতাংশ। এর আগে গত রোববার রাজশাহীর দুটি পিসিআর ল্যাবে ৫৬১টি নমুনা পরীক্ষায় ১৩৪ জনের নমুনায় করোনা পজেটিভ শনাক্ত হয়।
এতে রাজশাহীতে শনাক্তের হার ৩৪ দশমিক ৪৯ শতাংশ থেকে কমে ২৯ দশমিক ০৮ শতাংশ হয়েছিল। এছাড়া পাশের জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জের করোনা শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ৭২ শতাংশ থেকে কমে ১১ দশমিক ৯০ শতাংশে এসেছিল। ফলে করোনা নমুনা পরীক্ষার এই পরিসংখ্যান বলছে- রামেক হাসপাতালে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়লেও ধীরে ধীরে সংক্রমণের চূড়ায় থাকা ভারত সীমান্তবর্তী জেলা রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের করোনার প্রকোপ কমতে শুরু করেছে।
রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী জানান, মৃত ১৪ জনের মধ্যে ৭ জনই করোনা উপসর্গ নিয়ে ভর্তি ছিলেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া ৭ জন রোগী করোনা পজিটিভ হওয়ার পর তাদের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে ৭ জন রাজশাহী জেলার, ৫ জন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার, ১ জন নাটোর জেলার ও ১ জন নওগাঁ জেলার রোগী ছিলেন।
আজকের এ মৃত্যু নিয়ে চলতি মাসের এই ২৮ দিনে (১ জুন সকাল ৮টা থেকে ২৮ জুন সকাল ৮টা পর্যন্ত) রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেলেন ৩১৮ জন।
জানতে চাইলে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার মো. শামীম ইয়াজদানী জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালের করোনা ইউনিটে নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন ৭৮ জন। এরমধ্যে শুধু রাজশাহীরই ৫২ জন ভর্তি হয়েছেন। এছাড়া চাঁপাইনবাবগঞ্জের ১০ জন, নাটোরের ৮ জন, নওগাঁর ৪ জন, পাবনা জেলার ২ জন ও চুয়াডাঙ্গা জেলার ২ জন রয়েছেন।
সব মিলিয়ে সোমবার (২৮ জুন) সকাল ৮টা পর্যন্ত করোনা উপসর্গ ও আক্রান্ত হয়ে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মোট ৪৪২ জন ভর্তি রোগী আছেন। অথচ হাসপাতালে করোনা ডেডিকেটেড শয্যা সংখ্যা ৪০৫টি। গতকাল ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন যুক্ত করে এই ওয়ার্ডটিও কোভিড ওয়ার্ডে রূপান্তর করা হয়েছে। এই ওয়ার্ডের শয্যা সংখ্যা রয়েছে ৪৮টি।
আগে হাসাপাতালের ডেডিকেটেড শয্যা সংখ্যা ছিল ৩৫৭টি। এর সাথে ৪৮টি শয্যা বেড়ে ৪০৫টি দাঁড়ালো। এর পরও ধারণ ক্ষমতার বেশি রোগী বর্তমানে ভর্তি রয়েছেন। ৪০৫ জনকে বেড দেওয়া গেলেও বাকিরা হাসপাতালের মেঝেতে এবং ওয়ার্ডের বারান্দায় শুয়ে কোনোভাবে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
ইউকে/এসএম