বার্তাকক্ষ প্রতিবেদন: সরকার ঘোষিত কঠোর ‘লকডাউনে’র অষ্টম দিনে রাজধানীর সড়কগুলোতে জনসাধারণের বাড়তি চাপ দেখা গেছে। গত কয়েকদিনের তুলনায় সড়কে বেড়েছে ব্যক্তিগত গাড়ি, মোটরসাইকেল ও রিকশা চলাচল।
বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সড়কে সড়কে চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি চালাচ্ছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ছাড়াও সার্বক্ষণিক টহলরত রয়েছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যরা। এরপরেও কোনোভাবেই মানুষের ঘর থেকে বের হওয়া ঠেকানো যাচ্ছে না।
করোনা সংক্রমণ রোধে সরকার নির্দেশিত বিধিনিষেধ অমান্য করে ‘লকডাউনে’র সপ্তম দিন বুধবার (৭ জুলাই) রাজধানীজুড়ে শুধুমাত্র পুলিশের হাতেই গ্রেফতার হন ১১০০ এর বেশি মানুষ। তারপরও অষ্টম দিনে এসে সড়কজুড়ে প্রায় একই পরিস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।
এদিকে বিধিনিষেধের মধ্যেও গার্মেন্টস, আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ জরুরি সেবার অফিস খোলা থাকায় কিংবা কাজের তাগিদে অনেকে বাধ্য হয়েই সড়কে নামছেন বলে জানিয়েছেন জনসাধারণ। কাজে বের হয়েও অনর্থক চেকপেস্টে ভোগান্তির অভিযোগও করেছেন অনেকে।
বেলা ১২টার দিকে ধানমন্ডির সাইন্সল্যাব এলাকায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা শুরু করে র্যাব-২। কিন্তু পথে রিকশা-ব্যক্তিগত গাড়ি ও পথচারীর এতো চাপ রয়েছে, যেখানে সবাইকে চেকপোস্টে থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে বেগ পেতে হচ্ছে দায়িত্বরতদের। তারপরও সাধ্যমতো গাড়ি কিংবা রিকশা থামিয়ে বাইরে বের হওয়ার কারণ জানতে চাচ্ছেন র্যাব সদস্যরা। আশানুরূপ জবাব না পেলে কিংবা স্বাস্থ্যবিধি না মানলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
একটি ওষুধ কোম্পানিতে কর্মরত সৌরভ নামে একজন বলেন, ‘লকডাউনে’ সবকিছু বন্ধ থাকার কথা বললেও মানুষকে কোনোভাবেই আটকানো যাচ্ছে না। কোনো না কোনো অজুহাতে অনেকেই বাইরে বের হচ্ছেন। আর এর মধ্যে আমাদের মতো জরুরি সেবার মানুষদেরও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। দেখা গেছে, একই সড়কের এক পাশে এক বাহিনীর চেকপোস্টে জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হয়ে আরেক পাশে অন্য বাহিনীর জিজ্ঞাসাবাদ।
মোহাম্মদ আলী নামে একজন পণ্য বিপণন কর্মকর্তা বলেন, প্রতিদিনই রেকর্ডসংখ্যক মানুষ মারা যাচ্ছেন। তারপরও বাধ্য হয়ে কাজ বাঁচাতে বাইরে বের হতেই হচ্ছে। ঘরে থাকতে গেলে চাকরি থাকবে না, চাকরি না থাকলে খাব কি? করোনার ভয় থাকলেও জীবনের তাগিদে বাইরে বের হতেই হচ্ছে।
মেরুল বাড্ডা এলাকায় ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়েরর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সোনিয়া হোসেন জিসানের নেতৃত্বে পুলিশ সদস্যদের ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে দেখা গেছে। ওই সড়কেও গত কয়েকদিনের তুলনায় ব্যক্তিগত গাড়ি, মালবাহী গাড়ি, রিকশা ও পথচারীদের উপস্থিতি বেশি লক্ষ্য করা গেছে। ভ্রাম্যমাণ আদালতে বিভিন্ন যানবাহন থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে দেখা গেছে।
ইউকে/এএস