বার্তাকক্ষ প্রতিবেদন: করোনার ক্রমাগত ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ ঠেকাতে সরকার ঘোষিত ‘কঠোর লকডাউনের’ দশম দিনে মানুষের মধ্যে ঢিলেঢালা ভাব দেখা গেছে। জরুরি প্রয়োজনে কিংবা বিভিন্ন অজুহাতে রাস্তায় বের হচ্ছে মানুষ।
শনিবার (১০ জুলাই) রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে বেড়েছে মানুষের চলাচল। ব্যক্তিগত গাড়ির পাশাপাশি সড়কে রিকশা, পণ্যবাহী গাড়ির বাড়তি উপস্থিতি রয়েছে।
প্রায় প্রতিটি ট্রাফিক সিগনালে যানবাহনের দীর্ঘ জটলা দেখা গেছে। একইসঙ্গে রয়েছে পাড়া-মহল্লার অলি-গলিতে জনসাধারণের প্রায় স্বাভাবিক চলাফেরা।
এদিকে মানুষের জরুরি প্রয়োজন ছাড়া রাস্তায় বের হওয়া ঠেকাতে এদিনও সড়কে সড়কে অবস্থান নিয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। পুলিশের পাশপাশি চেকপোস্ট ও টহল অব্যাহত রেখেছে সেনাবাহিনী, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যরা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, উপযুক্ত কারণ ছাড়া রাস্তায় বের হলেই গ্রেফতার বা জরিমানার সম্মুখীন হতে হচ্ছে জনসাধারণের। এরপরেও সড়কে মানুষের চলাচল প্রতি নিয়তই বাড়ছেই।
রাজধানীর বিজয় সরণি থেকে জাহাঙ্গীর গেট গামী সড়কে চেকপোস্ট বসিয়ে চলাচলরত যানবাহন থামিয়ে তল্লাশি চালাচ্ছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ। যান চলাচলের বাড়তি চাপ থাকায় হিমশিম খেতে হচ্ছে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের। বাড়তি চাপের কারণে চলাচলরত সব গাড়িকে থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা সম্ভব হচ্ছিলো না ট্রাফিক বিভাগের সদস্যদের।
চেকপোস্টে দায়িত্বরত এক ট্রাফিক পুলিশের সদস্য বলেন, জরুরি প্রয়োজনে বাড়ি থেকে বের হওয়ার কথা বললেও মানুষ বিভিন্ন অজুহাতে রাস্তায় বের হচ্ছে। চিকিৎসকের অ্যাপয়েনমেন্ট নিতে, টিকার খোঁজ নিতে, অফিসের কাজে কিংবা ব্যাংকে যাওয়ার কথা বলছেন অনেকে।
তিনি বলেন, উপযুক্ত তথ্য-প্রমাণ কেউ না দেখাতে পারলে তাদের জরিমানা করা হচ্ছে ঠিকই। কিন্তু বেশিরভাগ মানুষই রাস্তায় বের হয়ে মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে জরুরি প্রয়োজনের কথা বলছেন। মানুষ নিজে থেকে সচেতন না হলে, এভাবে এলোমেলো চলাফেরা অব্যাহত থাকলে করোনা সংক্রমণ ঠেকানো আরও কষ্টসাধ্য হয়ে পড়বে।
এদিন রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকার অলি-গলিতে প্রায় স্বাভাবিক চিত্র দেখা গেছে। চায়ের দোকানে আড্ডা, স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করেই নিত্যপণ্যের দোকানে ভিড় রয়েছে স্বাভাবিক সময়ের মতোই। ‘লকডাউনের’ প্রথম কয়েকদিন দোকানী কিংবা মানুষের মধ্যে এক ধরনের ভয় কাজ করলেও এদিন তেমনটি দেখা যায়নি।
মোহাম্মদপুরের নূরজাহান রোড এলাকার বাসিন্দা রায়হান আহমেদের হোম অফিসের কারণে ‘লকডাউনের’ শুরু থেকে তিনি বাসায়ই আছেন। চা খেতে বাসার বাইরে বের হওয়া এ চাকরিজীবী বলেন, কতোদিন আর বাসায় বসে থাকা যাবে? প্রয়োজনে রাস্তায় বের হতেই হবে।
তিনি বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে কিছু মানুষ বাসায় বসে থাকবে আর বেশিরভাগ মানুষই বাড়ির বাইরে থাকবে এভাবে করোনা ঠেকানো সম্ভব না। আর যারা বাসায় রয়েছেন তারা কতোদিন বাসায় বসে থাকবে?
ইউকে/এএস