মানিকগঞ্জ সংবাদদাতা: দরজায় কড়া নাড়ছে কোরবানির ঈদ। কিন্তু করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে ‘কঠোর লকডাউন’ থাকায় বিপাকে পড়েছে খামারিরা। কোরবানি জন্য এ জেলায় যে পরিমাণ পশু প্রস্তুত করা হয়েছে তার ১০ শতাংশও এখনো বিক্রি হয়নি। এতে করে বড় ধরনের লোকসানের আশঙ্কা করছে খামারিরা।
দেশে কোরবানির পশুর চাহিদা মেটাতে বড় একটি অংশ এ জেলার উপর কিছুটা নির্ভর করে থাকে। এবারের কোরবারির ঈদকে সামনে রেখে ১০ হাজার ৯২৬টি খামারে উৎপাদন করেছে ৫৫ হাজার ৮৮৮টি পশু। তবে অনেক খামারিই মনে করছে এ বছরের কোরবারির পশু ৩০ শতাংশ বিক্রি হবে আর বাকি ৭০ শতাংশ অবিক্রিত রয়ে যাবে।
জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায়, সাতটি উপজেলায় ষাঁড় গরু প্রস্তুত করা হয়েছে ২৭ হাজার ৫৫৪টি, বলদ প্রস্তুত করা হয়েছে ৯২৮টি, গাভী প্রস্তুত করা হয়েছে ৭ হাজার ৯৮৭টি, মহিষ প্রস্তুত করা হয়েছে ১৩টি এবং ছাগল প্রস্তুত করা হয়েছে ১৬ হাজার ২৮৬টি, ভেড়া প্রস্তুত করা হয়েছে ২ হাজার ৮৩৯টি এছাড়া আরো অন্যান্য পশু প্রস্তুত করা হয়েছে ২৮১টি।
হরিরামপুর এলাকার নূর হোসেন নামে এক খামারি বলেন, লকডাইনের কারণে মনে হচ্ছে না গরু বিক্রি করতে পারবো কারণ হাটগুলোতে যাওয়ার কোনো উপায় নাই। বাড়ি থেকে গরু বিক্রি করবো তাও পারছি না, যে টাকা খরচ করে কোরবানির জন্য গরু তৈরি করেছি তার চেয়ে অনেক কম দাম বলায় এখন চিন্তায় আছি এই গরুগুলোকে নিয়ে।
সাটুরিয়ার এলাকার খামারি জামাল মিয়া বলেন, ‘আমরা সারা বছর ধরে একটি আশায় গরুগুলোকে লালন-পালন করি যে কোরবানির সময় বিক্রি করে কিছু টাকা লাভ করবো। কিন্তু এখন তো দেখি মূল চালানই গায়েবের পথে। আমরা চাই আমাদের বাঁচানোর জন্য হলেও গরুর হাটগুলো খুলে দেক সরকার। ’
মানিকগঞ্জ ডেইরি অ্যাসোসিয়েশন ফার্মের সভাপতি মাহিনুর রহমান বলেন, এ বছর কোরবানির পশুর খামারিরা বড় ধরনের লোকসানের মধ্যে পড়বে কারণ যে টাকা খরচ করে কোরবানির জন্য প্রস্তুত করেছে সেই পরিমাণ দামও উঠছে না পশুগুলোর। সেজন্য আমরা চাই সরকার এই খামারিদের প্রণোদনার আওতায় আনবে নয় তো পশুর খাবারের জন্য ভর্তুকি দিবে। এগুলো না কররে খামারিরা এরপর থেকে এই খামারগুলোকে বাঁচিয়ে রাখতে পারবে না।
মানিকগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার ডাক্তার মাহবুবুল ইসলাম বলেন, আমাদের জেলায় আবহাওয়া ভালো হওয়ায় পশুগুলো প্রাকৃতিকভাবেই সুষম শারিরীক শরীরের অধিকারি হয়ে থাকে। জেলায় অবস্থিত খামারগুলোর খোঁজ খবর রাখছি প্রতিনিয়ত এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছি। করোনার কারণে কিছুটা বিপাকেই পড়েছে খামারিরা সেজন্য আমরা অনলাইনের মাধ্যমে পশু বিক্রি করার ব্যবস্থা হাতে নিয়েছি। এ পর্যন্ত ২৫-৩০টি গরু বিক্রয় হয়েছে, প্রতিটি খামারির গরুর ছবিসহ প্রয়োজনীয় ঠিকানা দিয়ে দিয়েছি এবং ভালোই সাড়া পাচ্ছি বলেও জানান তিনি।
ইউকে/এএস