উগ্র বর্ণবাদী সমর্থকদের জবাব দিলেন রাশফোর্ড

ক্রীড়া বিভাগ: ইউরো ফাইনালের পর ইংলিশ দর্শকদের কুৎসিত বর্ণবাদী চেহারাটা আরও একবার বিশ্ববাসীর সামনে খুলে গেল। ইতালির বিপক্ষে টাইব্রেকারে যে তিনজন পেনাল্টি থেকে গোল করতে ব্যর্থ হয়েছেন, তাদের একজন মার্কাস রাশফোর্ড। এই হারের জন্য কৃষ্ণাঙ্গদের দায়ী করে উগ্র ইংলিশ সমর্থকরা বর্ণবাদের ঝড় তুলেছিল। ম্যানচেস্টারের উইদিংটনে একটি চমৎকার দেয়ালচিত্র ছিল রাশফোর্ডের। সেটার গায়ে কদর্য ভাষায় বর্ণবিদ্বেষী কিছু বার্তা এঁকে দেওয়া হয়েছিল।

কিন্তু যেখানেই কদর্য লোকজন থাকে, তাদের প্রতিরোধে কিছু ভালো মানের মানুষও থাকে। তাই রাশফোর্ডের সেই দেয়ালচিত্রে লেখা বর্ণবাদী কথাগুলো মুছে দিয়েছে শুভ চিন্তার সমর্থকেরা। তার বদলে সেখানে রাশফোর্ডকে ধন্যবাদ দেওয়া হয়েছে। ভালোবাসার বার্তা দিয়ে সে ম্যুরাল রাঙিয়ে দিয়েছেন সেই সমর্থকেরা। এদিকে পেনাল্টি মিস করে রাশফোর্ডের মানসিক অবস্থা এমনিতেই খারাপ। তার ওপর বর্ণবাদী আক্রমণের শিকার হয়ে তিনি ভেঙে পড়েছেন। সোশ্যাল সাইটে জবাবও দিয়েছেন আক্রমণকারীদের।

টুইটারে রাশফোর্ড লিখেন, ‘কোথা থেকে শুরু করব বুঝতে পারছি না। এই মুহূর্তে কী অনুভব করছি, তা কীভাবে শব্দে প্রকাশ করব সেটাও জানি না। আমি মনে করি, এটা স্পষ্ট যে আমি একটি কঠিন মৌসুম কাটিয়েছি। আর ফাইনালে আমি একটু কম আত্মবিশ্বাস নিয়েই নেমেছিলাম। আমরা সব সময়ই পেনাল্টির জন্য এভাবে দৌড়াই, কিন্তু এবার কিছু একটা ঠিক ছিল না। দীর্ঘ এই প্রক্রিয়ায় আমি নিজের জন্য একটু সময় বাঁচিয়েছিলাম এবং দুর্ভাগ্যক্রমে আমি যা চেয়েছিলাম, তা হয়নি।’

তিনি আরও লিখেন, ‘আমার মনে হচ্ছে সতীর্থদের হতাশ করেছি। আমার মনে হচ্ছে, তাদের ডুবিয়েছি। আমি ঘুমের মধ্যেও পেনাল্টি থেকে গোল করতে পারি, সেদিন কেন পারিনি? শট নেওয়ার পর থেকেই আমার মাথায় এটা ঘুরছে। কেমন লাগছে আমার সেটা বোঝানোর কোনো ভাষা নেই। ফাইনাল। ৫৫ বছর। একটা পেনাল্টি। একটা গল্প। আমি শুধু এটুকু বলব, অন্য রকম কিছু হোক, এটাই চেয়েছি। এই ক্ষমা চাওয়ার মধ্যেই আমি আমার সতীর্থদের ধন্যবাদ জানাতে চাই।’

বর্ণবাদী ইস্যু নিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘আমি এমন একটি খেলা খেলি, যেখানে আমি নিজের ব্যাপারে অনেক কিছু পড়ি। আমার গায়ের রং, আমি কীভাবে বড় হয়েছি, কীভাবে আমি মাঠের বাইরে সময় কাটাই- এসব নিয়ে। আমি আমার খেলা নিয়ে সমালোচনা গ্রহণ করি, আমার পারফরম্যান্স ভালো হয়নি, আমার আরও ভালো করা উচিত ছিল। কিন্তু আমি যেমন এবং আমার বেড়ে ওঠার বিষয়ে আমি কখনো ক্ষমা চাইব না। আজ আমি যেসব ইতিবাচক বার্তা পেয়েছি এবং উইদিংটনের মানুষের প্রতিক্রিয়া দেখে আপ্লুত। আমার চোখ ভিজে উঠেছে। এত চমৎকার সব বার্তার জন্য ধন্যবাদ।’

ইউকে/এএস