রাজশাহীতে শেষ মুহূর্তে চড়া মসলার বাজার

নিজস্ব প্রতিবেদক: মঙ্গলবার (২০ জুলাই) দিনগত রাত পোহালেই বুধবার (২১ জুলাই) মুসলমান ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম বড় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদ। তাই শেষ মুহূর্তে বেড়েছে রাজশাহীর বাজারে সবধরনের মসলার দাম।

ঈদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হচ্ছে মসলা। এজন্য আদা, লং, এলাচ ও দারুচিনির দাম চড়া।
তবে, অন্য কাঁচা ও শুকনো মসলার দামে কোনো প্রভাব পড়েনি। বিক্রেতা ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, লং কেজিতে বেড়েছে ২০০ টাকা, এলাচ ও দারুচিনি কেজিতে ৫০ থেকে ১০০ টাকা। আর কাঁচা মসলার বাজারে শুধু আদার দাম বেড়েছে কেজিতে ১০ টাকা।

বিক্রেতারা বলছেন, করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধের কারণে অন্য মসলার বিক্রিতে দাম বাড়েনি- গত দুই দিন থেকে চাহিদা বেশি থাকায় কিছুটা বেড়েছে। কারণ চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম।

আর পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, স্বাভাবিক সময়ে গরম মসলা যে পরিমাণ বিক্রি হয়, কোরবানির ঈদের আগের এক মাস তার থেকে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ বেশি বিক্রি হয়। তবে, এবার ঈদ কেন্দ্রিক বিক্রি আগের চেয়ে কম।

তারা বলছেন, এখন করোনা ভাইরাসের প্রকোপ গ্রামাঞ্চলেও বড় আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে বিধিনিষেধ আরোপ ছিলো। যে কারণে দোকান খুব বেশি সময় খোলা রাখা যায়নি। যা বেড়েছে লকডাউন শিথিলের পরই বেড়েছে।

এদিকে, রাজশাহী মহানগরীর মসলার বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, খুচরা পর্যায়ে শুকনো মরিচের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। হলুদের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৮০ টাকায়। এ দু’টি পণ্যের দাম সম্প্রতি বাড়েনি বা কমেনি। অন্যদিকে, পেঁয়াজ ৪৬ টাকা, রসুন ৮০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৪০ টাকা, আদা ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। শুকনো মসলার বাজারে এলাচ বিক্রি হচ্ছে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকায়, দারুচিনি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায়, লং এক হাজার ৪০০ টাকা, জিরা ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায়, জায়ফল ৫০০ টাকা, মূহরি ২০০ টাকা, কালোজিরা ৪৫০ টাকা, মেথি ২৫০ টাকা।

রাজশাহী মহানগরীর সাহেববাজারের সবচেয়ে বড় মসলার পাইকারি দোকান সুমন ট্রেডার্স। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, তাদের নির্ধারিত দামের তালিকা দেওয়া আছে, জিরা কেজি প্রতি ২৮০ টাকা, ছোট এলাচ ২ হাজার ৪০০ টাকা, দারুচিনি ৩৩০ টাকা, লবঙ্গ এক হাজার টাকা কেজি, গোলমরিচ ৫০০ টাকা কেজি, বড় এলাচ ৬৫০ টাকা, ধনিয়া ১০০ টাকা কেজি, মহরি ১২৫ টাকা, কালোজিরা ২৪০ টাকা, মেথি ১১০ টাকা, তেজপাতা ৭০ টাকা।

দোকানের সেলসম্যান জহুরুল জানান, পাইকারিভাবে মসলার দাম সেইভাবে বাড়েনি। তবে খুচরা ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন দামে বিক্রি করে।

খুচরা বিক্রেতার দোকান রয়েল স্টোরে গিয়ে দেখা যায় মসলা নেওয়ার জন্য উপচেপড়া ভিড়। ক্রেতা-বিক্রেতারা কথা বলার ফুরসত নেই। বিক্রেতাদের দাবি, শুধু দুই তিনটি মসলার দাম অল্প কিছুটা বেড়েছে। বাকিগুলো আগের দামেই বিক্রি করছেন তারা।

বিলকিস আরা নামে এক ক্রেতা জানান, কোরবানির মৌসুমে প্রয়োজনীয় কয়েকটি মসলার দাম বেড়েছে। বিশেষ করে এলাচ, লং ও দারুচিনির দাম একটু বেশি, বাকিগুলো আগেও দামেই কিনেছেন। তিনি আরও বলেন, অন্য বছরের মতো রাতারাতি দাম না বাড়লেও তুলনামূলকভাবে মসলার দাম বেড়েছে।

ইউকে/এএস