ক্রীড়া বিভাগ: পাঁচ বছর পর ক্যারিয়ারের তৃতীয় ওয়ানডে খেলতে নেমেছেন নুরুল হাসান সোহান। মেহেদি মিরাজ চোটে না পড়লে হয়তো আজও তার একাদশে সুযোগ হতো না। তামিম ইকবাল দারুণ সেঞ্চুরি করে পথ পরিস্কার করে রেখেছিলেন। মিডল অর্ডারে নেমে মিঠুন-আফিফদের নিয়ে ফিনিশিং দিলেন সোহান আর আফিফ। শেষের দিকে এই দুজনের দারুণ ব্যাটিংয়ে ১২ বল বাকি রেখেই বাংলাদেশ জয় পেল ৫ উইকেটে। তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ হলো জিম্বাবুয়ে।
সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডেতে জিম্বাবুয়ের দেওয়া বড় টার্গেট তাড়ায় বাংলাদেশকে ভালো শুরু এনে দেন তামিম ইকবাল এবং লিটন দাস। তাদের সাবলীল ব্যাটিংয়ে ৪৮ বলেই পঞ্চাশ ছুঁয়ে ফেলে টাইগারদের ইনিংস। ৫৯ বলে পঞ্চাশ পূরণ করেন তামিম ইকবাল। এক পর্যায়ে মনে হচ্ছিল ওপেনিং জুটি তিন অংক ছুঁয়ে ফেলবে। তবে দলীয় ৮৮ রানে মাধভেরের বলে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন লিটন দাস (৩২)। উইকেটে আসেন সাকিব। লিটনের আউটেও রানের গতি কমেনি। এই জুটির অবসান হয় ৫৯ রানে। লুক জঙ্গুইয়ের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন সাকিব (৩০)।
তামিম ইকবাল খেলছিলেন দারুণ। রীতিমতো ব্যাট চালিয়ে। ৩০তম ওভারের প্রথম বলে টেন্ডাই চাতারাকে বাউন্ডারি মেরে তিনি পৌঁছে যান কাঙ্ক্ষিত ম্যাজিক ফিগারে। ক্যারিয়ারের ১৪ নম্বর সেঞ্চুরি করতে তামিম সময় নেন মাত্র ৮৭ বল। হাঁকান ৭টি চার এবং ৩টি ছক্কা। মিঠুনের সঙ্গে জুটি যখন জমে উঠেছে; তখনই ছন্দপতন। ডোনাল্ড ত্রিপানোর করা ৩৫তম ওভারের পরপর দুই বলে ফিরে যান সেঞ্চুরিয়ান তামিম ইকবাল এবং বিপদের ত্রাতা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। প্রথম বলটিতে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন ৯৭ বলে ৮ চার ৩ ছক্কায় ১১২ রান করা তামিম ইকবাল। পরের বলেই সেই উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েই ‘গোল্ডেন ডাক’ মারেন মাহমুদউল্লাহ।
দল যখন জয়ের কাছাকাছি চলে এসেছে, পঞ্চম উইকেটে জুটিও দাঁড়িয়ে গেছে; তখন বেমক্কা শট খেলতে গিয়ে উইকেট বিসর্জন দিলেন মোহাম্মদ মিঠুন (৩০)। মাধভেরের বলে ছক্কা মারতে গিয়ে তিনি লং অফে চাতারার তালুবন্দি হন। এর সঙ্গে ভাঙে ৬৪ রানের পঞ্চম উইকেট জুটি।
তবে চমৎকার ব্যাটিং করছিলেন নুরুল হাসান সোহান। তার নতুন সঙ্গী হয়ে আফিফও খেলছিলেন সাবলীল। এই অল-রাউন্ডারের ব্যাট থেকেই আসে উইনিং শট। লুকি জঙ্গুইয়ের করা ৪৮তম ওভারের শেষ দুই বলে ছক্কা আর চার মেরে বাংলাদেশকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন ১৭ বলে ২৬ রান করা আফিফ। আর সোহান অপরাজিত থাকেন ৩৯ বলে ৬ চারে ৪৫ রানে। ১২ বল হাতে রেখে বাংলাদেশ জয় পায় ৫ উইকেটে।
এর আগে হারারে স্পোর্টস গ্রাউন্ডে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৪৯.৩ ওভারে ২৯৮ রানে অল-আউট হয় জিম্বাবুয়ে। ৩৬ রানে তারা প্রথম উইকেট হারায়। মারুমিকে (৮) বোল্ড করে দেন সাকিব আল হাসান। অধিনায়ক ব্রেন্ডন টেইলর আজও বড় রান করতে পারেননি। ২৮ রান করে মাহমুদউল্লাহর বলে তামিম ইকবালের তালুবন্দি হন। ডিওন মেয়ার্সকেও (৩৪) প্যাভিলিয়নে ফেরত পাঠান মাহমুদউল্লাহ। আরেক ওপেনার চাকাভা একপ্রান্ত আগলে ছিলেন। ছোট ছোট জুটিতে এগিয়ে যেতে থাকে জিম্বাবুয়ে।
তৃতীয় উইকেটে ৭১ রানের জুটি গড়ে বিপদ সামাল দেন চাকাভা এবং মেয়ার্স। মেয়ার্স আউট হওয়ার পর ছোট্ট একটা ধস। ৯১ বলে ৮৪ রান করা চাকাভাকে বোল্ড করে থামান তাসকিন। এরপর ৬ষ্ঠ উইকেটে ১১২ রানের দুর্দান্ত জুটি উপহার দেন সিকান্দার রাজা এবং রায়ান বার্ল। রাজা ৫৪ বলে ৫৭ আর বার্ল ৪৩ বলে ৪টি করে চার-ছক্কায় ৫৯ রানে আউট হন। শেষ তিন ওভারে দ্রুত উইকেট হারতে থাকে জিম্বাবুয়ে। বেদম মার খেয়ে ৮ ওভারে ৮৭ রান দেওয়া সাইফউদ্দিন শেষের দিকে নেন ৩ উইকেট। চোট কাটিয়ে ফেরা মুস্তাফিজ ৯.৩ ওভারে ৫৭ রানে নেন ৩ উইকেট। মাহমুদউল্লাহ নেন ২টি। ৪৯.৩ ওভারে ২৯৮ রানে অল-আউট হয় জিম্বাবুয়ে।
ইউকে/এএস