সাভার সংবাদদাতা: সাভারের হেমায়েতপুরের ট্যানারি পল্লিতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসতে শুরু করেছে কাঁচা চামড়া। বেড়েছে শ্রমিকদের কর্মব্যস্ততা।
তবে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। বেশিরভাগ শ্রমিকের মুখে নেই মাস্ক। কারও সঙ্গে থাকলেও রেখেছেন থুতনির নিচে। নেই সামাজিক দূরত্বের বালাই। এক কথায় স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে উদাসীনতা। অজুহাতের যেন শেষ নেই শ্রমিকদের।
বৃহস্পতিবার (২২ জুলাই) সকালে ট্যানারি পল্লির কয়েকটি ট্যানারিতে গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে।
আরও দেখা গেছে, ঢাকা ও ঢাকার বাইরে বিভিন্ন স্থান থেকে ট্রাকে করে আনা চামড়াগুলো শ্রমিকরা লবণজাত করে ট্যানারির গুদামে সংরক্ষণ করছে।
জানা গেছে, বিসিক শিল্প নগরীর ট্যানারিতে গতকাল বিকেল থেকেই আসতে শুরু করেছে চামড়া। ছোট-বড় মিলিয়ে ১২৫টি ট্যানারিতে এখন আসছে জাতীয় এই সম্পদ। ৮০ লাখ গবাদি পশুর চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে এবারের কোরবানির ঈদে। দেশে প্রতিবছর প্রায় দেড় কোটি গবাদি পশুর চামড়া ক্রয় করা হয়। যার ৮০ ভাগ চামড়াই সংগ্রহ করা হয়ে থাকে কোরবানির ঈদে।
গতকাল বুধবার (২১ জুলাই) ঈদের দিন বিভিন্ন মাদরাসা ঘুরে চামড়া কিনেছেন মিলন নামে এক চামড়া ব্যবসায়ী। তিনি চামড়াগুলো কাল সন্ধ্যায় নিয়ে এসেছিলেন ট্যানারিতে। কিন্তু চামড়াগুলো তখন কোনো ট্যানারির গুদামে না রাখতে পাড়ায় আজ সকালে অনেক চামড়াই খারাপ হয়ে গেছে। তাই চামড়ার দামও কমে এসেছে।
মিলন বলেন, কাল সারাদিন নগদ টাকা দিয়ে বিভিন্ন মাদরাসায় ঘুরে চামড়া কিনে এনেছি। কিন্ত সন্ধ্যায় চামড়াগুলো নিয়ে এসেছি ট্যানারি মালিকদের কাছে তারা তখন নেইনি। তাই সারারাত চামড়া লবণ ছাড়া থাকায় হালকা নষ্টের পথে চলে গিয়েছিলো। সেই চামড়াগুলো এখন অল্প দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
আজমেরী ট্যানরির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা সরকার নির্ধারিত দামেই চামড়া কিনছি। কাল থেকে কিনে চর্বি কেটে ফেলে লবণ মেখে সংরক্ষণ শুরু করা হয়েছে। আশা রাখি এবার আমাদের চামড়ার কোনো ঘাটতি থাকবে না।
বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) সাধারণ সম্পাদক সাখওয়াত উল্লাহ বলেন, গতকাল বুধবার (২১ জুলাই) সন্ধ্যা থেকেই ট্যানারিগুলোতে কাঁচা চামড়া আসা শুরু হয়েছে। গত বছরের মতো এবারও ৮০ লাখ গবাদি পশুর চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে এবারের কোরবানির ঈদে। সরকারের বেঁধে দেওয়া দামের মধ্যেই এবার আমরা মৌসুমি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চামড়া সংগ্রহ করছি। চামড়া পরিবহনের বিষয়টি আগামীকাল থেকে শুরু হওয়া এবং কঠোর লকডাউনের আওতামুক্ত রাখায় ট্যানারিতে চামড়ার সংকট হবে না। আর গত দুই বছর ধরে ব্যবসার পাশাপাশি আমাদের শ্রমিকদের সুরক্ষার দিকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
ইউকে/এএস