বার্তাকক্ষ প্রতিবেদন: জাতীয় শোক দিবসসহ আগস্ট মাসের পালনীয় দিবসগুলোতে আওয়ামী লীগ ঘোষিত কর্মসূচি সীমিত পরিসরে যথাযথ স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মেনে পালনের জন্য দলীয় নেতাকর্মী ও দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
শুক্রবার এক বিবৃতিতে তিনি এই আহবান জানান।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আগামী ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদাত বার্ষিকী (জাতীয় শোক দিবস)। জাতীয় শোক দিবসসহ আগস্ট মাসের পালনীয় দিবসগুলোতে আওয়ামী লীগ ঘোষিত কর্মসূচি সীমিত পরিসরে কড়াকড়িভাবে স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মেনে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের জন্য দেশবাসী, আওয়ামী লীগ এবং তার সকল সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আগস্ট বাঙালি জাতির নিকট বেদনাদায়ক একটি মাস। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ইতিহাসে নির্মমতার এক কালো অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত। ১৯৭৫ সালের এই দিনে মানবসভ্যতার ইতিহাসে সবেচেয়ে নিকৃষ্ট ও ঘৃণ্যতম হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। বুলেটের আঘাতে স্তব্ধ করে দেওয়া হয় বাঙালির অধিকার প্রতিষ্ঠা ও মুক্তি সংগ্রামের দ্ব্যর্থহীন বজ্রকণ্ঠ। দেশের বাইরে অবস্থান করার কারণে সেদিন প্রাণে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর দুইকন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ঘাতকেরা এদিন শুধু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকেই সপরিবারে হত্যা করেনি, হত্যা করেছিল বাঙালি জাতির মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, অগ্রযাত্রা, সমৃদ্ধি ও সুন্দর আগামীর স্বপ্ন। স্বাধীনতা প্রাপ্তির মাত্র ৩ বছর ৭ মাসের মাথায় দেশি ও বিদেশি চক্রান্তের মাধ্যমে ঘাতকরা বাঙালি জাতির কপালে কলঙ্কের তিলক পরিয়ে দেয়।
তিনি বলেন, শুধু বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করেই খুনিরা ক্ষান্ত হয়নি, বঙ্গবন্ধু হত্যার ষড়যন্ত্রের জড়িত জিয়া-মুশতাকচক্র অসাংবিধানিক উপায়ে অবৈধ পন্থায় রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করে বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করতে ঘৃণ্য ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে জাতির পিতার খুনিদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয় এবং বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে তাদের পুরস্কৃত করে। তবে দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রামের পর বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা পায়। তিনি বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করান এবং নিয়মতান্ত্রিক বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ফাঁসির রায় কার্যকর করে বাঙালি জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করেন। বিভিন্ন দেশে পালিয়ে থাকা বঙ্গবন্ধুর খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে আদালতের রায় কার্যকর করার প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো জাতির পিতার হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে বেনিফিশিয়ারি হিসেবে চিহ্নিত একটি মহল এখনও দেশ ও জাতির এই ক্রান্তিকালে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। আজও তারা অগণতান্ত্রিক ও অসাংবিধানিক উপায়ে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের দুঃস্বপ্নে বিভোর হয়ে আছে। প্রতিনিয়ত নির্লজ্জভাবে মিথ্যা-বানোয়াট তথ্য উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে তারা জাতিকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। তবে সকল বাধা-বিপত্তি জয় করে শেখ হাসিনা আজ বাঙালি জাতিকে বিশ্বের দরবারে এক মর্যাদাশীল জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছেন।
বিবৃতিতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাতীয় শোক দিবসে দেশের সকল মসজিদে দোয়া মাহফিল এবং মন্দির, প্যাগোডা, গির্জাসহ অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়ে দেশব্যাপী বিশেষ প্রার্থনা আয়োজনের আহ্বান জানিয়েছেন।
একইসাথে তিনি জাতীয় শোক দিবসসহ আগস্ট মাসের পালনীয় দিবসগুলোতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ কর্মসূচি গ্রহণ করে তা পালনের জন্য আওয়ামী লীগের সকল জেলা, মহানগর, উপজেলা, পৌর, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড এবং সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সকল শাখার নেতাকর্মী ও সমর্থকদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।
ইউকে/এএস