বার্তাকক্ষ প্রতিবেদন: মাস দুয়েক আগে বিশেষজ্ঞেরা বলেছিলেন, করোনাভাইরাসের ডেল্টা ভেরিয়েন্টেই বিপদের শেষ। এর পরে ক্ষমতা কমতে শুরু করবে করোনাভাইরাসের।
কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও) বলছে, ডেল্টা আসলে বিশ্বের উদ্দেশে এক ‘সতর্কবার্তা’। এর পরে মিউটেশন ঘটিয়ে আরও ভয়ানক স্ট্রেন তৈরি করতে পারে করোনাভাইরাস!
করোনাভাইরাসে এরই মধ্যে সারাবিশ্বে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছে ১৯ কোটি ৮৫ লাখ ৬৫ হাজার ২৫২ জন এবং মারা গেছে ৪২ লাখ ৩৩ হাজার ১৭৪ জন।
তার মধ্যে ১৩২ দেশে ছড়িয়ে পড়েছে ডেল্টা ভেরিয়েন্ট। যুক্তরাষ্ট্রে নতুন করে সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে এর জেরে। পশ্চিম এশিয়ায় চতুর্থ ঢেউ আছড়ে পড়ার অন্যতম কারণ ডেল্টা। চীনে নতুন করে সংক্রমণ বেড়েছে। আরও দু’টি প্রদেশ থেকে সংক্রমণ বৃদ্ধির খবর মিলেছে।
অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম বড় শহর ব্রিসবেন ও কুইন্সল্যান্ড প্রদেশের একাংশে লকডাউন জারি করা হয়েছে। দেশের উপ-প্রধানমন্ত্রী স্টিভেন মাইলস জানিয়েছেন, তিন দিনের জন্য সম্পূর্ণ গৃহবন্দি থাকতে হবে লাখ লাখ বাসিন্দাকে। সবই ডেল্টার জেরে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, চিকেন পক্সের মতো ছোঁয়াচে করোনার ডেল্টা ধরন। এক জন সংক্রমিতের থেকে নিমেষেই ৮-৯ জনের শরীরে তা ছড়িয়ে পড়তে পারে। অতিসংক্রামক স্ট্রেনটি সম্পর্কে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জরুরি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রক বিভাগের প্রধান মাইকেল রায়ান বলেন, ডেল্টা হচ্ছে আসলে একটা সতর্কবার্তা। সকলকে সতর্ক করে দেওয়া যে, ভাইরাস তার ভোল বদলাচ্ছে। এবং এটাও মনে করিয়ে দেওয়া যে আরও ভয়ানক ভেরিয়েন্ট তৈরি হতে পারে।
ডাব্লিউএইচও প্রধান টেডরস অ্যাডহানম এতে যোগ করেছেন, এখন পর্যন্ত চারটি ‘ভেরিয়েন্ট অব কনসার্ন’ তৈরি হয়েছে। ভাইরাসটি যত ছড়াবে, এ রকম উদ্বেগ করার মতো ভেরিয়েন্ট আরও তৈরি হবে।
সারা বিশ্বকে ৬টি অঞ্চলে ভাগ করে পর্যালোচনা চালায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এর মধ্যে পাঁচটিতেই গত এক মাসে সংক্রমণ বেড়েছে ৮০ শতাংশ।
রায়ানের বক্তব্য, ডেল্টার প্রকোপে বেশ নড়বড়ে অবস্থা হয়েছে কিছু দেশের। কিন্তু তাতেও তারা যথেষ্ট সতর্ক করতে পারেনি বাসিন্দাদের। সংক্রমণ রুখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে এখনও ব্যর্থ বেশ কিছু দেশ।
পারস্পরিক দূরত্ব-বিধি মানা হচ্ছে না। লোকজন মাস্ক পরছেন না। স্যানটাইজার ব্যবহার, হাত পরিষ্কার রাখা, হাওয়া চলাচলের ব্যবস্থা কম এ রকম বদ্ধ ঘরে বেশিক্ষণ না-থাকা, ভিড়-জটলা এড়িয়ে যাওয়া- এর কোনোটার ওপরই জোর দেওয়া হচ্ছে না।
সূত্র: মেডিকেল নিউজ টুডে।
ইউকে/এএস