বিনোদন বিভাগ: রাজ মাল্টিমিডিয়ার স্বত্বাধিকারী নজরুল ইসলাম রাজ ওরফে নজরুল রাজের বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ বিদেশি ব্র্যান্ডের দামি মদ, তিন প্যাকেট ইয়াবা, সিসা, সিসা সেবনের সামগ্রী, বেল্ট, দড়ি, ডাণ্ডা, মাদক সেবনের জন্য ব্যবহৃত বিশেষ কম্বলসহ বিভিন্ন সামগ্রী উদ্ধার করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি বাসাকে টর্চার সেল বানিয়েছিলেন। যার জন্য বেল্ট, দড়ি ও ডাণ্ডা মজুদ রেখেছেন।
অভিযানে অংশ নেওয়া একাধিক কর্মকর্তা জানান, বিকৃত যৌনাচারে অভ্যস্ত ছিলেন নজরুল রাজ। তার বাসা থেকে একাধিক নারী-পুরুষ একসঙ্গে যৌনাচারের জন্য ব্যবহৃত এবং বিশেষ কৌশলে তৈরি করা খাট পাওয়া গেছে। রাজ মাল্টিমিডিয়া প্রডাকশন হাউসের একটি কক্ষে সমন্বিত যৌনাচারে ব্যবহার্য বিভিন্ন সরঞ্জাম দেখে অভিযান পরিচালনাকারী কর্মকর্তারাও তাজ্জব বনে গেছেন। এসব বিষয়ে নজরুল রাজকে জেরা করা হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা ধারণা করছেন, তিনি বিশেষ উদ্দেশ্যে পর্নো ভিডিও তৈরি অথবা ব্ল্যাকমেইলিংয়ের কাজে এসব ব্যবহার করতেন।
গতকাল রাত সাড়ে ৮টার দিকে রাজধানীর বনানী থানার ৭ নম্বর সড়কের ৪১ নম্বর বাসায় অভিযান শুরু করে র্যাব। রাত সাড়ে ১০টায় রাজকে একটি গাড়িতে তুলে র্যাব সদর দপ্তরে নেওয়া হয়। নজরুল রাজ প্রযোজক ও অভিনেতা।
সম্প্রতি কয়েকজন আলোচিত মডেল ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা, মৌ ও নায়িকা পরীমনি গ্রেপ্তার হওয়ার পর তাদের জিজ্ঞাসাবাদে নজরুল রাজের নাম আসে। এ ছাড়া বহুল আলোচিত মিশু হাসানও নজরুল রাজ সম্পর্কে র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে। রাজের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা, মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণসহ নানা অভিযোগও রয়েছে। তিনি পরীমণি ও পিয়াসাকে মডেলিং জগতে নিয়ে আসেন। তাদের দিয়ে তদবির বাণিজ্যসহ বিভিন্ন কাজ হাসিল করতেন বলে অভিযান পরিচালনাকারী একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন।
র্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী মিশু হাসানকে গ্রেপ্তারের পর তার কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। এর ভিত্তিতেই রাজকে আটক করা হয়েছে। তার বিষয়ে বিস্তারিত অনুসন্ধান চলছে। দেশের শোবিজ অঙ্গনকে এগিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ২০১৯ সালের জুলাইয়ে যাত্রা শুরু করে রাজ মাল্টিমিডিয়া। পরীমণির প্রথম সিনেমা ভালোবাসা সীমাহীন-এর প্রযোজক ছিলেন নজরুল রাজ। সিনেমা প্রযোজনার পাশাপাশি অভিনয়ও করেন নজরুল। তার হাত ধরে নাটক থেকে সিনেমায় নাম লেখান পরীমণি।
নজরুল রাজ সম্পর্কে জানা গেছে, বনানীতে পুলিশ পরিদর্শক মামুনকে হত্যার পর গাজীপুরের জঙ্গলে লাশ ফেলে দেওয়ার মামলার তদন্তে নজরুল, মিশু হাসান, পিয়াসাসহ কয়েকজনের নাম আসে। ওই সময় নজরুলের বিরুদ্ধে দীর্ঘ তদন্ত করে পুলিশ। যদিও পরে ওই মামলা থেকে নজরুল রাজকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। আলোচিত এই সিনেমার পরিচালকের বাড়ি গোপালগঞ্জ সদরের দুর্গাপুর গ্রামে। তিনি ড্রেজিং ব্যবসাসহ বিভিন্ন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। রাজ মাল্টিমিডিয়া থেকে প্রিয়জন প্রয়োজনসহ কয়েকটি সিনেমায়ও অভিনয় করেছেন নজরুল। র্যাব সূত্রে জানা গেছে, তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনসহ একাধিক মামলার প্রস্তুতি চলছে।
ইউকে/এএস