বার্তাকক্ষ প্রতিবেদন: চীন ১২ লাখ ৯৫ হাজার বর্গ কিলোমিটার অঞ্চল জুড়ে থাকা এশিয়ার অন্যতম বড় মরুভূমিকে জঙ্গলে পরিণত করতে চলেছে! মরুভূমির অনেকটা অংশ জুড়ে গড়ে তোলা হচ্ছে এই সবুজ প্রাচীর।
সেই লক্ষ্যে অনেকটা এগিয়েও গেছে বেইজিং। হিসাব অনুযায়ী, মরুভূমির যে অংশ জঙ্গলে পরিণত হয়ে গেছে সেই হিসেব কষলে বিশ্বের সর্ববৃহৎ মানুষ নির্মিত অরণ্য এটিই।
কিন্তু প্রশ্ন হলো- কেন মরুভূমিকে জঙ্গলে পরিণত করছে চীন? চীনের উত্তরাঞ্চলের অনেকটা অংশ জুড়ে রয়েছে এই মরুভূমি। চীনের জলবায়ুর উপরে মরুভূমির বিরূপ প্রভাব প্রকট হয়ে উঠতো মূলত মার্চ এবং এপ্রিল মাসে।
এ সময় মরুর ধুলোয় ঢেকে যেত উত্তরাঞ্চল থেকে রাজধানী বেইজিং পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকা। বছরের এই দুই মাস নিজেদের সম্পূর্ণ না ঢেকে বাইরে বের হতেই পারতেন না কেউ। যানবাহন চলাচল থেকে বিমানের ওঠানামাও বাধার মুখোমুখি হত।
অন্য দিকে মরুভূমির আকারও ক্রমশ বেড়ে চলেছে। প্রতি বছর গোবি মরুভূমি অন্তত ৩৬০০ বর্গ কিলোমিটার ঘাসজমি দখল করে নিচ্ছে। মরুঝড়ে ঢাকা পড়ে যাচ্ছে মাটির উপরের অংশ।
শুধু চীনের গোবি মরুভূমি সংলগ্ন অঞ্চলই নয়, প্রতিবেশী দেশ জাপান, উত্তর কোরিয়া, দক্ষিণ কোরিয়াতেও ব্যাপক প্রভাব ফেলছে এই মরুঝড়। এই সমস্ত দেশের চাষাবাদের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে তার জন্য।
সেই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে ১৯৭৮ সালে ‘সবুজ দেয়াল’ (গ্রিন ওয়াল) নামে একটি প্রকল্প হাতে নেয় চীন সরকার। গোবি মরুভূমির বুকে ‘সুবজ বিপ্লব’ ঘটায় চীন।
এরই মধ্যে মরুভূমির ৫ থেকে ১৫ শতাংশ অঞ্চল অরণ্যে পরিণত করে দিতে পেরেছে চীন। সব কিছুকে গ্রাস করতে আসা মরুভূমিকেও রুখে দিতে পেরেছে অনেকটাই।
২০০৯ সাল পর্যন্ত মরুভূমির পাঁচ লাখ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে গাছ বসিয়ে দিয়েছিল চীন। বিশ্বের সবচেয়ে বড় কৃত্রিম বনভূমি এটিই।
২০৫০ সাল পর্যন্ত এভাবে সবুজ প্রাচীর গড়ে তোলার কাজ চালিয়ে যাবে চীন। আট কোটি ৮০ লাখ একর এলাকা জুড়ে প্রসারিত থাকবে এই অরণ্য, পরিকল্পনা এমনই রয়েছে।
সূত্র: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক, ইন্টারেস্টিং ইঞ্জিনিয়ারিং, আনন্দবাজার।
ইউকে/এএস