শরীর সুস্থ রাখতে রাজমার যত উপকারিতা

লাইফস্টাইল বিভাগ: শরীর সুস্থ রাখতে বিনস বা মটরশুটির জুড়ি মেলা ভার। রাজমা, ছোলা, লোবিয়া, মটর, সবুজ মটর এ সবই বিনস বা মটরশুটির শ্রেণির অন্তর্ভূক্ত। বিনসে উপস্থিত পুষ্টিকর উপাদান শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। সবুজ বিনস রোগ দূর করার পাশাপাশি শরীরে শক্তি জোগায়। এ ছাড়াও বিনসের নানান উপকারিতা রয়েছে। চলুন জেনে নেওয়া যাক।

ফাইবারে সমৃদ্ধ বিনস

ফাইবারের উল্লেখযোগ্য উৎস বিনস। শরীরের নানান কার্যকলাপ সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন করার জন্য ফাইবার গুরুত্বপূর্ণ। হৃদরোগ, হাই কোলেস্টেরল, উচ্চ রক্তচাপ, হজমের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে ফাইবার। এক কাপ সাদা রাজমায় ১৯ গ্রাম ফাইবার থাকে। সিদ্ধ রাজমায় পেঁয়াজ, টমেটো, গাজর মিশিয়ে সালাদ হিসেবে খাওয়া যেতে পারে।

প্রোটিনে ভরপুর

বিনসে কম ফ্যাট, কম ক্যালরি যুক্ত প্রোটিন থাকে। এটি আবার কার্বসেরও উল্লেখযোগ্য উৎস। এক কাপ বিনসে প্রায় ১৫ গ্রাম প্রোটিন থাকে, যা চাল ও গমের প্রোটিনের তুলনায় তিন গুণ বেশি। যারা ভেজিটেরিয়ান তারা রাজমা-সহ নানান বিনসের মাধ্যমে সহজেই নিজের শরীরের প্রোটিনের ঘাটতি পূরণ করতে পারেন।

ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে

ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে বিনস। যারা বেশি বিনস খান তাদের শরীরের নিম্নাংশে মেদ কম জমা হয়। সমীক্ষা অনুযায়ী প্রোটিনের জন্য বিনস খেলে তাড়াতাড়ি ওজন কমে। মাংসের পরিবর্তে রাজমা খেলে শরীরের অধিক উপকার হয়।

হার্টের সুস্থতার জন্য ভালো

যারা নিয়মিত বিনস খান, তাদের মধ্যে হৃদরোগের সম্ভাবনা অনেক কম থাকে। সমীক্ষা অনুযায়ী এটি খারাপ কোলেস্টেরল বা এলডিএল কম করে। কোনও হৃদরোগ থাকলে যত বেশি সম্ভব বিনস খান। বিনস, বিট, সবুজ সবজি দিয়ে সালাদ তৈরি করে খেতে পারেন।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে বিনস

নানান ধরনের বিনস শুধু মাত্র ডায়াবেটিস থেকে রক্ষা করে না, বরং রক্তে শর্করার পরিমাণও নিয়ন্ত্রণে রাখে। তরকারি না-বানিয়েও নানান ভাবে নিজের খাদ্য তালিকায় বিনস রাখতে পারেন।

আয়রনের অভাব দূর করে

শরীরের জন্য আয়রন অত্যন্ত জরুরি। আয়রনের অভাবে রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে, এর ফলে ব্যক্তি রক্তাল্পতার শিকার হয়। আবার হরমোনের জন্যও আয়রন জরুরি। শরীরের সমস্ত অঙ্গে অক্সিজেন পৌঁছে দিতে সাহায্য করে আয়রন।

ম্যাগনেশিয়ামে সমৃদ্ধ

শরীরে প্রোটিন ও হাড়ের গঠনে সাহায্য করে ম্যাগনেশিয়াম। এটি রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখে। এক কাপ কালো রাজমায় ১২০ মিলিগ্রাম ম্যাগনেশিয়াম থাকে। প্রতিদিন অন্তত পক্ষে ১২০ মিলিগ্রাম ম্যাগনেশিয়াম শরীরের জন্য জরুরি। কালো রাজমা ও ভাত খেতে পারেন। এটি সুস্বাদু হওয়ার পাশাপাশি পুষ্টিকরও।

জিঙ্কের অভাব দূর করে বিনস

জীবাণু ও ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করার জন্য জিঙ্কের প্রয়োজন পড়ে। এটি কোনও ক্ষত সারিয়ে তুলতে সাহায্য করে। আবার বাচ্চাদের স্বাদ ও গন্ধ চেনার ক্ষমতা বৃদ্ধি করে জিঙ্ক। এক কাপ ছোলায় ২.৪ মিলিগ্রাম জিঙ্ক থাকে।

বিনস খেলে গ্যাসের সমস্যা হয়?

একসঙ্গে অধিক পরিমাণে বিনস খেলে পেটে গ্যাস উৎপন্ন হতে পারে। এ কারণে অনেকে রাজমা বা ছোলা খাওয়া এড়িয়ে যান। বিনস খাওয়ার ফলে পেটে যে গ্যাস উৎপন্ন হয়, তা ক্ষতিকর না-হলেও সামান্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এজন্য একবারে অধিক বিনস খাওয়া বাদ দিতে হবে। প্রয়োজনে বেশি পানি পান করুন।

ইউকে/এএস