নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীতে বিধি-নিষেধ চলমান থাকার পরও শহর এলাকায় সোমবার (৯ আগস্ট) জনজট ও যানজট দুটোই বেড়েছে। সোমবার দুপুরে সড়কের চিত্র দেখে বোঝার উপায় ছিলো না যে শহরে কঠোর বিধি-নিষেধ এখনও বলবৎ রয়েছে।
বুধবার (১১ আগস্ট) থেকে বিধি-নিষেধ উঠে যাওয়ার খবরে সোমবার (৯ আগস্ট) থেকেই পরিস্থিতি যেন পাল্টে গেছে!
লকডাউনের ১৮তম দিনে কঠোর বিধি-নিষেধ উপেক্ষা করেই বাইরে বের হয়েছেন অধিকাংশ মানুষ। মহানগরীর প্রধান সড়কগুলোর চেকপোস্টে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা থাকা সত্ত্বেও যানবাহনের চাপ রয়েছে অনেক বেশি। রিকশা ও অটোরিকশাগুলোকে নির্বিঘ্নে দাপিয়ে বেড়াতে দেখা গেছে প্রতিটি সড়কেই। এছাড়া সিনএনজি, মোটরসাইকেল, পিকঅ্যাপ-ভ্যান ও প্রাইভেটকারসহ বিভিন্ন যানবাহনের চাপ বেড়েছে আজ। লকডাউনের বিগত দিনগুলোতে এমন চিত্র দেখা যায়নি।
চেকপোস্টের আশেপাশে রিকশা ও অটোরিকশা কম থাকলেও অদূরে চালকদের যাত্রী তুলতে দেখা গেছে। আর ঢিলেঢালা লকডাউনের কারণে সাধারণ মানুষের চলাচলের সাথে ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যাও বেড়েছে।
রাজশাহী মহানগরীর নওদাপাড়া আমচত্বর, শালবাগান, গোরহাঙ্গা রেলগেট, ভদ্রা স্মৃতি অম্লান চত্বর, নিউমার্কেট, রানীবাজার, গণকপাড়া, সাহেববাজার জিরোপয়েন্ট, কুমারপাড়া, আলুপট্টি, সোনাদীঘির মোড় ও লক্ষ্মীপুরসহ গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোয় দেখা গেছে ব্যাপক হারে মানুষ চলাচল করছেন।
এছাড়া মহানগরীর প্রবেশদ্বার কাটাখালী, বেলপুকুর, কাঁশিয়াডাঙ্গা এলাকায় পুলিশের চেকপোস্টে গিয়ে দেখা গেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সেখানে রয়েছেন। কিন্তু আগের মতো আর কাউকে বাধা দিচ্ছেন না। তবে রাজশাহী মহানগরী ও উপজেলাগুলোতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর টহল অব্যাহত রয়েছে।
রাজশাহী জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালতও মাঠ পর্যায়ে কাজ করছেন। বিধি-নিষেধ অমান্য করা ও স্বাস্থ্যবিধি না মানায় প্রতিদিন অনেককেই জরিমানা ও কারাদণ্ড দেওয়া হচ্ছে । গত রোববার (৮ আগস্ট) রাজশাহীতে ৩৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এ সময়ে মোট জরিমানা করা হয়েছে ২৯ হাজার ৭০০ টাকা।
সাধারণ মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি মানাতে জেলা প্রশাসনের মোট ২২টি টিম রাজশাহীতে কাজ করেছেন। এর মধ্য জেলার নয় উপজেলায় ১৮টি এবং মহানগরীতে মোট চারটি টিম কাজ করছেন।
রাজশাহী জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ কাউছার হামিদ জানান, লকডাউন চলাকালে বিধি-নিষেধ অনুযায়ী জরুরি ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকানের বাইরে কেউ দোকানপাট খুলতে পারবেন না। অপ্রয়োজনেও কেউ বাইরে বেরোতে পারবেন না। জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলেও মাস্ক পরতে হবে, স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে।
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (সদর) মোহাম্মদ গোলাম রুহুল কুদ্দুস বলেন, কঠোর লকডাউন কার্যকরে পুলিশ সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এরপরও কোথাও কোথাও বিধি-নিষেধ অমান্য করে মানুষ বাইরে বের হচ্ছেন। তবে বেরোলে নগদ জরিমানা ও মামলার মুখেও পড়ছেন।
ইউকে/এএস