বাংলা চলচ্চিত্রের অন্যতম পথিকৃৎ আমজাদ হোসেনের জন্মদিন

বিনোদন বিভাগ: গুণী চলচ্চিত্রকার-মুক্তিযোদ্ধা আমজাদ হোসেনের জন্মবার্ষিকী শনিবার (১৪ আগস্ট)। ১৯৪২ সালের এই দিনে জামালপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি।

২০১৮ সালের ১৪ই ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেন তিনি। বেঁচে থাকলে ৭৯ বছরে পা রাখতেন এই গুণীজন। বাস্তবে এই মানুষটি বেঁচে না থাকলেও কর্মগুণে বেঁচে থাকবেন প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে।

আমজাদ হোসেনে ছিলেন দেশের চলচ্চিত্রের স্বর্ণযুগের কাণ্ডারিদের মধ্যে অনত্যম। যার নির্দেশনায় ক্যামেরার অনেক চরিত্র হয়ে উঠেছে বাস্তবের প্রতিচ্ছবি। সাদা-কালো গল্প থেকে সেলুলয়েডের রঙিন রূপকথার দীর্ঘ যাত্রায় তিনি ছিলেন অন্যতম এক পথিকৃৎ।

পঞ্চাশের দশকে জামালপুর থেকে ঢাকায় এসে সাহিত্য ও নাট্যচর্চার সঙ্গে জড়িত হন আমজাদ হোসেন। চলচ্চিত্রে তার যাত্রার শুরু হয় মহিউদ্দিন পরিচালিত ‘তোমার আমার’ সিনেমায় অভিনয়ের মাধ্যমে। এরপর তিনি অভিনয় করেন মুস্তাফিজ পরিচালিত ‘হারানো দিন’ সিনেমায়।

সালাহউদ্দিন পরিচালিত ‘ধারাপাত’ সিনেমায় নায়ক হিসেবে অভিনয় করেছিলেন আমজাদ হোসেন। এরপর ১৯৬৭ সালে ‘জুলেখা’ নামের সিনেমা নির্মাণ করেন তিনি।

একে একে ‘বাল্যবন্ধু’, ‘পিতাপুত্র’, ‘এই নিয়ে পৃথিবী’, ‘বাংলার মুখ’, ‘নয়নমনি’, ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’, ‘সুন্দরী’, ‘কসাই’, ‘জন্ম থেকে জ্বলছি’, ‘দুই পয়সার আলতা’, ‘সখিনার যুদ্ধ’, ‘ভাত দে’, ‘হীরামতি’, ‘প্রাণের মানুষ’, ‘সুন্দরী বধূ’, ‘কাল সকালে’, ‘গোলাপী এখন ঢাকায়’ ‘গোলাপী এখন বিলেতে’র মতো অনেক কালজয়ী সিনেমা নির্মাণ করেছেন আমজাদ হোসেন।

‘গোলাপী এখন ট্রেনে’ ও ‘ভাত দে’ চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ পরিচালক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন আমজাদ হোসেন। কর্মজীবনে সব মিলিয়ে সর্বমোট ১২বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।

চলচ্চিত্রের বাইরে সাহিত্যেও প্রতিভার দীপ্তি উজ্জ্বলিত করে গেছেন আমজাদ হোসেন। সাহিত্য রচনার জন্য ১৯৯৩ ও ১৯৯৪ সালে দুইবার অগ্রণী শিশু সাহিত্য পুরস্কার ও ২০০৪ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন তিনি।

জীবদ্দশায় দেশের এমন কোনও সম্মাননা নেই যা আমজাদ হোসেনের হাতে শোভা পায়নি। বাংলাদেশ সরকার এই কিংবদন্তিকে দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান একুশে পদক (১৯৯৩) ও স্বাধীনতা পুরস্কারেও ভূষিত করেছে।

ইউকে/এএস