খোলেনি রাজশাহীর সব বিনোদন কেন্দ্র

নিজস্ব প্রতিবেদক: সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দেশের সব বিনোদন কেন্দ্র বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) থেকে খুলে দেওয়া হলেও খোলা হয়নি রাজশাহীর সব বিনোদন কেন্দ্র। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে দফায় দফায় ‘লকডাউনে’ দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল এসব বিনোদন কেন্দ্র।

ভ্রমণপিপাসুদের যাতায়াত ছিল নিষিদ্ধ। অবশেষে অপেক্ষা ও নীরবতা ভেঙে বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে ভ্রমণপিপাসুদের আগমন শুরু হয়েছে। তবে শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান চিড়িয়াখানাসহ বেশ কয়েকটি অন্যতম দর্শনীয় স্থান বন্ধ রয়েছে। আবার যেসব বিনোদন কেন্দ্র খোলা হয়েছে সেখানেও দর্শনার্থীদের উপস্থিতি কম।

সংশ্লিষ্টরা জানান, করোনা ভাইরাসের কারণে মানুষ অনেকদিন ধরে ঘরবন্দি। জনসমাগম এড়াতে তাই প্রথমদিন বিনোদনকেন্দ্র খুললেও মানুষের উপস্থিতি কম। আরও কয়েকদিন পর মানুষের জনসমাগম বাড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবিলায় দেশে কঠোর ‘লকডাউন’ শুরু হলে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী রাজশাহীর সব বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ করে দেয় প্রশাসন। টানা ‘লকডাউনের’ পর স্বাস্থ্যবিধি মানার শর্তে সীমিত আকারে অফিস-আদালত, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ স্বাভাবিক কার্যক্রম ১১ আগস্ট থেকে চালু হলেও বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্র চালু হয়েছে বৃহস্পতিবার থেকে।

রাজশাহীর বিনোদন কেন্দ্রগুলোর মধ্যে আই বাঁধ ও ঐতিহ্যবাহী বড়কুঠিকে ঘিরে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার পদ্মার পাড়, শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানা, জিয়া শিশু পার্ক, ভদ্রায় ক্যাপ্টেন মনসুর রহমান পার্ক ও বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর অন্যতম।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিনোদন কেন্দ্রগুলোর মধ্যে শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানায় নির্মাণকাজ চলমান থাকায় আপাতত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক)। অন্যদিকে বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পরিচালিত হয়। ফলে গত বছরের ১৮ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের পর থেকে এটি দর্শনার্থীদের জন্য বন্ধ রয়েছে।

এদিকে নগরের পার্কগুলোতে দর্শনার্থীদের ভিড় না থাকলেও পদ্মার পাড়সহ উন্মুক্ত বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে ভ্রমণপিপাসুদের যাতায়াত লক্ষ্য করা গেছে। মহানগরের কোলঘেঁষে প্রায় পাঁচ কিলোমিটারজুড়ে মনোরম পদ্মার পাড়ে শত শত মানুষ প্রাকৃতিক পরিবেশে একত্রিত হচ্ছেন। কেউ আত্মীয়-স্বজন নিয়ে আবার কেউ নিজের পছন্দের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে ঘুরতে আসছেন। প্রিয়জনকে সঙ্গে নিয়ে ছবি তুলতে ব্যস্ত সময় পার করেছেন। আবার কেউ নদীতে নৌকায় ঘুরে কিংবা পাড়ে বসে গল্প করে সময় পার করছেন।

পদ্মার পাড়ে ঘুরতে আসা মহানগরের ছোটবনগ্রাম এলাকার সাইফুল ইসলাম বলেন, স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে ঘুরতে বের হয়েছি। বিভিন্ন বিনোদন স্পট বন্ধ রয়েছে। কয়েকটি খুললেও সেগুলো পুরোদমে চালু হয়নি। তাই পরিবার নিয়ে এখানে এসেছি।

জিয়া শিশু পার্কে সন্তানকে নিয়ে ঘুরতে যান বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা গোলাম রহমান। তিনি বলেন, ছেলে সকাল থেকে কান্না করছে তাকে নিয়ে ঘুরতে যেতে হবে। ছেলের কান্নার কারণে তাকে নিয়ে ঘুরতে বের হয়েছি।

জানতে চাইলে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোস্তাফিজ মিশু বলেন, শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানা সিটি করপোরেশেনের অধীনে পরিচালিত হয়। সেখানে কিছু উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে। কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত এটি আপাতত বন্ধ থাকবে। তবে আজ থেকে জিয়া শিশুপার্ক চালু থাকবে।

ইউকে/এএস