ফরিদপুরে বাড়ছে পদ্মার পানি, প্লাবিত হচ্ছে নিম্নাঞ্চল

ফরিদপুর সংবাদদাতা: গত সাতদিন থেকে ফরিদপুরে বাড়ছে পদ্মা নদীর পানি। এতে প্লাবিত হচ্ছে নিম্নাঞ্চল। পদ্মার পানি এখন বিপৎসীমার ৩৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় পদ্মার পানি ৯ সেন্টিমিটার বেড়ে বর্তমানে জেলার গোয়ালন্দঘাট পয়েন্টে ৩৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এতে ফরিদপুরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে নয়টি গ্রামের প্রায় কয়েক হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এছাড়া জেলার বেশ কয়েকটি স্থানে নদীর তীব্র স্রোতে ভাঙন দেখা দিয়েছে।

পানিবন্দি গ্রামগুলো হলো- ফরিদপুর সদরের কাইমুদ্দিন মাতুব্বরের ডাঙ্গী, বরান বিশ্বাসের ডাঙ্গী, বাছের মোল্লার ডাঙ্গী, শুকুর আলী মাতুব্বরের ডাঙ্গী, আয়জদ্দিন মাতুব্বরের ডাঙ্গী, চর বালুধুম, বাঘের টিলা, লালার গ্রাম ও নর্থ চ্যানেল। এভাবে পানি বাড়তে থাকলে কয়েক দিনের মধ্যে জেলার অন‌্যান‌্য নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিতে পারে।

বাছের মোল্লার ডাঙ্গী এলাকার বাসিন্দা তুরাপ শেখবলেন, আরও এক সপ্তাহ আগে তাদের ঘরে পানি উঠেছে। আসবাবপত্র নিয়ে আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন তারা। পানি কমলে আবার এলাকায় ফিরবেন আফসারের পরিবার।

স্থানীয়রা জানান, সপ্তাহখানেক হলো চরাঞ্চলে পদ্মার পানি বেড়েছে। পানি বাড়ার ফলে তলিয়ে গেছে বাড়ির আশপাশ। তলিয়ে যাচ্ছে মাঠের বিভিন্ন ফসলও।

ডিগ্রিরচর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান মিন্টু ফকির বলেন, আমার ইউনিয়নের বেশির ভাগই চরাঞ্চল। স্বাভাবিকভাবেই পানি বাড়ায় চরের মাঠ-ঘাট তলিয়ে গেছে এবং আউশ ধানসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত পানিতে ডুবে গেছে। ফলে এখানে দেখা দিয়েছে খাদ্য সংকট।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ফরিদপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদ বলেন, নদ-নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় কয়েকটি স্থানে নদীর ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন ঠেকাতে চেষ্টা চলছে। জিও ব্যাগ (বালু ভর্তি বিশেষ বস্তা) ফেলে প্রাথমিক প্রটেকশনের জন্য।

জেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ ব‍্যবস্থাপনা অফিস জানায়, পদ্মা নদীতে পানি বাড়ায় ফরিদপুরে এখন পর্যন্ত কত পরিবার পানিবন্দি হয়েছে, তার কোনো তথ‍্য তাদের কাছে নেই।

ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) অতুল সরকার বলেন, পানি বাড়ার বিষয়টি তারা সতর্কভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। জেলার বিভিন্ন উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা উপজেলা (ইউএনও), চেয়ারম্যান ও ইউপি চেয়ারম্যানদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে খোঁজ-খবর রাখার জন্য। কোথাও জনমানুষের দুর্ভোগ সৃষ্টি হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এছাড়া পানিবন্দি এলাকাগুলোতে সচেতনতায় মাইকিং করাসহ তাদের শুকনো খাবার ও আশ্রয়ের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে।

ইউকে/এএস