বার্তাকক্ষ প্রতিবেদন: বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনকে সঙ্গে নিয়ে একটা সমন্বিত সরকার গঠন করতে চায় তালেবান। সংগঠনটির শীর্ষ নেতারা মনে করেন, একতরফা সরকার গঠন করলে তালেবানের পক্ষে খুব বেশিদিন দেশ চালানো সম্ভব হবে না। এদিকে সরকার গঠনের লক্ষ্যে রাজধানী কাবুলে পৌঁছেছেন তালেবানের সহপ্রতিষ্ঠাতা মোল্লা আবদুল গনি বারাদার।
বিদেশি সেনারা আফগানিস্তান ছাড়তে না ছাড়তেই এক সপ্তাহের মধ্যে পুরো দেশ দখল করে নেয় তালেবান। এর মধ্যে গত রবিবার রাজধানী কাবুল দখল করে নেয় কট্টর ইসলামপন্থী এই সংগঠনটি। এরপর প্রায় এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও এখনো নতুন সরকার গঠন করেনি তালেবান। তবে এখন পর্যন্ত যে আভাস পাওয়া গেছে, তাতে সমন্বিত সরকার গঠন হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
সরকার গঠন নিয়ে আলোচনা করতে পাকিস্তান সফরে গেছেন তালেবানের শীর্ষ নেতারা। তাঁরা পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান, পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কোরেশি ও সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাবেদ বাজওয়াসহ দেশটির শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকের পর এক সংবাদ সম্মেলনে তালেবান নেতারা বলেছেন, একতরফা সরকার গঠন করলে তা ব্যর্থ হয়ে যাবে।
নতুন সরকার গঠন নিয়ে আলোচনা করতে গতকাল রাজধানী কাবুলে পৌঁছান তালেবানের সহপ্রতিষ্ঠাতা মোল্লা আবদুল গনি বারাদার। দীর্ঘ ১০ বছরের নির্বাসন শেষে গত মঙ্গলবার কাতারের রাজধানী দোহা থেকে আফগানিস্তানের মাটিতে পা রাখেন বারাদার। তিনি তালেবানের রাজনৈতিক শাখার প্রধান। তালেবানের জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন, সমন্বিত সরকার গঠনের লক্ষ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনায় বসতে কাবুলে এসেছেন বারাদার।
রাজধানী কাবুলে ফিরেছেন খলিল হাক্কানির মতো জ্যেষ্ঠ তালেবান নেতারাও। তালেবানের যেসব নেতাকে যুক্তরাষ্ট্র কালো তালিকাভুক্ত করেছিল, খলিল হাক্কানি তাঁদের মধ্যে অন্যতম। তাঁকে মৃত কিংবা জীবিত ধরিয়ে দিতে ৫০ লাখ ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছিল ওয়াশিংটন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট হওয়া একাধিক ছবিতে দেখা গেছে, খলিল হাক্কানি আফগান রাজনীতিবিদ গুলবুদ্দিন হেকমতিয়ারের সঙ্গে বৈঠক করছেন। নব্বইয়ের দশকে গৃহযুদ্ধের সময় তালেবানের শক্ত প্রতিপক্ষ ছিলেন গুলবুদ্দিন। এখনো আফগানিস্তানের রাজনীতিতে তাঁর ব্যাপক প্রভাব রয়েছে।
এদিকে আফগানিস্তানে রাজনৈতিক সমঝোতায় চীন ও পাকিস্তানের সহযোগিতা চেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নেড প্রাইস বলেন, ‘আফগানিস্তানের প্রতিবেশী দেশগুলোকে আমরা এটাই বলতে চাই যে সেখানে শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক সমাধানের সঙ্গে সবার স্বার্থই জড়িয়ে আছে।’
জিডিপি ২০% কমতে পারে : বাজার পরিসংখ্যান নিয়ে কাজ করা মার্কিন প্রতিষ্ঠান ‘ফিচ সলুশন’ আভাস দিয়েছে, রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে আফগানিস্তানের জিডিপি ২০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যেতে পারে। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, এরই মধ্যে ডলারের বিপরীতে আফগানিস্তানের মুদ্রার (আফগানি) মূল্য ৭ শতাংশ কমে গেছে। ‘ফিচ সলুশন’-এর গবেষক অনিতা বাসু জানান, রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে মিয়ানমার ও সিরিয়ার জিডিপিও ২০ শতাংশের মতো কমে গিয়েছিল।
সূত্র : ডন, এএফপি।
ইউকে/এএস