বার্তাকক্ষ প্রতিবেদন: সচিবালয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সারাদেশে মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে সিটি কর্পোরেশন ও অন্যান্য মন্ত্রণালয়বিভাগ, দপ্তরসংস্থার কার্যক্রম পর্যালোচনার ১১তম আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠিত।
সভায় ঢাকার দুই সিটি মেয়র ছাড়াও গাজীপুর সিটি মেয়র, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ ও স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিবসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মকর্তারা অংশ নেন।
সভায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, আমরা ঢাকাবাসীকে এডিস মশা থেকে মুক্ত রাখার জন্য সর্বাত্মক জনবল ও শক্তি প্রয়োগ করে আমাদের কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করে চলেছি। ২০১৯ সালের মতো যাতে কোনোভাবেই না ঘটে, সেই পর্যায়ে যেন ঢাকাবাসীর ভোগান্তি না হয়, সেই লক্ষ্যেই আমরা সর্বাত্মক কার্যক্রম নিয়েছি।
বিভিন্ন দেশের পরিসংখ্যান দিয়ে মেয়র তাপস বলেন, ভিয়েতনামে গত জুলাই মাসে ৩৭ হাজার ৪২০ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে। শ্রীলঙ্কায় জুলাই মাসে ১০ হাজার ৩৭১ জন। ভারত এখন পর্যন্ত পরিসংখ্যান দিচ্ছে না। তাতে বোঝা যায় কত বেশি সেখানে হতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলছেন, আবহাওয়ার কারণে এই এলাকায় এডিস মশা বিস্তারের অভয়ারণ্য হয়ে থাকে। বৃষ্টির পরিমাণ বেশি হলে এডিস মশা বেশি হবে। সেটাই আমরা লক্ষ্য করছি। আবহাওয়ার যে তথ্য আমরা পেয়েছি, আগামী সাতদিনও বৃষ্টি হবে। সুতরাং এটা আমাদের জন্য একটি বড় প্রতিকূলতা। দ্বিতীয় প্রতিকূলতা হলো- অপরিকল্পিত নগরায়নের ফলে আমাদের উৎসস্থল বিপুল সংখ্যক। এখন বিশেষ করে গড়ে উঠেছে ছাদবাগান, ছোট ছোট আধারের যে উৎসস্থল এগুলো ধ্বংস করা খুবই কঠিন। তারপরও আমাদের বিশাল কর্মযজ্ঞের কারণে ঢাকাবাসীকে এডিস মশা থেকে অনেকখানি পরিত্রাণ দিতে পারছি। এডিস মশার বিস্তারকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারছি।
মেয়র বলেন, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টার কারণে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হলেও কষ্টদায়ক হলো বাচ্চারা আক্রান্ত হচ্ছেন। আশা করি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আরও কার্যকর ভূমিকা রাখবে, অভিভাবকরা আরও সচেতন হবেন। আমরা অত্যন্ত দুঃখিত। ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ৩৫ জন মারা গেছেন।
তিনি বলেন, মাঝখানে তিনদিন ছুটি গিয়েছিল, এর পরই লক্ষ্য করেছি আবার রোগীর সংখ্যা একটু বেড়ে গেছে। রোগী প্রায় ৩০০-এর ঘরে চলে গিয়েছিল। এটাকে আবার ২০০-এর ঘরে নিয়ে এসেছি। আবহাওয়াটা অনুকূলে আসলে আশাবাদী শূন্যের কাছাকাছি নিয়ে আসতে পারব।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে যে তথ্য পেয়েছি- চার হাজার ৫৪৪ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে। সেখান থেকে ঠিকানা পর্যালোচনা করে দেখেছি এক হাজার ৮৩২ জন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায়, যা ৪০ দশমিক ৩১ ভাগ রোগী শনাক্ত করা গেছে। এছাড়া ঢাকার বাইরের অনেক রোগী পাচ্ছি।
তাপস বলেন, আক্রান্তদের ঠিকানা আলাদা করে কাউন্সিলরদের নেতৃত্বে সব ঠিকানায় গিয়ে মশার উৎসস্থলগুলো প্রাথমিকভাবে ধ্বংস করেন। পরিপূর্ণভাবে ৪০০ গজের মধ্যে লার্ভিসাইডিং করা হয়।
ইউকে/এএস