বার্তাকক্ষ প্রতিবেদন: ডায়াবেটিসের সমস্যা এখন সবার ঘরে ঘরেই। ডায়াবেটিসের প্রাথমিক পর্যায়ে অসচেতনতার কারণে এটি শরীরে মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। যদিও জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
তবে কেউ যদি ডায়াবেটিস উপেক্ষা করে জীবনধারায় পরিবর্তন না আনেন কিংবা নিয়মতি ওষুধ না খান, তাহলে টাইপ ২ ডায়াবেটিস শারীরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গে আঘাত হানে।
ঠিক যেমন ডায়াবেটিসের প্রভাবে অন্ধত্বও বরণ করতে পারেন। যাকে বলা হয় ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি। তবে ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি রোগটি আসলে কী?
দীর্ঘদিন ধরে কেউ যদি ডায়াবেটিসে ভোগেন, তাহলে ক্রমশ তার দৃষ্টিশক্তি কমতে শুরু করে। এই পরিস্থিতিতে তৈরি হয় ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথির মতো রোগ। এই রোগটি যদিও একেবারে শেষ পর্যায়ে গিয়ে ধরা পড়ে। তখন আর ফিরে আসার কোনো উপায় থাকে না।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ডায়াবেটিসে দীর্ঘদিন ভুগলে একসময় তা প্রভাব ফেলে রক্তনালী, শিরায় এবং ধমনীতে। এমনকি রেটিনার মতো সূক্ষ্ম স্থানেও যে ছোট ছোট ধমনী থাকে, সেখানেও প্রভাব ফেলে ডায়াবেটিস।
অনেক সময় রক্তনালী ছিঁড়ে যায়। ফলে চোখে রক্ত সঞ্চালন ব্যাহত হয়। আবার অনেক সময়ে রক্তনালীতে রক্ত জমাট বেঁধে গেলেও রক চলাচলের এই একই সমস্যা দেখা দেয়।
ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথির সমস্যা বাড়ে কেন?
ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি হওয়ার প্রথম এবং প্রধান কারণ দীর্ঘদিন ধরে থাকা ডায়াবেটিসে ভোগা। তার সঙ্গে যদি রোগীর রক্তচাপ এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা অত্যন্ত বাড়তি থাকে এবং অতিরিক্ত ধূমপান করেন, তাহলে ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথির রোগটি ক্রমশ বাড়তে থাকে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি কোনো ডায়াবেটিস রোগীর হাইপারটেনশন এবং ইউরিনারি প্রোটিন লিকেজ অর্থাৎ অ্যালবুমিনিউরিয়ার মতো আনুষঙ্গিক রোগ থাকে, চোখের এই সমস্যাটি বাড়তে পারে। এছাড়াও বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথির সমস্যা দেখা দিতে পারে।
ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথির লক্ষণগুলি কী কী?
যদিও এই রোগটি ধরা পড়ে একেবারে শেষ পর্যায়ে গিয়ে। তবে এই রোগের প্রাথমিক লক্ষণগুলো হলো চোখে ঝাপসা দেখা। সেইসঙ্গে হঠাৎ করে চোখে আলোর ঝলকানি কিংবা চোখের সামনে ভাসমান নড়তে দেখা। এ ধরনের লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চক্ষু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।
ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথির চিকিৎসা
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একবার ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি ধরা পড়লে তা একদম সারানো যায় না। তবে নিয়মিত চিকিৎসা, থেরাপি এবং পরীক্ষার মাধ্যমে চোখের ক্ষতি এড়ানো যায়। ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি গুরুতর পর্যায়ে গেলে অপারেশন বা লেসার থেরাপি ছাড়া উপায় থাকে না।
সূত্র: মায়োক্লিনিক
ইউকে/এএস