নতুন রূপে সাজবে শহীদ কাপ্টেন মুনসুর আলী পার্ক

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীর শহীদ কাপ্টেন মুনসুর আলী পার্ক। মহানগরীর বেশিরভাগ মানুষ ভদ্রা পার্ক হিসেবেই চেনেন।১৯৮২ সালে মহানগরীর ভদ্রায় থাকা পদ্মা আবাসিক এলাকায় পার্কটি গড়ে তোলা হয়। প্রতিষ্ঠার পর দীর্ঘ ৪৩ বছরের মধ্যে কোনো ধরনের সংস্কার ও উন্নয়মূলক কাজ হয়নি। দেরিতে হলেও এবার পার্কটি দৃষ্টিনন্দন ও আধুনিকায়ন করতে উদ্যোগ নিয়েছে রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (আরডিএ)।

পার্কে স্থাপন করা হবে আধুনিক রাইড, গ্যালারি, দৃষ্টিনন্দন বাউন্ডারি ওয়াল, রিটেইনিং ওয়াল, অভ্যন্তরীণ রাস্তা, অ্যাম্পিথিয়েটার, লেকের ওপরে তিনটি স্টিল ব্রিজ তৈরি, ৭০টি বেঞ্চ ও ট্রয় ট্রেন। পার্ক জুড়ে মনোরম বনায়নও করা হবে। রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (আরডিএ) ৪৭ কোটি ৯৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ঢেলে সাজাবে পুরো পার্কটি। ইতোমধ্যে পুরনো স্থাপনাগুলো ভাঙার কাজ শুরু হয়েছে।

আগামী বছরের জুন মাসের মধ্যে পার্কটি দৃষ্টিনন্দন হিসেবে নতুন রূপ পাওয়ার কথা রয়েছে। ১৯৮২ সালে ১২ দশমিক ৫৬ একর জমির ওপরে প্রতিষ্ঠার পর পার্কটি নান্দনিকভাবে গড়ে তুলতে এই প্রথম সংস্কার ও উন্নয়নের কাজ করা হচ্ছে।

পার্কটির কাজ শেষ হলে রাজশাহী মহানগরীর জনসাধারণের স্বাস্থ্য, পরিবেশগত এবং অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটবে। মহানগরীর জনসাধারণের মধ্যে সামাজিক সম্প্রীতি এবং সৌহার্দ বাড়বে। অন্যদিকে বিনোদনের জন্য রাজশাহী মহানগরীরসহ দূর-দূরান্ত থেকে জনসাধারণ পার্কটিতে আসবে। ফলে পার্কটির আশেপাশের এলাকায় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডও বাড়বে। মহানগরবাসীর বিনোদন, খেলাধুলা, অনুশীলন, সাংস্কৃতিক কার্যক্রম বিবেচনায় নিয়ে শহীদ কাপ্টেন মনসুর আলী পার্কের সৌন্দর্যবর্ধন ও আধুনিকায়ন এবং পার্কের সংলগ্ন পারিজাত লেকের উন্নয়নের নিমিত্ত প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।

প্রকল্পের বিবরণ থেকে জানা যায়, এ প্রকল্পের আওতায় ৩৬ হাজার ৫২০ দশমিক ৩১ ঘনমিটার ভূমি উন্নয়ন, ৪৫০ মিটার বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ, ৪ হাজার ৩০০ মিটার অভ্যন্তরীণ রাস্তা নির্মাণ, ১০ হাজার ২৭৫ দশমিক ৩০ বর্গমিটার ফুটপাথসহ পার্কিং এলাকা করা হবে। এক হাজার ৪ শত ২০ মিটার রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণ, ৯ হাজার ৯০৬ মিটার ড্রেন নির্মাণ করা হবে। প্রস্তাবিত লেকের ওপরে তিনটি স্টিল ব্রিজ তৈরি করা হবে।

পার্কে ট্রয় ট্রেন চলাচলের জন্য ৩ শত ৪২ মিটার লাইন স্থাপন করা হবে। এছাড়া মহানগরীর সবুজায়ন এলাকা বাড়াতে গার্ডেনিং এবং ল্যান্ডস্কেপিং করা হবে। পার্কে সব বয়সের মানুষের হাঁটার জন্য রাস্তা নির্মাণসহ বিভিন্ন ধরনের বিনোদনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এসব কাজ হলে রাজশাহী মানুষের বিনোদনের খোরাক মেটাতে নতুন মাত্রা যোগ করবে।

এ বিষয়ে আরডিএর নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল তারিক বলেন, পার্কটি দৃষ্টিনন্দন হিসেবে গড়ে তুলতে প্রায় ৪৮ কোটি টাকার একটি প্রকল্প পাস হয়েছে। এটির মেয়াদকাল ছিল জুলাই ২০২০ থেকে জুন ২০২২ পর্যন্ত। তবে করোনার কারণে সঠিক সময়ে কাজ শুরু করা যায়নি। বর্তমানে পরিস্থিতি অনুকূলে থাকায় কাজ শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে পার্কের পুরনো সব কিছু ভাঙার কাজ চলছে। প্রকল্পের কাজ পুরোপুরি শেষ হলে এটিই হবে মহানগরীর একমাত্র আধুনিক পার্ক। যেখানে মানুষরা সব আধুনিক সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারবেন।

ইউকে/এএস