গৃহবধূকে এসিড নিক্ষেপ, স্বামী আকবর আলীর মৃত্যুদণ্ড বহাল

বার্তাকক্ষ প্রতিবেদন: সাড়ে ১৩ বছর আগে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে গৃহবধুকে এসিড নিক্ষেপের ঘটনায় ভিকটিমের স্বামী সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার গোপীনাথপুর গ্রামের আমির হোসেন মণ্ডলের ছেলে মো. আকবর আলী ওরফে জেলহক মন্ডলের মৃত্যুদণ্ডের সাজা বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ।

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগ বুধবার এ রায় দেন। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আসামির আপিল আবেদন খারিজ করে এ রায় দেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত। আদালতে আসামিপক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট ফরিদ আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার মেহেদী হাসান চৌধুরী।

রায়ের আগে শুনানিতে প্রধান বিচারপতি বলেন, সৌদি আরবে মেয়েদের চাকরির জন্য পাঠানো ঠিক না। সেখানে যা হয়–। তিনি বলেন, স্বামী-স্ত্রী একইসঙ্গে রাতে ঘরে ছিলেন। স্ত্রী এসিড আক্রান্ত হলো। আর স্বামী ঘর ছেড়ে পালালো? এর দায় তাকেই নিতে হবে। আদালত বলেন, তাকে গৃহকর্মী হিসেবে সৌদি নিতে চাচ্ছিল। এ থেকেই বোঝা যায়, সেখানে স্ত্রীকে নিয়ে কি করা হতো।

মামলার নথি থেকে জানা যায়, সৌদি ফেরত আকবর আলীর সঙ্গে ভিকটিমের ২০০৬ সালের ৪ সেপ্টেম্বর বিয়ে হয়। বিয়ের পর আকবর আলী আবার সৌদি আরব চলে যায়। এর কয়েকমাস পর দেশে ফিরে স্ত্রীকে সৌদি আরব নিয়ে যেতে চাইলে এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রী ও দুই পরিবারের মধ্যে বিরোধ হয়। এ ঘটনার জেরে ২০০৮ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি মধ্য রাতে স্ত্রীর গায়ে আকবর আলী এসিড ঢেলে দেয়। আহত স্ত্রীকে উদ্ধার করে প্রথমে পাবনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। এ ঘটনায় পরদিন ১৯ ফেব্রুয়ারি ভিকটিমের পিতা একই উপজেলার বড় বাসুরিয়া গ্রামের মো. আব্দুল আউয়াল শেখ জামাতার বিরুদ্ধে শাহজাদপুর থানায় মামলা করেন।

এ মামলায় ২০০৯ সালে আত্মসমর্পন করেন আকবর আলী। এরপর সিরাজগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ আদালত বিচার শেষে ২০০৯ সালের ২৩ আগস্ট এক রায়ে এসিড অপরাধ দমন আইনের ৫(ক) ধারায় আকবর আলীকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। বিচারিক আদালতের এ রায়ের বিরুদ্ধে ডেথ রেফারেন্স ও কারাবন্দি আসামির আপিল শুনানি শেষে হাইকোর্ট আকবর আলীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে ২০১৪ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর রায় দেন। এ রায়ের বিরুদ্ধে কারাবন্দি আসামি আপিল বিভাগে আপিল করে। এ আপিলের ওপর শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ রায় দেন।

ইউকে/এএস