বার্তাকক্ষ প্রতিবেদন: ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ ড. বেনজীর আহমেদ বলেছেন, নতুন নিয়মে মেধা ও শারীরিক দিক থেকে অধিকতর যোগ্যতা সম্পন্ন পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ দেওয়া হবে। অচিরেই পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর এবং সার্জেন্ট পদেও নতুন নীতিমালা অনুযায়ী নিয়োগ করা হবে। পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন দেশ এবং উন্নত অনেক দেশের নিয়োগ নীতিমালা পর্যালোচনা করে বাংলাদেশ পুলিশের উপযোগী কনস্টেবল নিয়োগ নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে।
আইজিপি আজ মঙ্গলবার তিন দিনব্যাপী অপরাধ পর্যালোচনা সভার শেষ দিনে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে সমাপনী বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের হল অব ইন্টেগ্রিটিতে এ সভায় পুলিশের কোনো সদস্যের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাকে ছাড় দেওয়া হবে না উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সুস্পষ্ট নির্দেশনায় দেশ ও জনগণের কল্যাণে দুর্নীতিমুক্ত পুলিশ বাহিনী গড়ে তুলতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তিনি বলেন, পুলিশের কোনো সদস্যের মাদকের সাথে কোনো ধরনের সংশ্লেষ থাকতে পারবে না। কারো যদি মাদকের সাথে কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা থাকে তাহলে তাকে বেরিয়ে আসতে হবে। কোনো পুলিশ সদস্যের মাদক গ্রহণ, মাদক ব্যবসা বা মাদক ব্যবসায়ির সাথে সম্পর্ক রয়েছে প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পুলিশ বাহিনী, দেশ ও জনগণ ক্ষতিগ্রস্থ হয়, পুলিশ সদস্য হিসেবে এমন কোনো কাজ করা যাবে না।
পুলিশকে একটি সুশৃঙ্খল বাহিনী উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, বাহিনীর শৃঙ্খলা এবং কল্যাণ এক বিষয় নয়। শৃঙ্খলাকে কল্যাণের সাথে মিলিয়ে ফেলা যাবে না। বাহিনীর শৃঙ্খলা রক্ষার বিষয়ে কোনো ধরনের আপোষ করা যাবে না। কোনো পুলিশ সদস্য শৃঙ্খলা ভঙ্গ করলে তার বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পাশাপাশি পুলিশ সদস্যদের কল্যাণও নিশ্চিত করা হবে।
উদ্ভাবনী পুলিশিংয়ের ওপর জোর দিয়ে পুলিশ প্রধান বলেন, পুলিশিংয়ের ক্ষেত্রে উদ্ভাবনী কৌশল ব্যবহার করতে হবে। পুলিশে বেস্ট প্র্যাকটিসের চর্চা বাড়াতে হবে। তিনি সাধারণ মানুষের প্রতি আচরণ বদলানোর আহবান জানিয়ে বলেন, মানুষের প্রতি অমানবিক আচরণ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। এজন্য প্রয়োজন দৃষ্টিভঙ্গি বদলানো।
মামলা তদন্ত পুলিশের প্রধান দায়িত্ব উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, মামলা তদন্তের মান আরো বাড়াতে হবে। তদন্তের প্রতি অত্যন্ত মনোযোগী হতে এবং তদারকি বাড়াতে তিনি মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।
আইজিপি বলেন, কোনো সাধারণ নাগরিক যাতে সাইবার ক্রাইমের শিকার না হন, সেই জন্য সোশ্যাল মিডিয়া নিয়মিত মনিটর করতে হবে। তিনি পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যদের সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের ক্ষেত্রে সরকারের ও পুলিশ বাহিনীর অনুশাসন মেনে চলার নির্দেশ দেন।
পুলিশ প্রধান বলেন, অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার ও বৈধ অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন স্থানে মেগা প্রজেক্ট বাস্তবায়িত হচ্ছে। এসব প্রজেক্টে অনেক বিদেশি নাগরিক কাজ করছেন। তাদের যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। আগামীতে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এজন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে।
পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে আইজিপি বলেন, শুধু চাকরি করলে হবে না। চাকরিতে প্রাইড নিয়ে আসতে হবে। এজন্য মানসিকতা ও মনস্তাত্ত্বিক পরিবর্তন আনতে হবে। তিনি দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করতে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের প্রতি আহবান জানান।
ইউকে/এএস