নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীর বাজারে শীতের আগাম সবজি আসতে শুরু করেছে। কিন্তু দাম ক্রেতাদের নাগালের বাইরে। আর কেজি প্রতি ৫০ থেকে ৮০ টাকা দরের নিচে মিলছে না অন্য কোনো সবজিও।
রাজশাহী মহানগরীর কাঁচা বাজারগুলোতে এক সপ্তাহের ব্যবধানে সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের এমন ঊর্ধ্বমূল্যের কারণে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা।
তারা বলছেন, বাজারে নতুন কয়েক ধরনের সবজি এসেছে। সরবরাহও আগের চেয়ে বেশি তবে সেভাবে দাম কমেনি। বরং দাম আরও বেড়েছে।
বিক্রেতারা বলছেন, চাহিদার অনুপাতে সরবরাহ কম। তাই দাম বাড়ছে। সরবরাহ বাড়লে দাম কমবে।
সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর)। বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, আজ আলু ও পটল বাদে অন্যান্য সব সবজিই বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকার ওপরে। শিম ৮০ টাকা, ফুলকপি ১২০ টাকা, বেগুন ৬০ টাকা, করলা ৬০ থেকে ৭০ টাকা, পটল ৪০ থেকে ৫০ টাকা, বাঁধাকপি ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৫০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, গাজর ১২০ টাকা, আলু ২০ টাকা, শসা ৪০ থেকে ৬০ টাকা। আর সবার প্রিয় টমেটো ১৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। মরিচের ঝাল একটু কমেছে। আজ মানভেদে প্রতি কেজি কাঁচা মারিচ বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকা পর্যন্ত। আর পেঁয়াজের ঝাঁজ ওঠানামা করছে ৪০-৪৫ টাকায়।
এদিকে ডাল, চিনি, আটা, সয়াবিন তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামও বেড়েছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে ১২৫ টাকার সয়াবিন ১৩০ টাকায়, ১২০ টাকার পাম ওয়েল ১৩২ টাকায়, ৩০ টাকার খোলা আটা ৪০ টাকায়, ৭২ টাকার চিনি কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। তবে স্থিতিশীল আছে চালের বাজার।
আর নদ-নদীতে পানি বাড়ায় বিভিন্ন মাছের আমদানি বেড়েছে। তবে সব সময়ের মতোই দাম চড়া ইলিশের। মাছের বাজারে সিলভার কার্প ১২০-১৩০ টাকা, পাঙ্গাশ ১০০-১২০ টাকা, চিংড়ি ও গলদা চিংড়ি ৭০০-৮০০ টাকা, পাবদা ৩০০-৪০০ টাকা, কালবাউশ ২৫০-৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। এছাড়া রুই মাছ ছোট-বড় ওজন ভেদে প্রতি কেজি ২৫০-৩৮০ টাকা, কাতল মাছ ২৫০ টাকা, শিং মাছ ৪০০-৫০০ টাকা এবং ট্যাংরা মাছ ৫০০-৬০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
মহানগরীর সাহেববাজার ও নিউমার্কেট সংলগ্ন কাঁচা বাজারে কেজিতে ১০ টাকা করে বেড়ে দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকায় ও সোনালি মুরগি ২৪০ টাকায়। আর ব্রয়লায় মুরগির দাম কেজি প্রতি ১৩০ টাকা। গরুর মাংস ৫৫০ ও খাসি ৭৫০ থেকে ৮৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ছুটির দিন সকালে মহানগরীর সাহেববাজারে সবজি কিনতে এসেছিলেন কলেজ শিক্ষক গোলাম সারওয়ার। তিনি বলেন, শীত আসছে। বাজারে শীতের আগাম সবজিও আসছে। কিন্তু আমাদের কোনো লাভ হচ্ছে না। নামমাত্র সবজি কিনতেই পকেটের সব টাকা শেষ হয়ে যাচ্ছে। বেশি দামের কারণে সবজির পরিবর্তে অন্যকিছু কিনতে হচ্ছে। গত সপ্তাহের তুলনায় এখন অন্যান্য নিত্যপণ্যের দামও বেড়ে গেছে।
সাহেববাজারে কথা হয়- আনিসুল হক নামের আরেক ক্রেতার সাথে। তিনি বলেন, আমি এখান থেকে নিয়মিত বাজার করি। তবে চলতি সপ্তাহের শুরু থেকে সবজির দাম বেড়েছে। সবজির সরবরাহ বেশি থাকলেও এমন দামের কারণে কিনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
সাহেববাজারের সবজি বিক্রেতা মিলন সরদার বলেন, শিম, ফুলকপি, বাঁধাকপির সরবরাহ বেড়েছে। তবে বাজারে যে পরিমাণ চাহিদা রয়েছে সরবরাহ তার তুলনায় অনেক কম। সে কারণে দামটা কমছে না। কিছু দিনের মধ্যে সবজির দাম কমে আসবে। কারণ তখন বাজারে শীতের ভরপুর সবজি চলে আসবে।
ইউকে/এএস