বার্তাকক্ষ প্রতিবেদন: ভারতের দিল্লির রোহিণী আদালতে মামলার শুনানি চলছিল। কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন কুখ্যাত সন্ত্রাসী জিতেন্দ্র মান ওরফে গোগী। শুক্রবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শুনানির একপর্যায়ে আদালত কক্ষে আইনজীবীর পোশাক পরে প্রবেশ করেন দুজন ব্যক্তি। তারা গোগীর বিরোধী গোষ্ঠী টিল্লু গ্যাংয়ের সদস্য।
ওই দুজন আদালত কক্ষে প্রবেশের পর গোগীকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন গোগী। পুলিশের পাল্টা গুলিতে হামলাকারী দুজনও নিহত হন।
হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সবশেষ ২০২০ সালে গোগীকে মহারাষ্ট্র থেকে গ্রেফতার করা হয়। তার বিরুদ্ধে হত্যা, চাঁদাবাজি ছাড়াও ডাকাতি ও গাড়ি চুরির মামলা চলছিল।
দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রদ্ধানন্দ কলেজের ছাত্র ছিলেন গোগী। সেখানে পড়ার সময় খুনের ঘটনায় জড়িয়ে যায় তার নাম। কলেজ ভোটের সময় প্রতিহিংসায় সুনীলের এক বন্ধুকে গোগী খুন করেন। তারপর থেকেই গোগীর সঙ্গে সুনীলের দ্বন্দ্ব শুরু হয়।
শ্রদ্ধানন্দ কলেজের ঘটনাটি ২০১০ সালের। এক বছর পরই গ্রেফতার হন গোগী। ততদিনে তার এক সময়ের বন্ধু সুনীল ওরফে টিল্লুকে খুন করেন গোগী। শুক্রবার সেই টিল্লুর দলই গোগীকে খুন করেন বলে জানায় পুলিশ।
২০১১ সালে ২০ বছর বয়সে পুরোপুরি অপরাধ জগতে ঢুকে পরেন গোগী। চাঁদাবাজি, খুন, ডাকাতিসহ নানা অভিযোগ ওঠে তার নামে। গোগীর সন্ত্রাসী দল জড়িয়ে যায় গাড়ি অপহরণে। এ সময় কেউ বাধা দিলে তাকে মেরে ফেলাই ছিল তাদের নীতি।
২০১৬ সালে গোগীকে আবার গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর জেলে থেকেই নেটওয়ার্ক পরিচালনা করতেন তিনি। এরই মধ্যে গোগীর দলে নাম লেখান অনেকেই। জাতীয় স্তরের বক্সিং খেলোয়াড় থেকে নারী কবাডি খেলোয়াড়ও ছিলেন সেই তালিকায়। তাদের সাহায্যেই তিহার জেল থেকে আদালতে যাওয়ার পথে পালিয়ে যান গোগী। এরপর তাকে ধরতে অভিযান শুরু করে পুলিশ।
ভারতের হরিয়ানার লোকগায়িকা হর্ষিতা দাহিয়া, আরএক গ্যাংস্টার বীরেন্দ্র মান ও আঁচল ঠাকুর নামের বিরোধী গ্রুপের একজনকে খুন করেন গোগী ও তার গ্রুপের সদস্যরা। একের পর এক খুন করেই চলছিল গোগীর দল। তারপরও পুলিশ তাদের ধরতে পারেনি।
তবে দিল্লির এক বিখ্যাত ক্যাফেতে বসে নিজের ছবি পোস্ট করেছিলেন গোগী। সেই ছবি দেখেই ২০২০ সালে তাকে গ্রেফতার করে দিল্লি পুলিশ। তখন গোগীর মাথার দাম ছিল ১০ লাখ টাকা।
জেলে থেকেই নানা অপরাধ কর্মকাণ্ড পরিচালনার অভিযোগ ওঠে গোগীর বিরুদ্ধে। এর মধ্যেই শুক্রবার দিল্লির রোহিণী আদালতে তোলা হয় তাকে। সেখানে গোগীর দলের অন্য সদস্যরাও ছিলেন।
পুলিশ বলছে, আইনজীবীর ছদ্মবেশে আদালতে প্রবেশ করে গোগীর বিরোধী গ্রুপের সদস্যরা। তারাই গোগীকে লক্ষ্য করে গুলি করে।
ইউকে/এএস