শিক্ষকতার আড়ালে মানুষকে ফাঁদে ফেলতেন তারা

নিজস্ব প্রতিবেদক: ছয় মাস পর অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তার আত্মহত্যার ঘটনার রহস্য উন্মোচন করতে সক্ষম হয়েছে রাজশাহী মহানগর পুলিশ। আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে দুই নারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

রোববার দিবাগত রাতে রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানা পুলিশ ঢাকা থেকে ওই দুই নারীকে গ্রেফতার করে। পরে সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মহানগর পুলিশ (আরএমপি) কমিশনারের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।

গ্রেফতার দুই নারী হলেন—আইরিন ইয়াসমিন লিজা (৩৪) ও শামীমা আক্তার (২৪)। আইরিনের গ্রামের বাড়ি নওগাঁর মান্দা উপজেলার বালিচ গ্রামে। আর শামীমা ঢাকার সাভারের ডেন্ডাবর নতুনপাড়ার বাসিন্দা। দুজনেই সাভারের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। তারা শিক্ষকতার আড়ালে মানুষকে ফাঁদে ফেলে প্রতারণা করতেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

চলতি বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী মহানগরের উপশহরের একটি ভাড়া বাড়ি থেকে সাবেক সেনা সদস্য মজিবুর রহমানের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় তার ছেলে থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করেন। সেই মামলার তদন্ত করতে গিয়ে দুই নারীর সম্পৃক্ততার বিষয়টি বেরিয়ে আসে।

সংবাদ সম্মেলনে রাজশাহী মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. আবু কালাম সিদ্দিক বলেন, গত ৬ ফেব্রুয়ারি গ্রেফতার দুই নারী স্বেচ্ছায় রাজশাহীতে মজিবুরের বাড়ি এসেছিলেন। মজিবুরের সঙ্গে আইরিনের অন্তরঙ্গ সম্পর্ক ছিল। রাতে তারা মজিবুরের পাশের ঘরে শুয়েছিলেন। মজিবুর ফেসবুক মেসেঞ্জারের মাধ্যমে আইরিনকে নিজ ঘরে ডাকেন। আইরিন সাড়া না দিলে তাদের মধ্যে মেসেঞ্জারেই বাগবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে মজিবুর বলেন, রাত ৩টার মধ্যে আইরিন তার ঘরে না গেলে তিনি আত্মহত্যা করবেন। আইরিন মেসেঞ্জারে ও এসএমএসের মাধ্যমে মজিবুরকে আত্মহত্যা করতে প্ররোচিত করেন। অভিমানে মজিবুর গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। পরে সকালে আইরিন ও শামীমা তার ঝুলন্ত মরদেহ দেখে বাড়ি থেকে মোবাইল ফোন, বাড়ির চাবি, নগদ চার লাখ টাকা ও কিছু কাগজপত্র নিয়ে পালিয়ে যান।

পুলিশ কমিশনার আরও জানান, সাবেক সেনা কর্মকর্তার আত্মহত্যার সঙ্গে এ দুই নারীর সম্পৃক্ততা থাকায় তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট মৃত মজিবুর রহমানের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনও উদ্ধার করা হয়েছে। তারা শিক্ষকতা পেশার আড়ালে মানুষকে ফাঁদে ফেলে প্রতারণা করতেন। ঢাকা থেকে গ্রেফতার করে আনার পর তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

ইউকে/এএস